বৃষ্টি খেলাটা একটু পিছিয়ে দিয়েছিল, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সমর্থকদের জন্য রাতটা মোহনীয় করে তুলতেই হয়তো।
ইতিহাস নিজে এসেই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আলিঙ্গন করে নিল। আর তা করবেই না কেন মিরপুরের তাজা ঘাসে এক মহাকাব্য লিখেছেন মাহমুদউল্লাহ-সাকিব- মোস্তাফিজরা। দুই ম্যাচ হাতে রেখেই ৩-০তে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় নিশ্চত করল বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়া বধ।
এ সবই সম্ভব হয়েছে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুরের স্বপ্নের বোলিং, মাহমুদউল্লাহর ভীষণ প্রয়োজনীয় পঞ্চাশের জোরে।
এমন ঐতিহাসিক ম্যাচে বেশ কিছু রেকর্ড জমা পড়েছে ক্রিকেটে।
১) অস্ট্রেলিয়াকে শুক্রবার ১০ রানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম টানা চার ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ।
২) আর দেশের মাটিতে খেলা সর্বশেষ সাতটি টি-টোয়েন্টিই জিতেছে বাংলাদেশ।
২০১৯ সালে ঘরের মাঠে আয়োজিত ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হেরেছিল টাইগাররা। এরপর মিরপুর-ফতুল্লা বা চট্টগ্রামে কোথাও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হারের তেতো স্বাদ নেয়নি বাংলাদেশ।
৩) শুক্রবারের ম্যাচে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে কম রানের পুঁজি নিয়ে জিতল বাংলাদেশ। এক সপ্তাহ হয়নি আগের রেকর্ডের বয়স। গত ৩ আগস্টে চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৩১ রান করেও জিতেছিল মাহমুদউল্লাহর দল। এবার ১২৭ রান করে জিতে গেল টাইগাররা।
৪) এত কম পুঁজির খেলায় হাফসেঞ্চুরিও এসেছে দুটি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে করেছেন মার্শ। আর বাংলাদেশের পক্ষে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তবে রেকর্ডের বিষয়টি হলো মাহমুদউল্লাহর এ ফিফটি এসেছে ৫২ বলে, যা টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে মন্থরতম। এর আগে রেকর্ডটি ছিল শামসুর রহমানের। ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৭ বলে ফিফটি করছিলেন শামসুর রহমান।
৫) আটবারের চেষ্টায় এই প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। ২০১১ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা দুটি সিরিজেই অবশ্য অপরাজিত বাংলাদেশ। চলতি সিরিজের আগে ২০১৭ সালে টেস্ট সিরিজ ড্র করেছিল বাংলাদেশ।
৬) টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ও সব মিলিয়ে পঞ্চমবার একাধিক ম্যাচের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।
৭) সিরিজের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলছেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। তবে গতকালের ম্যাচে তার পারফরম্যান্স অসাধারণ।
৪ ওভারে ৯ রান দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। এটি একটি রেকর্ড। তবে এই রেকর্ডে মাহমুদউল্লাহকে ডিঙাতে পারেননি তিনি।
এখনো টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভার বোলিং করে এর চেয়ে কম রান দেওয়ার রেকর্ড মাহমুদউল্লাহর। ২০১৪ সালে মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮ রান দিয়েছিলেন এ পার্টটাইম বোলার।
৮) রেকর্ড হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকেও। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি অভিষেকে হ্যাটট্রিক পেলেন অস্ট্রেলিয়ার নাথান এলিস।