ঝিনাইদহের শৈলকুপায় পরিত্যাক্ত সামগ্রী দিয়ে গ্রামের একদল যুবক তৈরী করছে জিম ও জিমের যন্ত্রপাতি।উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের শরীরচর্চার এমন সৃজনশীল কর্মযজ্ঞ সাড়া ফেলেছে এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে । এমবিএ করা এই তরুণ উদ্যোক্তার নাম এপি পলাশ। সে উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে।
সরেজমিনে দেখা যায়,হাতের কাছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ইট-বালি, মাটি-সিমেন্ট, পাস্টিকের পাইপ, বোতল, গাছের ডাল, বাঁশ-খুঁটি সহ পরিত্যাক্ত সব সামগ্রী হলো জিমের সরঞ্জাম।এসব দিয়ে গ্রামে বসেই একদল তরুণ ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরী করেছে ডাম্বেল, বারবেল, পুলআপ বার, দঁড়িলাফ সহ আধুনিক জিম বা ব্যায়ামাগারের সব যন্ত্রপাতি।কোমলপানীয়র পরিত্যাক্ত বোতলে বালু পুরে তৈরী করা হয়েছে বারবেল । ইট- সিমেন্ট আর বাঁশ দিয়ে বানানো হয়েছে ডাম্বেল।দঁড়ি, টায়ার, বাঁশ দিয়ে বানানো পুলআপ বার। সাইকেলের পুরাতন টিউ দিয়ে তৈরী করা হয়েছে রেসিস্টেন্ট ব্যান্ড।টেকনোলজিকে টেক্কা দিয়ে কোন রকম অর্থ বা পয়সা-কড়ি ছাড়াই তৈরী করা হচ্ছে ভারী ব্যায়ামের এসব যন্ত্রপাতি।
শরীর-মন সুস্থ্য রাখতে ২ বছর ধরে এমন সৃজনশীল আর চাঞ্চল্যকর কর্মযজ্ঞ চালিয়ে নিয়মিত শরীর চর্চার মাধ্যমে সুঠাম আর সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে সাড়া ফেলেছে ।এভাবে শরীর ফিট রাখার সব যন্ত্রপাতি আর কলাকৌশল রপ্ত করেছে তারা। আর এসব দিয়েই গ্রামটির যুবসমাজের বড় একটি অংশ ২ বছর ধরে নিয়মিত করে চলেছে শরীরচর্চা। প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রমে শরীর গঠনের পাশাপাশি এসব তরুণদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করছে বহুগুণে।
শ্রীপুর গ্রামের বসির উদ্দিন বলেন,এমন উদ্যোগে আমরা উচ্ছাসিত এলাকার সচেতন মহল। ব্যায়ামাগার বা জিম এক্সারসাইজ যন্ত্রপাতির কোনটার কত ওজন বা সঠিক হচ্ছে কি না তাও মাপঝোক করে শরীরের ধরণ অনুযায়ী ব্যায়াম সহ এসব নিয়ে নিয়মিত পড়াশোনা সহ প্রশিক্ষনের পাশাপাশি ইউটিউব কনটেন্ট দেখে তরুণদের বডি বিল্ডিংয়ে উদ্যোগ নেয় এরা। এই উদ্যোগ এর মাধ্যমে এলাকার তরুণরা উপকৃত হবে।
উদ্যোক্তা এপি পলাশ বলেন, উপজেলা শহর এমন কি অনেক জেলা শহরেও পর্যাপ্ত ব্যায়ামাগার নাই। আর বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাতেও এসেছে স্থবিরতা। এমন পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমি এমন উদ্যোগ গ্রহন করেছি।আশা করি একদিন বাংলাদেশের প্রতিটা গ্রামে এমন জিম-ব্যায়ামাগার গড়ে উঠবে।
শৈলকুপা উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুজাজামান ইকু বলেন, এটা একটি সুন্দর উদ্যোগ। এই জিম সস্পর্কে আমি কিছু জানি না। আমার কাছে কেউ সহযোগীতা চাইলে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ খেকে সাধ্যমত চেষ্টা করবো।