দীর্ঘ সত্তর বছর ধরে যে পরিবারটির সদস্যরা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে লালিত-পালিত হয়ে মুজিব আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করার লড়াইয়ে অগ্রনী ভুমিকা পালন করে আসছিলেন সেই পরিবারটির সদস্যরাই এখন আওয়ামীলীগের নেতৃত্বের কারনে একেবারে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে।
আলমডাঙ্গার খাদিমপুর ইউনিয়নজুড়ে এই পরিবারটির ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকা সত্বেও তা ক্রমান্বয়ে ছেটে দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে জেলা নেতৃত্ব। এরই মধ্যে এই পরিবারের সদস্য খাদিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হালিম মন্ডলের কাছ থেকে সভাপতির পদটি নিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাকে রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করতে দীর্ঘ বছর ধরে থাকা স্কুল কমিটির সভাপতির পদটিও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগগুলো করছিলেন আব্দুল হালিম মন্ডল।
মেহেরপুর প্রতিদিনের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলেন আওয়ামী লীগের এই ত্যাগী নেতা। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন আলমডাঙ্গা প্রতিনিধি রদিদুল ইসলাম।
আব্দুল হালিম মন্ডল বলেন, ১৯৪৯ সালে আওয়ামীলীগের জন্মের সময়ে খাদিমপুর ইউনিয়নে প্রথম দলটির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় তার আপন ফুফাত ভাই কমলাপুরের নুরুদ্দিন মাস্টারকে। তিনি দীর্ঘ বছর সভাপতি হিসেবে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় তারই ছোট ভাই সফিউদ্দিনকে। তিনিও দীর্ঘ বছর এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।
সবশেষে ৯৭ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পান বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মন্ডল। তিনি ১৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট করায় জেলা নেতৃত্বের রোষানলে পড়েন আব্দুল হালিম মন্ডল। এরপর তার কাছ থেকে একে একে দলীয় সবকিছু কেড়ে নেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকলেও পদে পদে হচ্ছেন বাঁধাগ্রস্ত।
আব্দুল হালিম মন্ডল জানান, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ থেকে বিএ পাশ করার পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর তিনি আবারও কুষ্টিয়া ল‘কলেজে ভর্তি হন। কিন্ত পরিবারের আহ্বানে তাকে খাদিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে অংশ নিতে হয়। তিনি দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরআগে তার বড় ভাইও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
হালিম মন্ডল বলেন, তিনি দিনে দিনে পুরো ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের রাজনীতিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। দীর্ঘ বছর ধরে সার্বক্ষনিক জনগনের মাঝে থাকায় মানুষের ভালবাসায় নিজেকে করে তুলেছেন অপ্রতিদ্বন্দ্বি। তিনি বলেন, তার এই জনপ্রিয়তাই রাজনীতিতে কাল হয়ে দেখা দিয়েছে। তাকে নানাভাবে থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার চেয়েও অপেক্ষাকৃত দুর্বল কোন লোককে দিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব দেওয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে তিনিই অপ্রতিদ্বন্দ্বি। খাদিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনেও তিনিই অপ্রতিদ্বন্দ্বি।