সারাদেশে সবজির চাহিদা যোগান দেওয়ার অন্যতম উৎস স্থল দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা মেহেরপুর। মেহেরপুরের চাহিদা মেটানোর পর প্রতিদিনই প্রায় ২০ থেকে ২৫ ট্রাক সবজি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হয়। অথচ সেই মেহেরপুরেও সবজির দাম অসহনীয় ভাবে বেড়েই চলেছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দামও।
বাড়ছে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের। এমন কোন সবজি নেই যার কেজি ৫০ টাকার কম। উৎপাদনস্থলে এমন অবস্থা তখন সারাদেশে কি অবস্থা চলছে বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশন দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। সরকারও সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে দেশের বাজারের পণ্যমূল্যর দাম উঠা-নামা করার সম্পর্ক রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার সাথে সাথে দেশের বাজারেও দ্রুত দাম বেড়ে যায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে দেশের বাজারে সেই দাম সহজে আর কমে না। তখন ব্যবসায়ীরা বলেন, বেশি দামে আমদানি করা পণ্যর যোগান থাকায় দাম কমানো সম্ভব হয়না। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করতে হবে। কঠোরভাবে এসকল সিণ্ডিকেট ভাঙতে হবে। জরুরিভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণের উপরই সরকারকে জোর দিতে হবে।
মেহেরপুর তহ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ আবু হানিফ বলেছেন, বর্ষার কারণে এবার অনেক ফসল নামলা (পরে) হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে ফসল নষ্ট হওয়ার কারণে বাইরের চাপ মেহেরপুরের থেকে অনেক বেশি। বর্তমানে বাজারে বাইরের ক্রেতাদের সংখ্যাও অনেক বেশি। বর্তমানে ক্রেতারা সরাসরি মাঠ থেকেও মাল কিনে ঢাকা সহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে।
সবজি উৎপাদন নিয়ে কৃষিবিদ স্বপন কুমার খাঁ বলেছেন, কৃষি বিভাগের কাজ হচ্ছে কৃষকের উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
উৎপাদনে আমরা সফল হয়েছি। আমার চাষি তার উৎপাদিত ফসলের মূল্য পাচ্ছে। সবজির যে উচ্চমূল্য তা দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। সে কারণে আমাদের এলাকার সবজির টান পড়েছে। বর্তমানে আমাদের এখানে বাইরের ক্রেতাদের আগমন অনেক বেশি। তারা এখানকার বাজার থেকে আবার সরাসরি মাঠ থেকে সবজি দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
শুধূমাত্র মেহেরপুর জেলায় এবছর সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে এবং ফলনও খুব ভালো হয়েছে। তবে বাজার ব্যবস্থাপনার সুষ্ট বন্টন করতে পারলে সবজিসহ সকল পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।