ছাত্র-জনতার গণঅভূত্থানে রাজধানীর উত্তরায় নিহত হন মো. আলী হুসেন। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১৮৯ জনের নামে মামলা হয়েছে। যেখানে নাম রয়েছে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দোদুলসহ ১১ জনের।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে নিহতের আত্মীয় মো. মফিজুল ইসলাম সানা ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট (উত্তরা পূর্ব) আমলী আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। সিআর মামলা নম্বর – ৪৪/২০২৪ ।
মামলাটিতে আসমিদের মধ্যে মেহেরপুর জেলা থেকে রয়েছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দোদুল (আসামি নম্বর ১৪১) ও তার ছোট ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুল (আসামি নম্বর ১৪২), সদ্য সাবেক মুজিবনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু (আসামি নম্বর ১৪৩) ও তার ভাই মোঃ শীলু (আসামি নম্বর ১৪৪), মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাঁধন (আসামি নম্বর ১৪৫), মেহেরপুর ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নান (আসামি নম্বর ১৪৬), মেহেরপুর ১ আসনের সাবেক অপর সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন (আসামি নম্বর ১৪৮), মেহেরপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসূল (আসামি নম্বর ১৪৯), মেহেরপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মোতাসিম বিল্লাহ মতু (আসামি নম্বর ১৫০), সোনা গাইনের ছেলে মাহফুজুর রহমান নবাব (আসামি নম্বর ১৫১) ও জিনারুল গাজীর ছেলে মুরশিদ আলম লিপু (আসামি নম্বর ১৫২)।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৮ জুলাই, আসামিরা প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত থেকে, আর্থিক সহযোগিতা, নির্দেশনা ও পরিকল্পনা দ্বারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উত্তরা পূর্ব থানাধীন ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্ব পাশে আজমপুর মোড়ের পাকা রাস্তার উপস্থিত থেকে আাসামী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের , তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী , আইনমন্ত্রী, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের নির্দেশনায় বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এবং আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদ্যসরা ও উল্লেখিত আসামীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ঢাকা মেট্রোপলিটনের উত্তরা-পূর্ব থানাধীন ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্ব পাশে আজমপুর মোড়ের পাকা রাস্তার উপস্থিত হয়ে অবস্থান নেয়। এর পর হতে বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এবং আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদ্যসরা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-আন্দোলনকারী সাধারন ছাত্র জনতা এর মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। এর এক পর্যায়ে বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এবং আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদ্যসরা ছাত্র জনতার উপর অর্তকিত গুলি হামলা চালায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অবস্থানরত মো: আলী হুসেনকে লক্ষ্য করে গুলি করলে তাহার পেট, বুক ও মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে এবং সে মহাসড়কের উপরে পড়ে থাকে।
এমতাবাস্থায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরবর্তী কোন এক সময় সঙ্গীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী সাধারন ছাত্র জনতা মধ্য থেকে স্বাক্ষীগন সহ কয়েকজন ছাত্র জনতা এসে মো. আলী হুসেনকে হাত পা ধরে তুলে নিয়ে নিকটবর্তী কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে, জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. আলী হুসেনকে মৃত ঘোষণা করে।