একের পর এক আক্রমণ, গ্রেনেড হামলা। অসংখ্য বার হত্যাচেষ্টা। বিশ্বের কোন রাজনীতিবীদ এতোবার হত্যা আক্রমণের শিকার হন নি। রাজনৈতিক জীবনে ২১ বার মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছেন শেখ হাসিনা। প্রতিটি হামলাতেই অনেক মানুষ নিহত হয়েছেন, আহতের সংখ্যা অগণিত।
১৯৮১ থেকে ১৯৯১ সাল, এই দশ বছরে শেখ হাসিনাকে মোট তিনবার হত্যার চেষ্টা করা হয়। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রথম সরকার গঠনের পর আরো তিনবার শেখ হাসিনার উপর হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করা হয়। এমনকি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েও হত্যাচেষ্টা চলে। ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েও শেখ হাসিনাই মূল টার্গেট বিরোধী শক্তির।
১৯৮৮ সালে এরশাদ সরকারের আমলে চট্টগ্রামের লালদীঘি দিয়ে শুরু হয় শেখ হাসিনার উপর হত্যার উদ্দেশ্যে প্রথম আক্রমণ । ১৯৮৮ সালে ২৪ই জানুয়ারি পতেঙ্গা বিমানবন্দরে নেমে একটি সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে যোগ দিতে লালদীঘিতে যাচ্ছিলেন শেখ হাসিনা। পথে সসস্ত্র হামলা, নির্বিচারে গুলি, শেখ হাসিনাকে মানববর্ম তৈরি করে রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয় ৯জন, নিহতের মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪ এ। আহত হন দুই শতাধিক মানুষ। এ হত্যাকান্ডটি পরবর্তীতে চট্টগ্রাম গণহত্যা নামে পরিচিতি পায়। সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার ছিলো তৎকালীন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মির্জা রকিবুল হুদার নির্দেশে ওই ঘটনার কিছু লাশ চট্টগ্রামের অভয়মিত্র শশ্মানে পুড়িয়ে ফেলা হয়। অথচ বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯১ সালে পদোন্নতি দিয়ে পুরষ্কৃত করা হয় ঐ পুলিশ কর্মকর্তাকে। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম গণহত্যা মামলার রায় আসে। রায়ে তৎকালীন ৫ পুলিশ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
১৯৮৯ সালের ১১ই আগস্ট রাতে কর্ণেল ফারুক রশীদ জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে ফ্রিডম পার্টির সদস্য কাজল ও কবীরের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল ৩২ নাম্বারের বাড়িতে অতর্কিত গুলি ,বোমা ও গ্রেনেড হামলা করে। গ্রেনেড বিস্ফোরিত না হওয়ায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা। এই হামলা নিয়ে ধানমন্ডি থানায় দুটি মামলা হয় । সাড়ে ৭ বছর পর ১৯৯৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ১৬ জনকে আসামী করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ২০০৯ সালের ৫জুলাই আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর এই মামলাইয় ফ্রিডম পার্টির ১১ জনকে ২০ বছর করে কারাদন্ড দেয় ঢাকার একটি আদালত।তবে উচ্চদালতে এই মামলাটির মীমাংসা এখনো হয় নি।
১৯৯১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর চতুর্থ জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনের সময় ধানমন্ডির গ্রীণ রোডে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে বিএনপি নেতা ওয়াহীদের নেতৃত্বে ২৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করা হয়। তার গাড়িতে গুলি লাগলেও অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তিনি। ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা উত্তারাঞ্চলে ট্রেনযোগে সাংগঠনিক সফরে যান। সন্ধ্যা ৬.২০ মিনিটের দিকে শেখ হাসিনাকে বহন করা ট্রেন রূপসা এক্সপ্রেস পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশ করছিলো । অনেকটা হঠাৎ করেই ট্রেনবহরকে লক্ষ্য করে স্থানীয় বিএনপি নেতারা হামলা চালায়। ট্রেনে ব্যাপক গুলিবর্ষণ ও বোমাহামলা করা হয় । সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো মঞ্চে শেখ হাসিনার ভাষণকালে পুলিশ বেষ্টনীর মাঝেও বিএনপি সন্ত্রাসীরা বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। মূলত ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল থেকেই ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনার সমাবেশকে পন্ড করার জন্য একের পর এক বোমা হামলার মাধ্যমে আতংকের পরিবেশ সৃষ্টি করে। বিএনপি তৎকালীন পৌর মেয়রের সমর্থনপুষ্ঠ নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার জন্য তৈরি মঞ্চ্ও ভেঙ্গে দেয়। এতোসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরেও তৎকালীন বিএনপি সরকারের প্রেস নোটে বলা হয় হামলার কোন প্রামাণ পাওয়া যায় নি। পরবর্তীতে এই হামলার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় এবং ২০১৯ সালের ৩ জুলাই এই মামলার রায় আসে। রায়ে নয়জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। একই মামলায় ২৫ জনকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এছাড়া ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড হয়েছে।
১৯৯৫ সালের ৭ই মার্চ রাসেল স্কয়ার সমাবেশে ভাষণ দেয়াকালে শেখ হাসিনার ওপর হামলা চালানো হয়। সশস্ত্র এ হামলা থেকে বাঁচাতে নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনাকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। ১৯৯৬ সালের ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্মরণে বক্তৃতাকালে হঠাৎ করে এক মাইক্রোবাস থেকে শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা হামলা করা হয় । এতে কমপক্ষে ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত এবং শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ একত্রিশ জনকে হত্যার একটি ই-মেইল ১৯৯৯ সালের ১২ জুলাই ফাঁস হয়। ইমেইলের প্রেরক ছিলেন ইন্টার এশিয়া টিভির মালিক সৈয়দ চৌধুরী।
হরকাতুল জিহাদের বড় আক্রমণটি ছিল শেখ হাসিনার নিজের নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়। হুজির অন্যতম শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নানের জবানবন্দী অনুযায়ী ২০০০ সালের জুলাই মাসে হুজির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে শেখ হাসিনাকে হত্যার সিদ্ধান্ত হয়। ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলে ৭৬ কেজি ও হেলিপ্যাডের কাছে ৪৩ কেজির দু’টি শক্তিশালী বোমা পুঁতে রাখা হয়। তবে সমাবেশের আগে পুলিশ তা উদ্ধার করে ফেলে। ২০০১ সালে মুফতি হান্নানসহ আসামিদের বিরুদ্ধে সিআইডি চার্জশীট দিলেও বিএনপি আমলে এই মামলার অগ্রগতি আর হয়নি। পরবর্তীতে ২০১০ সালে মামলা ঢাকার ২ নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট এই মামলার রায় আসে। এই মামলায় ১০ জনকে ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। রায়ের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ, মুন্সী ইব্রাহীম, মাহমুদ আজহার, রাশেদ ড্রাইভার, শাহনেওয়াজ, মোঃ ইউসুফ, মোঃ লোকমান, শেখ এনামুল, মোঃ মিজানুর। এই মামলার অন্যতম আসামী মুফতি হান্নানের অন্য মামলায় ফাঁসি হওয়ায় তাকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সঙ্গে ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দেয়া হয়েছে কারাদণ্ড। তবে উচ্চ আদালতে এই মামলার মীমাংসা এখনও হয়নি। ফলে এখন পর্যন্ত দণ্ড কার্যকর করা সম্ভব হয় নি।
২০০১ সালের ৩০ মে খুলনায় রূপসা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলো হুজি-বি। অনুষ্ঠানের তিন দিন আগেই ২৭ মে সেতুর কাছাকাছি রূপসা নদীতে দু’টি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ১৫ জঙ্গি ধরা পড়ে যাওয়ায় সেটিও আর সফল হয়নি। এই ১৫ জনের একজন মাসুম বিল্লাহ ওরফে মুফতি মঈন পরবর্তীতে ঢাকায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় অংশ নিয়েছিল। ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে শেখ হাসিনার নির্বাচনী জনসভাতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় হরকাতুল জিহাদ। প্রচার অভিযানে থাকার কারণে সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে দেরি হয় শেখ হাসিনার। তার আগেই বোমা বিস্ফোরিত হওয়ায় ভেস্তে যায় হত্যাচেষ্টা। তবে এই হামলায় আওয়ামী লীগের দুইজন নেতা নিহত হয়।
২০০২ সালের ৪ঠা মার্চ যুবদল ক্যাডার খালিদ বিন হেদায়েত নওগাঁয় বিএনসি সরকারি মহিলা কলেজের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এর তদন্ত আর এগোয়নি। ২০০২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সেখান্ থেকে যশোর ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তৎকালীন এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের নির্দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার গাড়িকে ব্যারিকেড দিয়ে হামলা চালায়। ওই হামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১২ জন দলীয় নেতা-কর্মী আহত হন। বিএনপি আমলে এই মামলাটি খারিজ হলেও পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই বিচারক নিম্ন আদালতের আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে মামলার কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দেন।১৮ এপ্রিল ২০২৩ সালে এই ঘটনায় হওয়া দুই মামলার রায় আসে। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলার আরও ৪৪ জন আসামীকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
২০০৪ সালের ২রা এপ্রিল, বরিশালের গৌরনদীতে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে গুলিবর্ষণ করে জামায়াত-বিএনপির ঘাতক চক্র। পরে বিএনপি আমলে ঐ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। কিন্তু প্রতিবেদনে প্রকৃত হামলাকারীদের বাঁচিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ফাঁসানো হয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সমাবেশের প্রস্তুতি সম্পন্ন। বেলা গড়ানোর সাথে সাথে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে জনতার ঢল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। কিন্তু এই জনতার সাথে মিশে ছিলো কয়েকজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গি, সঙ্গে যুদ্ধে ব্যবহৃত ভয়ংকর আর্জেস গ্রেনেড। মূল টার্গেট আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা।
২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা দায়ের করা হয় ২০০৪ সালে। কিন্তু ২০০৫ সালে মামলাটি নিয়ে জজ মিয়া নাটক মঞ্চস্থ করে বিএনপি -জামায়াত জোট। রাজনৈতিক্ পটপরিবর্তনের পর মামলা গতি পায় ২০০৭ সালে। ২০০৮ এ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে অধিকতর তদন্তের পর ২০১১ সালে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১২ সাল থেকে আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় মামলার। যুক্তিতর্ক শুরু হয় ২০১৭ সালে, আর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। বহুল আলোচিত এই মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ১৯ জনকে। বিচারের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ জনের অন্যতম বিএনপি আমলের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, ডিজিএফআই এর সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ও এনএসআই এর সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম। তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরীসহ ১৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।
ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী সময়ে কারাবন্দী থাকা অবস্থায় খাবারে বিষ প্রয়োগ করে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ঐ খাবার খেয়ে তাঁর চোখ-মুখ ফুলে গিয়েছিলো এবং তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ২০০৯ সালের ২৭ জুন রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন সংসদ উপনেতা সৈয়দ সাজেদা চৌধুরী এ তথ্যের নিশ্চয়তা দিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেন। ১১ মাস কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ জুন মুক্তি পান বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা।
শ্রীলঙ্কার একটি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্র সুইসাইড স্কোয়াড গঠন করেছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করার লক্ষ্যে একটি সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, যা পরে ব্যর্থ হয়ে যায়। ২০১৪ সালের শেষদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র ও অভ্যুত্থানের পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার জঙ্গি শাহানুর আলম ওরফে ডাক্তার
২০১৫ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পথে কারওরান বাজারে তার গাড়িবহরে বোমা হামলা চালানোর চেষ্টা চালায় জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ জঙ্গিগোষ্ঠী। ২০১৬ সালের জুনে শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের রানওয়েতে ধাতব পদার্থের উপস্থিতি থাকায় নামতে গিয়ে আবার ওপরে উঠে যায়। ধারণা করা হয়েছিল ওই বস্তুর আঘাতে ছিন্ন ভিন্ন হবে তার বিমান। ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর সরকারি সফরে হাঙ্গেরি যাওয়ার পথে বিমানের নাট ঢিল করে রাখা হয়েছিল, যদিও বিষয়টিকে কিছুটা গোপনে রাখা হয়েছিল তখন কিন্তু তাকে হত্যার পরিকল্পনায় এমনটা হয়েছিল বলে ধারণা।
২০১৭ সালেও শোকের মাসে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গিরা। বারবার হামলার পরও বুলেট-বোমা আর কূটচালের শত বাধা ডিঙিয়ে যিনি বাংলাদেশকে টেনে তুলছেন খাদের কিনার থেকে সমৃদ্ধির পথে।