প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো শোক বিবৃতিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে তিনি বলেন, ‘গুণী এই অভিনেতার অভিনয় দেখে দর্শকরা এতোটাই বিমুগ্ধ হতেন যে, তার অভিনয়কে বাস্তবতা-জ্ঞান করতেন। তিনি তার উত্তরসূরী অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।’
‘এই কুশলী অভিনেতা ব্যক্তিগত জীবনেও ছিলেন সহৃদয়, উদারচেতা ও বিনীত স্বভাবের অধিকারী’ উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘বাংলা সিনেমা জগতে তিনি ছিলেন একজন উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। এই অভিনয় শিল্পীর ইন্তেকালে উপমহাদেশে অভিনয় জগতে যে শূন্যতার সৃষ্টি হলো তা সহজে পূরণ হবার নয়। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত।’
উল্লেখ্য, রবিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ১৯৩৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে ছিলেন প্রযোজক, গল্পকার, কবি, আবৃত্তিকার। মঞ্চেও দুর্দান্ত একজন অভিনেতা ছিলেন। পেশাজীবন শুরু করেছেন ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবে। পরে সিনেমায় ডাক পান ১৯৫৯ সালে, অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’ সিনেমার জন্য।
সে ছবি দিয়েই অভিনয় জগতে পা রাখেন। এরপর তিনি সত্যজিৎ রায়ের ২৭টি সিনেমার ১৪টিতে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত চরিত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘ফেলুদা’।
সত্যজিৎ ছাড়াও তিনি মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মতো কালজয়ী নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন।
তার নায়িকা হিসেবে দেখা গেছে সুচিত্রা সেন, সুপ্রিয়া দেবী, শর্মিলা ঠাকুর, অপর্ণা সেন, মাধবী মুখার্জি, তনুজাসহ অনেক কিংবদন্তি অভিনেত্রীকে।
ভারত সরকার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে ২০০৪ সালে ‘পদ্মভূষণ’ ও ২০১২ সালে ‘দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার’ দিয়ে সম্মানিত করেছে। এছাড়াও ২০১৭ সালে তিনি ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ‘লিজিওন অব অনার’ লাভ করেন।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার একই বছর তাকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কার প্রদান করে। ২০১৩ সালে এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।