পক্ষকাল পত্রিকার সম্পাদক ও ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের নামে দায়ের করা তিনটি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১ জুন) বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো.আতোয়ার রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই মাসের জন্যি এই তিনটি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন।
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল মেহেরপুর শহরের কাশারীপাড়া এলাকার মৃতু মীর মনোয়ার হোসেনের ছেলে।
গত বছরের ৮ নভেম্বর ফটো সাংবাদিক কাজলের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পৃথক তিন মামলায় চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন ।
রাজধানীর শেরে-বাংলা নগর, হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় ওই তিনটি মামলা দায়ের হয়।
চার্জ শুনানিকালে সাংবাদিক কাজল আদালতে হাজির ছিলেন। তার পক্ষে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম চার্জগঠনের প্রার্থনা করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তাকে পড়ে শোনান।
এরপর তার কাছে জানতে চান, তিনি দোষী না নির্দোষ। এ সময় কাজল নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।
এরপর আদালত তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন। কাজলের আরেক আইনজীবী জাহেদুর রহমান এ তথ্য জানান।
পরে হাইকোর্টে আবেদন করেন কাজল
যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়াকে জড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখালেখি করায় গত বছর ৯ মার্চ রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় কাজলসহ ৩২ জনের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন মাগুরা-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শেখর। এরপর ১০ ও ১১ মার্চ রাজধানী হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও দুটি মামলা হয়।
মামলা হওয়ার পর গত বছর ১০ মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতিরপুলের ‘পক্ষকাল’ অফিস থেকে বের হওয়ার পর সাংবাদিক কাজল নিখোঁজ হন। ১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসি নয়ন। পরে ১৮ মার্চ রাতে কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক।
ঢাকা থেকে নিখোঁজের ৫৩ দিন পর গত বছরের ২ মে রাতে যশোরের বেনাপোলের ভারতীয় সীমান্ত সাদিপুর থেকে অনুপ্রবেশের দায়ে ফটো সাংবাদিক কাজলকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি)।
পরদিন অনুপ্রবেশের দায়ে বিজিবির দায়ের করা মামলায় আদালতে সাংবাদিক কাজলের জামিন মঞ্জুর হলেও পরে কোতোয়ালি মডেল থানায় ৫৪ ধারায় আরেকটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
প্রায় সাড়ে আট মাস কারাভোগের পর গত বছর ২৫ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পান কাজল।পরে তিন মামলায় কাজলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করলে মামলাটি বদলি হয়ে বিচারের জন্য সাইবার ট্রাইব্যুনালে আসে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।