সরকারি ঔষধ বাহিরে পাচার করা, স্টক লেজার মেইনটেইন ও সার্ভে কমিটির কাছে রিপোর্ট না দেওয়াসহ নানা অভিযোগ উঠেছে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের স্টোর কিপারর নাসিমা পলির বিরুদ্ধে। এসকল অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে কারণ দর্শাণোর নোটিশ দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নাসিমা পলি মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের এলএমএসএস গোলাম রহমানের খানের মেয়ে।
কয়েক দফায় কারণ দর্শাণোর নোটিশ দিলেও তিনি জবাব দেননি এবং সার্ভে কমিটির কাছে কোন রিপোর্ট পেশ করেননি। জবাব না পেয়ে গত ৭ আগষ্ট স্টোর কিপার নাসিমা পলিকে একদিনের মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা প্রদানের নোটিশ প্রদান করেন এবং না দিলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানোর কথা উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তিতে গত ১৩ আগষ্ট তাকে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শিয়ে আরও একটি নোটিশ প্রদান করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সে নোটিশে বলা হয়েছে, আপনি (স্টোর কিপার) হাসপাতালের সরকারি ওষুধ বাহিরে পাচার করেন। এছাড়া স্টক লেজার মেইনটেইন না করা ও সার্ভে কমিটির নিকট রিপোর্ট প্রদান না করার প্রমান আছে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে তিন দিনের মধ্যে উপর্যুক্ত কারণ দর্শাণোর নোটিশ দেওয়া হয়।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের স্টোর কিপার নাসিমা সুলতানা চাকরিতে যোগদান করেন ১৯৮৮ সালে। নাসিমা পলি যোগদানের পর ডেপুটেশনে মেহেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কয়েকবছর। পরে আবার স্বপদে ফেরেন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে। সেই থেকে প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে চাকরি করছেন একই কর্মস্থলে। কিন্তু সরকারি চাকরিতে একই কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি থাকার বিধান নেই। রাজনৈতিক ক্ষমতায় তিনি একই কর্মস্থলে থাকছেন যুগের পর যুগ। নাসিমা পলির আপন ভাই আব্দুর রহমান মন্টু একজন কুয়াক দন্ত চিকিৎসক। তার ওই ভাই ও হাসপাতালের কিছু দালালের মাধ্যমে সরকারি ওষুধ বাহিরে পাচার করার অভিযোগ রয়েছেন নাসিমা পলির বিরুদ্ধে। মেহেরপুরের বিভিন্ন ওষূধের দোকানে পুলিশের অভিযানে সরকারি ওষুধ পাওয়ার খবর পাওয়া গেছে এবং যেগুলো বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
হাসপাতাল এলাকার কয়েকজন ওষুধ দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, স্টোর কিপার নাসিমা পলি সরকারি ইনসুলিন, এন্টিবায়েটিকসহ বিভিন্ন সরকারি ওষুধ তার পছন্দের কিছু দোকানে বিক্রি করেন। হাসপাতালের হিসাবরক্ষক মীর হাবিবুর রহমানের যোগসাজশে তিনি এসকল অপর্কম করেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
মেহেরপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাসিব মো. জমির সাত্তার বলেন, স্টোর কিপার নাসিমা পলির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে বিভিন্ন সময় মৌখিক ও লিখিতভাবে সতর্ক করা হয়েছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তার বিরুদ্ধে বলেও লাভ হয়নি। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তার অপকর্ম থেকে পার পেয়ে যায়। তার কাছে রিপোর্ট চেয়ে নোটিশ করা হয়েছে। রিপোর্টে গরমিল পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।