এ বছর যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দুজন সাংবাদিক। তারা হলেন ফিলিপাইনের মারিয়া রেসা ও রাশিয়ার দিমিত্রি মুরাতভ।
শুক্রবার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে।
নোবেল কমিটি জানায়, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার প্রচেষ্টায় কাজ করার জন্য তাদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়। নোবেল কমিটি মনে করে যে, গণতন্ত্র ও দীর্ঘমেয়াদি শান্তির পূর্ব শর্ত হচ্ছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সুরক্ষা।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন’র হয়ে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় প্রায় দুই দশক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করেছেন মারিয়া রেসা। এখন তিনি ফিলিপাইনভিত্তিক অনলাইন নিউজ ওয়েবসাইট র্যাপলার’র সহপ্রতিষ্ঠাতা। দিমিত্রি মুরাতভ রুশ সংবাদমাধ্যম নোভায়া গেজেতার এডিটর ইন চিফ।
২০২০ সালে শান্তিতে নোবেল পায় জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। ক্ষুধা নিরসনে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি জানায়, যুদ্ধ ও সংঘাতের অস্ত্র হিসেবে ক্ষুধার ব্যবহার রোধে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে সংস্থাটি।
চলতি বছর ৪ অক্টোবর চিকিৎসাবিজ্ঞানে বিজয়ীদের নাম ঘোষণার মাধ্যমে ২০২১ সালের নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। তাপমাত্রা ও স্পর্শের রিসেপ্টর আবিষ্কারের জন্য এবার চিকিৎসা বিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডেভিড জুলিয়াস এবং লেবাননের আর্ডেম প্যাটাপৌসিয়ান।
৫ অক্টোবর পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান জাপান, জার্মানি ও ইতালির তিন বিজ্ঞানী। তারা হলেন- আবহাওয়াবিদ সিউকুরো মানাবে, পদার্থবিদ ক্লাউস হাসল্মান্ এবং সমুদ্রবিজ্ঞানী জর্জিও পারিসি। বৈশ্বিক উষ্ণতার পূর্বাভাস দেওয়া এবং কমপ্লেক্স ফিজিক্যাল সিস্টেম সম্পর্কে বোঝাপড়ার বিষয়ে যুগান্তকারী অবদানের জন্য তাদের এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
৬ অক্টোবর জৈব-অনুঘটন বিক্রিয়া আবিষ্কারের জন্য রসায়নে নোবেল পান জার্মানির বেনিয়ামিন লিস্ট ও যুক্তরাজ্যের ডেভিড ডব্লিউ সি ম্যাকমিলান।
৭ অক্টোবর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান ব্রিটিশ-তানজানিয়ান ঔপন্যাসিক আব্দুলরাজাক গুরনাহ। নোবেল কর্তৃপক্ষ জানায়, আফ্রিকার উপসাগরীয় অঞ্চলের শরণার্থীদের বিড়ম্বনা, বিভিন্ন মহাদেশের বিবিধ সংস্কৃতি ও ঔপনিবেশিকতার প্রভাবকে আপসহীন গভীর মানবিক অন্তর্দৃষ্টিতে তুলে এনেছেন তিনি।
আগামী ১১ অক্টোবর অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করবে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি।
প্রসঙ্গত, ১৮৯৫ সালের নভেম্বর মাসে আলফ্রেড নোবেলের উইলের মাধ্যমে এ পুরস্কারের প্রবর্তন হয়। তার রেখে যাওয়া তিন কোটি সুইডিশ ক্রোনার দিয়েই শুরু হয় পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া। পরবর্তীকালে ১৯৬৮ সালে এই তালিকায় যুক্ত হয় অর্থনীতি। তবে পুরস্কার ঘোষণার আগেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন আলফ্রেড নোবেল।
নোবেল পুরস্কার বিজয়ীরা একটি স্বর্ণপদক এবং ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার (১ কোটি ১৪ লাখ ডলার) অর্থ পেয়ে থাকেন।