মেহেরপুরে হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ড মামলায় গ্রেফতার নিহাল আল মুকিতের ৩ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই মামলার অপর আসামি সাংবাদিক মিজানুর রহমান জনির জামিন না মঞ্জুর করেছেন একই আদালত।
গতকাল মঙ্গলবার মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো: তারিক হাসান এ আদেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আশরাফ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গতকাল হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ড মামলায় গ্রেফতার নিহাল আল মুকিতের ৭দিনের রিমাণ্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আশরাফ আলী। আদালতের রিমাণ্ড আবেদন শুনানি শেষে বিজ্ঞ বিচারক ৩দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত রবিবার রাতে মেহেরপুর শহরের এশিয়া নেট মোড় থেকে নিহাল আল মুকিতকে গ্রেফতার কওে ডিবি পুলিশ। আটক নিহাল আল মুকিত শহরের বড় বাজার এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। তার নিকট থেকে জব্দ মোবাইল ফোনে একাধিক অনৈতিক সম্পর্কের ভিডিও ছবি পাওয়া যায়। তার কাছে হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ডে আরো গুরত্বপূর্ণ থাকতে পারে মর্মে আদালতে রিমাণ্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এছাড়া একই আদালতে একই মামলার অপর আসামি সাংবাদিক মিজানুর রহমান জনির জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী। অপরদিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা জামিনের বিরোধীতা করেন। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক শুনানী শেষে জনির জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।
প্রসঙ্গত, হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ডে পুলিশ ৭ জনকে আটক করেছে। আটকৃতরা কথিত সাংবাদিক নাজনিন খান প্রিয়া, হোটেল মালিক মতিয়ার রহমান, তার ছেলে মামুন, হিজুলির ছন্দা খাতুন, হোটেল কর্মচারী হাসিবুল হক জয়, সাংবাদিক মিজানুর রহমান জনি ও নিহাল আল মুকিত।
ডিবি জানায়, নিহালের কাছে থেকে মেহেরপুর শহরের আলোচিত আটলান্টিক হোটেল কাণ্ডে তার একাধিক অশ্লীল ভিডিও পাওয়া গেছে এবং নিহাল আলোচিত হোটেল আটলান্টিকাতে অসামাজিক কার্যকলাপের মিডিয়া হিসেবে কাজ করতো এবং নিজেও এসব কর্মকাণ্ডের সুবিধা নিতো।
ডিবি পুলিশ আরো জানায়, হোটেল আটলান্টিকা মামলার আসামি হাসিবুল হক জয়ের ১৬৪ ধারার জবানবন্দি অনুযায়ী তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং নেহালের মোবাইলে অসংখ্য মেয়েদের সাথে শারীরিক মিলনের অনৈতিক ভিডিও ছবি পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, ২২ নভেম্বর মউকের একটি চাঁদাবাজী মামলার আসামী হিসেবে হোটেল আটলান্টিকায় অসামাজিক কার্যকলাপের অন্যতম হোতো নাজনিন খান প্রিয়াকে আটক করে সদর থানা পুলিশ। পরে ওই মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হলে ডিবি পুলিশ মামলার তদন্তকালে ৩০ নভেম্বর মেহেরপুরের ওয়াপদা সড়কে আটলান্টিকা কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে হোটেল মালিক মতিয়ার রহমান, তার ছেলে মামুন এবং সদর উপজেলার হিজুলী গ্রামের এনামুল হকের মেয়ে ছন্দা খাতুনকে গ্রেফতার করে। ছন্দা খাতুনকে ১৬৪ ধারায় জবাবনবন্দীতে হোটেল আটলান্টিকার অসামাজিক কার্যক্রমের বিবরণ তুলে ধরেন। তার জবানবন্দীতে উঠে আসে ভয়ংকর সব তথ্য। হোটেল মালিক মতিয়ার ও তার ছেলে মামুন স্থানীয় কিছু সাংবাদিকের সহায়তায় হোটেলে বিভিন্ন মেয়েদের ব্যবহার করে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ধারণ করে সেগুলো সাংবাদিকদের মাধ্যমে চাদাবাজি করে আসছিলেন।
ছন্দা খাতুনের জবানবন্দী নিয়ে মেহেরপুর প্রতিদিনে সংবাদ প্রকাশ হলে মেহেরপুরসহ আশেপাশের কয়েকটি জেলায় সংবাদটি তোলপাড় সৃষ্টি করে। যার রেশ এখনো চলমান। সংবাদে মেহেরপুরের চার সাংবাদিক ও এক আইনজীবীর কথা উঠে আছে। প্রকাশিত ওই সংবাদের চার সাংবাদিকের একজন এশিয়ান টেলিভিশনের সাংবাদিক মিজানুর রহমান জনি।