আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি আন্তর্জাতিক মহলের ‘অযাচিত’ হস্তক্ষেপে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের পাঁচশ’র বেশি শিক্ষক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যায়ের সদস্য সচিব অধ্যাপক বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি চলমান অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত সব ধরনের শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে, সে দেশের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের তিনটি রাজনৈতিক দলকে নিঃশর্ত সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক করার সব ধরনের উদ্যোগ নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে, সেই সময়ে এই ধরনের চিঠি বিতরণ এবং হস্তক্ষেপ শিষ্টচার বহির্ভূত। রাষ্ট্রদূতের পাঠানো চিঠিতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাদানকারীদের ওপর ‘ভিসা নীতি’ প্রয়োগের পুরোনো হুমকি ব্যক্ত করা হয়েছে। হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির নামে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, শিল্প-কলকারখানা ভাঙচুর, পুলিশ ও সাধারণ পথচারী হত্যা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুর ও ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করলেও তথাকথিত মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা রাষ্ট্রটি এ বিষয়ে কোনো কথা বলেনি, এমনকি সুষ্ঠু নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করার দায়ে তাদের উপর ভিসা নীতিও প্রয়োগ করেনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিবৃতিতে বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন সরকার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের পক্ষাবলম্বন করে অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে গণহত্যায় সহযোগিতা করেছিল। একই ধারাবাহিকতায় বিএনপি-জামায়াত সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে জনসমর্থন না পেলেও ওই দেশের রাষ্ট্রদূতের পক্ষপাতমূলক আচরণে উৎসাহিত হয়ে তারা আন্দোলনের নামে সহিংসতা চালিয়ে যাওয়ার প্রয়াস পাচ্ছে। ’
বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ মনে করে একটি সার্বভৌম দেশের নাগরিক হিসেবে এদেশের জনগনের নিজস্ব স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং স্বাধীনভাবে নিজের ভোট দেয়ার অধিকার রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের এ ধরণের পদক্ষেপ এদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি এবং দেশের মান মর্যাদা ক্ষুন্ন করেছে। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রতি সম্মান জানিয়ে, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন ও সরকারের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানোনো হয়।