মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক এমপি মকবুল হোসেনের ভাগ্নে সবুজের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলা করেছে মেহেরপুর প্রতিদিন।
মেহেরপুর প্রতিদিনের সম্পাদক ইয়াদুল মোমিন ও প্রকাশক এম এ এস ইমন বাদী হয়ে মেহেরপুরের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর, মানি স্যুট-০১/২০২৩। গত ৩০ জানুয়ারি সেমাবার শুনানি শেষে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো: বেলাল হোসেন আসামী সবুজ হোসেনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। আগামী ০৬ এপ্রিল মামলার পরবর্তি দিন ধার্য করা হয়েছে।
মেহেরপুর প্রতিদিনের আইনজীবী নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার এজাহারে জানা গেছে, মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার ০৮ নং ওয়ার্ড বাগানপাড়ার বাসিন্দা সবুজ হোসেন সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেনের ভাগ্নে। তিনি বাদীগণের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১৩ মে গাংনী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার এজাহারে তিনি মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক এমপি মোঃ মকবুল হোসেনের ভাগ্নে বলে পরিচয় দেন। তিনি এজাহারে দাবি করেন বাদীগণ তাহাদের মেহেরপুর প্রতিদিন প্রিন্ট ও একই নামে প্রচারিত অনলাইন পত্রিকা www.meherpurpratidin.com এ ২০২০ সালের ১ মে তারিখে “গাংনীর সাবেক এমপি মকবুলের কান্ড, ২৬ বছর দখলে রেখেছেন পরের বাড়ি” মর্মে একটি মিথ্যা, ভিত্তিহীণ ও মানহানিকর সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ করেন। এবং যাহার ফলে এলাকায় শান্তি- শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার উপক্রম হয়েছে মর্মে অভিযোগ করেন।
উল্লেখিত এজাহারের প্রেক্ষিতে গাংনী থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ গাংনী থানার মামলা নং ১২, তারিখ- ১৩/০৫/২০১০ ইং ধারা- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫(২), ২৯ (১), ৩১ (২) ও ৩৫(২) মতে নিয়মিত মামলা রুজু করেন। যাহা বিজ্ঞ আমলী আদালতে জি.আর- ১৮/২০২০ (গাংনী) মূলে নিবন্ধিত হয়। পরবর্তীতে মামলাটি বিভাগীয় স্পেশাল সাইবার ট্রাইব্যুনাল, খুলনা’তে সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলা নং- ১৮০/২০২১ (খুলনা) মূলে নিবন্ধিত হইয়া বিচারাধীন থাকাবস্থায় মেহেরপুর প্রতিদিনের সম্পাদক, প্রকাশকসহ ওই মামলার আসামীরা বিজ্ঞ আদালতে বিগত ইং ২৩/০২/২০২২ তারিখে ফৌজদারী কার্যবিধি ২৬৫ (প) ধারামতে বস্তুনিষ্ঠ ও যৌক্তিকভাবে অব্যাহতি (Discharge) এর আবেদন করেন। বিভাগীয় স্পেশাল সাইবার ট্রাইব্যুনাল খুলনার বিজ্ঞ বিচারক তার প্রেক্ষিতে বিগত ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে মামলার আসামীগণ (বর্তমান বাদীগণ) কে মামলার দায় হইতে অব্যহতি প্রদান করেন।
মেহেরপুর প্রতিদিনের মামলার এজাহারে আরো জানা গেছে, প্রকৃতপক্ষে, আসামী সবুজ হোসেনের মামা সাবেক এমপি মকবুল হোসেন, জিনারুল হক এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া। দীর্ঘ ২৬ বছর যাবৎ মোঃ মকবুল হোসেন নামমাত্র ভাড়ায় থাকাবস্থায় বাড়িওয়ালা বাড়ি সংস্কারের নিমিত্ত্বে জনাব মোঃ মকবুল হোসেন সাহেকে বাড়ি ছাড়িয়া দিতে অনুরোধ করিলেও তিনি তাহার ক্ষমতার প্রভাবে উক্ত বাড়ির দখল ছাড়িতে অস্বীকার করেন। বাড়িওয়ালা জনাব মোঃ জিনারুল হক বর্তমান বিবাদীর মামাকে অনুরোধ উপরোধ করিয়াও ব্যর্থ হইয়া বিভিন্ন স্থানে ও দপ্তরে ধর্না দিয়াও ফলাফল না পাইয়া ১নং বাদীর দপ্তরে আসিয়া বহুল প্রচলিত ও সনামধন্য “দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন” পত্রিকায় খবর প্রকাশের অনুরোধ করিলে এই ১ নং বাদী তাহার প্রতিনিধির মাধ্যমে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে বিভিন্ন অডিও ও ভিডিও রেকর্ডীং সহ ঘটনার সত্যতা পরিলক্ষিত করিয়া সমাজের দর্পন হিসাবে উল্লেখিত সংবাদ প্রকাশ করেন।
সাবেক এমপি মোঃ মকবুল হোসেন মেহেরপুর প্রতিদিনে নিউজ হওয়ারে দেড়মাস পরে ভাড়া বাড়িটি ছাড়িয়া দেন। উক্ত নিউজের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ার কারণেই তিনি বাড়ি ছাড়িয়া দিতে বাধ্য হয়েন। কিন্তু বিবাদী সম্পূর্ণ মিথ্যা উক্তি মূলে তাহার রাজনৈতিক প্রতিহিংসাকে চরিতার্থ করিবার মানসে এই বাদীগণের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করিয়া আর্থিক ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করিয়াছে এবং বাদীগণের মর্যাদার হানী ঘটাইয়াছে। যাহার ক্ষতির পরিমাণ ৫ লক্ষ টাকা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১১ মে মেহেরপুর প্রতিদিনে “গাংনীর সাবেক এমপি মকবুলের কান্ড, ২৬ বছর দখলে রেখেছেন পরের বাড়ি” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয় একযোগে প্রিন্ট ও অনলাইন ভার্সনে। যে সংবাদটি অনলাইন থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পাঠক পড়েছেন।