শীতে উষ্ণতা বাড়াতে হোক কিংবা নেশার কারণে হোক ‘চা’ নাকি ‘কফি’ তা নিয়ে নানা মতভেদ আছে। তবে যেটিই বেছে নিন না কেন, আপনার শরীরে উপকার ও অপকার, কোনটি বেশি হবে তা জেনে নিতে হবে।
চা : প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এই চা লিভার, ব্রেস্ট, কোলন ক্যান্সারসহ হৃদরোগ প্রতিরোধে খুব উপকারী। লেবু দিয়ে যাঁরা ব্ল্যাক টি ও গ্রিন টি নিয়মিত পান করেন, তাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে বেশি।
আদা ও লেবু দিয়ে তৈরি চিনি ছাড়া ব্ল্যাক টি হৃদরোগ ও ডেন্টাল ক্যারিজ প্রতিরোধ করে। চায়ে থাকা পলিফ্যানল নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অ্যাংজাইটি ও স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখে, মনোযোগ স্থির রাখতে সহায়তা করে। অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। ক্যাফেইনসমৃদ্ধ পানীয়গুলোর মধ্যে চায়ে সবচেয়ে কম ক্যাফেইন থাকে।
তবে চায়ের উপকারিতা পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই দুধ-চিনি ছাড়া চা পান করতে হবে। কেননা দুধ ও চিনি সমৃদ্ধ চা অ্যাসিডিটি, পেট ফাঁপা, বুক জ্বালাপোড়াসহ নানা উপসর্গ তৈরি করে, যার অপকারিতাই বেশি।
হারবাল চা : হারবাল বা ভেষজ চা আপনার পরিপাকতন্ত্রকে প্রশমিত করে, বমি ভাব কমায়, পেট ব্যথার প্রবণতা কমায়, কাশি দূর করে। সিজনাল ঠাণ্ডা-সর্দি দূর করতে হারবাল চায়ের রয়েছে ব্যাপক উপকারিতা ও জনপ্রিয়তা।
তুলসী, পুদিনাপাতা, আদা, জাফরান, লেমন গ্রাস, মাল্টা, দারচিনি, লং, এলাচ, নীল অপরাজিতা, ক্যামোমাইল প্রভৃতি ভেষজ উপাদানে তৈরি নানা হারবাল চা হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, হজমপ্রক্রিয়া উন্নত করে এবং মানসিক চাপ কমিয়ে পর্যাপ্ত ঘুমের ব্যবস্থা করে দেয়।
কফি : যাঁদের ঘুম কম হওয়ার প্রবণতা রয়েছে তাঁদের জন্য ক্যাফেইন শত্রুতুল্য। কিন্তু যাঁদের ক্যাফেইনে সমস্যা নেই, তাঁরা দিনের শুরুতে ব্ল্যাক কফি খেতে পারেন। কফিতে বিদ্যমান মিনারেলস ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে নিয়মিত ব্ল্যাক কফি পান করলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।
দুধ-চিনি ও কফিম্যাট ছাড়া ব্ল্যাক কফি নিয়মিত পান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে, মেটাবলিজম বাড়ায়, অ্যান্টি এজিং হিসেবে কাজ করে, শরীর নীরোগ রেখে আয়ু বাড়ায়, হার্ট ফেইলিওর প্রতিরোধ করে, পারকিনসন্স ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কা কমায়। কফি শরীরের ভেতরের প্রদাহ কমিয়ে রোগ প্রতিরোধ করে, ফ্যাট বার্ন করে ওজন কমাতে সাহায্য করে, ক্লান্তি দূর করে এনার্জি লেভেল বাড়ায়, বিষণ্নতা দূর করে।
মনে রাখবেন, অত্যধিক ক্যাফেইন অ্যাংজাইটি, ডিহাইড্রেশন, হজমের সমস্যা, ঘুম না হওয়া, ঘুম কমে যাওয়া, হার্ট রেট বেড়ে যাওয়া প্রভৃতির কারণ। তাই সারা দিন যাঁদের দুই-তিন কাপ চা বা কফি পান কারার অভ্যাস আছে তাঁরা সন্ধ্যার পর, বিশেষ করে ঘুমনোর আগে চা বা কফি পান করা থেকে বিরত থাকুন।
সূত্র: কালের কন্ঠ