চারদিন আগে সরকারি চাকরি ছেড়ে আওয়ামী লীগের উপজেলা সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেন আবুল কালাম আযাদ। আবুল কালাম আযাদ মেহেরপুরের মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক। গত ৫মে তিনি অবসরের জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন। কিন্তু ৭মে পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। তাহলে কিভাবে তিনি ৫মে আবেদন জমা দিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মেহেরপুরের মুজিবগর উপজেলায়। সোমবার ৯ মে মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।
সোমবার মুজিবনগর কমপ্লেক্স মিলনায়তনে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি আবুল কালাম আযাদকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন। এসময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
তবে এ নিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, প্রতিমন্ত্রী ক্ষমতাবলে মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজ অনুসারীদের দিয়ে কমিটি গঠণ করেছেন যা পূর্ব পরিকল্পিত। সরকারি চাকরি করতে করতে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে যাবেন যা মেনে নেওয়া যায় না।
এ ব্যাপারে মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়া আবুল কালাম আযাদ বলেন, কলেজ সরকারিকরণ হওয়ার আগে আমি মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। সরকারি করণ হওয়ার পর সে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিই। পরবর্তিতে যখন উপজেলা সম্মেলনের কথা জানতে পারি তখন অবসরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আমার চাকরি আর কয়েক মাস আছে। কিন্তু পরবর্তি সম্মেলন আবার কবে হবে সে হিসেবে আগাম অবসর নিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করলাম।
মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কামাল হোসেন বলেন, আবুল কালাম আযাদ কলেজ সরকারিকরণ হওয়ার আগে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। বর্তমানে তিনি প্রভাষক হিসেবে চাকরিরত ছিলেন। গত ৫মে আগাম অবসরের জন্য আবেদন করেছেন।
তবে মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি জিয়া উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, মন্ত্রীর সাথে ক্ষমতায় আমাদের মত মানুষকি পেরে উঠতে পারি। যে কারণেই আমি কিছু বলতে চাই না।
অপর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রেজাউর রহমান নান্নু বলেন, প্রতিমন্ত্রীর পরিকল্পিত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্মেলনের নামে আই ওয়াশ করা হয়েছে। সভাপতি রফিকুল ইসলাম তোতা বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে ভোট করে সভাপতি হলেন। আর সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আযাদ চারদিন আগে অবসরের আবেদন করেছেন। এখনো তা গৃহিত হয়নি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আসলাম শিহির বলেন, সরকারি চাকরিজীবী একজন কখনোই দলীয় নেতৃত্বে আসতে পারেন না। ৫ তারিখে অবসরের আবেদন করে ৯ তারিখে সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক হলেন। যা পূর্বপরিকল্পিত কমিটি গঠন ছাড়া কিছুই না।