সংযোগ সড়ক তৈরি না হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি গ্রামে মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজটি দেড় বছরেও চালু হয়নি। ব্রিজের হাজরাহাটি অংশে অবৈধ স্থাপনা থাকায় সংযোগ সড়ক হচ্ছে না বলছে এলজিইডি। ফলে দু’পাশের ১০-১৫টি গ্রামের জনগণকে পোহাতে হচ্ছে দূর্ভোগ। এলজিইডির পক্ষে অবৈধ স্থাপনা সরানোর নির্দেশ দিলেও তা সরানো হচ্ছে না। ভুক্তভোগিদের দাবী, দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে ব্রিজটি চালু করা হোক।
এলজিইডি সূত্র জানায়, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে চুয়াডাঙ্গার হাজরাহাটি গ্রামে ৯৬ মিটার লম্বা একটি ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ছয় কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালের শুরুর দিকে। এরপর পেরিয়ে গেছে প্রায় দেড় বছর। কিন্তু ব্রিজটি চালু করা যায়নি।
এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছে, ব্রিজের হাজরাহাটি অংশে সরকারি জমিতে কিছু অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। কয়েকটি দোকানঘর ও একটি দ্বিতল ভবন রয়েছে। এগুলো অপসারণ করা না হলে সংযোগ সড়ক তৈরি করা যাচ্ছে না। অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য দখলকারিদের পত্র দেওয়া হয়েছে।
হাজরাহাটি গ্রামের কালাম জোয়ার্দ্দার জানান, বর্তমানে যেখানে ব্রিজ তৈরি হয়েছে সেখানে আগে নৌকা বা বাঁশের সাঁকোয় পারাপার হতো। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে ২০১৭ সাথে ব্রিজটি নির্মাণ শুরু হয়। কিন্তু কাজ শেষ না হওয়ায় ব্রিজটি এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না। অন্যদিকে অসমাপ্ত কাজের জন্য পড়ে থাকা নির্মাণ সামগ্রীও নষ্ট হচ্ছে।
হাজরাহাটি গ্রামের সাইফুল ইসলাম পিনু জানান, ব্রিজ চালু না হওয়ায় অন্তত ৩০ কিলোমিটার ঘুরে অনেককে বিকল্প পথে চুয়াডাঙ্গায় যাতায়াত করতে হয়। তাছাড়া, ব্রিজের দুপাশ রয়েছে ঝুকিপূর্ণ। কাজ অসমাপ্ত থাকায় প্রায়ই ঘটছে দূর্ঘটনা। পায়ে হেটে যাতায়াতেও ঝুঁকি নিতে হচ্ছে।
শিয়ালমারী গ্রামের আব্দুল হালিম ও লিটন আলী জানান, শিয়ালমারী, বটিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার মানুষ এই ব্রিজ পার হয়ে চুয়াডাঙ্গায় যাতায়াত করে। ব্রিজের দু’পাশ অসমাপ্ত হওয়ায় তা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থায় ব্রিজে পায়ে হেটে যাতায়াত করতেও ঝুঁকি নিতে হয়।
অভিযুক্ত অবৈধ স্থাপনাকারী হাজরাহাটি গ্রামের হাতেম আলী বলেন, ‘আমার বিল্ডিঙের যে অংশ বাড়তি ছিলো তা ভেঙে নেয়া হয়েছে। এখন আর অসুবিধা থাকার কথা নয়। আমিও চাই রাস্তাটি হোক।’
চুয়াডাঙ্গা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ সানা জানান, ব্রিজটির হাজরাহাটি প্রান্তে যেসব জমিতে অবৈধ স্থাপনা রয়েছে সেগুলো দখলমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অচিরেই অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে শেষ করা হবে নির্মাণ কাজ। এর ফলে গ্রামবাসীরাও ব্রিজের সুফল ভোগ করবে।