প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার প্রধান আসামি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. হুমায়ুন কবীর আসামিদের মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মামলার প্রধান আসামি সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। রায়ে হাবিবুল ইসলাম হাবিব, বিএনপি নেতা রিপন ও আরিফকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি ৪৭ আসামিকে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অডিশনাল অ্যাটর্নি জেনারেল মুনির হোসেন জানান, এই রায়ের মাধ্যমে সাতক্ষীরা আজ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। এই রায়ে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি।
অন্যদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবী সাহানারা পারভীন বকুল জানান, হাবিবুল ইসলাম হাবিব ঘটনার দিন সাতক্ষীরাতেই ছিলেন না। আমরা পর্যাপ্ত ডকুমেন্ট আদালতে উপস্থাপন করার পরও উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে এই রায় দেওয়া হয়েছে। আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। সকলে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করার জন্য এই রায় দিয়েছে। উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
মামলার রায়কে কেন্দ্র করে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে ৩৪ আসামিদের আনা হয় সাতক্ষীরা আদালতে। এরপর রায় ঘোষণা শেষে সাড়ে ১০টার দিকে পুনরায় আসামীদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
কারাগারে নেওয়ার প্রাক্কালে বিএনপির এ কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, আমি নির্দোষ। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে এই রায় দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে আসেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ফেরার পথে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে বোমা হামলা চালায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়।
হামলায় সাবেক সংসদ সদস্য তৎকালিন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়র শেখ মুজিবুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। এ ঘটনায় কলারোয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৫০ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেয় কলারোয়া থানা পুলিশ।