চার বছর পূর্ণ করে ৫ বছরে পদার্পণ করলো আমাদের প্রিয় পত্রিকা মেহেরপুর প্রতিদিন। চারটি বছর পূর্ণ করা একটি পত্রিকার জন্য খুবই কম সময়। কিন্তু যেখান থেকে কোন পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হতে পারেনি নানা কারণে সেরকম একটি যায়গা থেকে দৈনিক পত্রিকা পাঠকের হাতে প্রতিদিন তুলে দেওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
সীমান্তঘেষা ছোট্ট একটি জেলা মেহেরপুর থেকে একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ অব্যাহত রাখা হলো নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর মত অবস্থা। যেখানে ছাপাখানা নেই, পত্রিকা মেকাপ করার জন্য মেকাপ ম্যান পাওয়া যায় না। প্রিন্ট করার জন্য যে ট্রেসিং পেপার ও যে কালি প্রয়োজন হয় সেগুলোও পাওয়া যায় না। এর বাইরেও পত্রিকার রসদ যোগানো বিজ্ঞাপনদাতা বা শিল্পপ্রতিষ্ঠানও নেই। কালেভদ্রে শুভেচ্ছা বিজ্ঞাপন পেতেও যে পরিমাণ বেগ পেতে হয়, তা আর নাই বললাম। অসংখ্য অসঙ্গতির মধ্যে দিয়ে একটি দৈনিকের চার বছর অতিক্রম করার ব্যাপারটি ছোট করার ভাবারও কিছু নেই। আমরা সেই ভাবনার কাজটি করে চলেছি।
সংগত কারণেই এ নিয়ে আমরা আনন্দিত, গর্বিত। আমরা পেরেছি। একটা জায়গায় মেহেরপুর প্রতিদিনকে দাঁড় করাতে পেরেছি। এই যাত্রায় আমাদের সঙ্গে ছিল অগণিত পাঠক আর শুভানুধ্যায়ী। মেহেরপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষের ভালোবাসা আমাদের প্রধান শক্তি। পাঠক সাধারণের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখে পত্রিকাটি আমরা করোনার অতিমারিতেও প্রকাশ করে গেছি। এই শ্রদ্ধা মেহেরপুর প্রতিদিন আজীবন বজায় রাখবে। আমরা বিশ্বাস করি, পাঠকই আমাদের সবচাইতে বড় শক্তি, বড় শ্রদ্ধার জায়গা। তাদের হাতে প্রতিদিন একটি গ্রহণযোগ্য পত্রিকা তুলে দেওয়ার চেষ্টা ৪ বছর ধরে আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে করে গেছি। আগামী দিনেও এই নিষ্ঠা দৃঢ়ভাবে বজায় রাখব।
জনগণের মুখপত্র এই স্লোগানের স্বাক্ষর রেখে যা কিছু জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে সেধরণের সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আমাদের সহকর্মীরা নিরলস কাজ করছে। সংবাদের ভিতরকার সকল সত্য আপোষহীনভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করেছি। অসততা আমাদের স্পর্শ করতে পারেনি। তবে আমরা নিরপেক্ষ নই। আমরা মানুষের পক্ষে। প্রতিটি সাধারণ মানুষ, প্রতিটি সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পক্ষে আমাদের কলম চলবে। সাধারণ মানুষই আমাদের মূলশক্তি।
২০১৮ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের দিন যাত্রা শুরু করেছিল মেহেরপুর প্রতিদিন। স্বাধীনতার এই মাস মার্চ মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসের যুদ্ধে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত ও দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতার দীপ্ত চেতনায় আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। অদম্য সাহস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার অংশিদার আমরাও।
পরিশেষে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভক্ষণে সকল পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা, হকার ও শুভানুধ্যায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাই শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। ভালো হোক, শুভ হোক সবকিছু।