জায়েদ খানের সদস্যপদ স্থগিতের সিদ্ধান্ত রোববার। জরুরি সভা ডেকেছে শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটি। শোনা যাচ্ছে, মিটিংয়ের মূল আলোচনার বিষয় জায়েদ খান। এ জরুরি সভা থেকে আসতে পারে জায়েদ খানের সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত। যদিও এ নিয়ে আগাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি কেউ।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে কম ঘোলা হয়নি জল। পদটি নিয়ে নিপুণ আর জায়েদ খানের মধ্যে কোর্ট-কাছারিও হয়েছে। এবার আলোচনা উঠেছে জায়েদ খানের সদস্যপদ নিয়ে।
এ বিষয়ে জায়েদ খান বলেছেন, আমি যখন মুম্বাই গিয়েছিলাম, ঠিক তখনই আমাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যাতে আমি উত্তর না দিতে পারি। সেই ইস্যু তুলে আমার বিরুদ্ধে নানা অপকর্ম চালানো হচ্ছে। এর আগে রুবেল ভাই ও সুচরিতা আপার কার্যনির্বাহী পদ বাতিল করা হয়েছে। এবার আমার পেছনে লেগেছে।
চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারণ দর্শানোর চিঠিতে বলা হয়েছে— গঠনতন্ত্রের ৭-এর ‘ক’ ধারা মোতাবেক আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ধারাটি এমন যে সংগঠনের উদ্দেশ্য পরিপন্থী ও বিরোধী কার্যক্রম করলে সদস্যপদ স্থগিত করা হবে। কিন্তু এটা পুরোপুরি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদটি নিয়ে মামলা এখনো বিচারাধীন। হাইকোর্ট আমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রায় দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে নিপুণ আপিল করেছে, যে আপিলটি গ্রহণ করে শুনানির জন্য রাখা হয়েছে। সেই বিচারাধীন পদ নিয়ে নিজেকে কীভাবে সাধারণ সম্পাদক দাবি করে তিনি আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
জায়েদ খান দাবি করেন, জোর করে সাধারণ সম্পদকের দায়িত্ব নেওয়া নিপুণের গঠনমূলক সমালোচনা করেছি বলেই তিনি আমার সদস্যপদ বাতিলের পাঁয়তারা করছে।
এদিকে গেল ২০২১-২৩ মেয়াদি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সুচরিতা কার্যনির্বাহী সদস্য আর রুবেল সহসভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে কার্যনির্বাহী কমিটির পর পর তিন মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেননি— এমনকি সমিতির উন্নয়নমূলক কোনো কাজে দেখা যায়নি বলে তাদের সদস্যপদ স্থগিত করে শিল্পী সমিতি। এ বিষয়টি নিয়েও বললেন জায়েদ খান।
তিনি দাবি করেন, ‘রুবেল ও সুচরিতার সঙ্গেও অন্যায় হয়েছে। আদালত যখন সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থার রায় দিয়েছেন, তখন তারা কেউ-ই সমিতির মিটিংয়ে যাননি। তখন তাদের কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু ইলিয়াস কাঞ্চন সাহেবতো সমিতির সভাপতি হিসেবে তাদের চিঠি দিতে পারেন না। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চিঠি দিতে পারেন সাধারণ সম্পাদক অথবা সহসম্পাদক। কিন্তু তা হয়নি, এ বিষয়ে সুচরিতা ম্যাডাম ও রুবেল সাহেব ব্যাখ্যা চাইলেও জবাব মেলেনি। উল্টো তাদের সদস্যপদ স্থগিত করে দেওয়া হয়।
শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামীকাল সভায় কি হবে তা আমি বলতে পারছি না। তা ছাড়া জায়েদ খান ইস্যুতেও কোনো কথা বলতে চাই না।
জায়েদ খান অভিযোগ করেছেন— সাংগঠনিক কাজে ইলিয়াস কাঞ্চন সমিতির সভাপতি হিসেবে রুবেল ও সুচরিতাকে চিঠি দিতে পারেন না। সাধারণ সম্পাদক না থাকলে প্রয়োজনে এজিএস চিঠি দেবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সভাপতি হিসেবে আমি কি তাদের চিঠি দিতে পারি না। কোন গঠনতন্ত্রে আছে চিঠি দেওয়া যাবে না। জায়েদ খান কেন এ কথা বলেছেন তা তাকেই জিজ্ঞেস করুন। এ বিষয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাইছি না।
তবে জায়েদ খানের এসব অভিযোগ নিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তারের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সূত্র: যুগান্তর