চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে আগামী মাসে সাক্ষাৎ করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল সোমবার ট্রাম্প নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
দুই দেশের বাণিজ্যযুদ্ধ জোরদার হওয়ার মধ্যে ট্রাম্পের কাছ থেকে এই ঘোষণা এল।
চার দিন আগে চীনা পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। পাল্টা জবাবে চীনও সমপরিমাণ মার্কিন পণ্যের ওপর দ্বিগুণ হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়।
গত শুক্রবারে প্রায় ২০ হাজার কোটি ডলার সমমূল্যের চীনা পণ্যে শুল্কের হার দ্বিগুণ করে যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে চীন বলেছে, ১ জুন থেকে তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হওয়া প্রায় ৬ হাজার কোটি ডলার পণ্যে শুল্ক হার বাড়াবে।
গত মাসের শেষ থেকে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা ফের বাড়ে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে।
গতকাল বিশ্ব পুঁজিবাজারে দর কমে প্রায় ১ দশমিক ৯ শতাংশ। গত পাঁচ মাসের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় দরপতন।
গত ডিসেম্বরের পর থেকে এই প্রথম গতকাল চীনের মুদ্রা ইউয়ানের দর সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে আসে। তেলের বাজারেও দেখা যায় অস্থিরতা।
চীনের পাল্টা পদক্ষেপের বিষয়ে তাৎক্ষণিক মন্তব্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, চীনের এমন প্রতিহিংসাপরায়ণ হওয়া উচিত হবে না। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।
ট্রাম্প বলেন, বহু বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নানা সুবিধা নিয়েছে চীন। শুল্কের হার বাড়ানোর পর চীনা পণ্যগুলো না নিয়ে অন্য উৎস থেকে তা কেনার জন্য মার্কিন ভোক্তাদের আহ্বান জানান তিনি।
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির অফিস জানিয়েছে, চীন থেকে আমদানি করা আরও ৩০ হাজার কোটি ডলার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের বিষয়ে আগামী মাসে একটি গণশুনানি করার পরিকল্পনা করছে তারা। এবার মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ শুল্কের আওতায় আনা হবে। তবে ওষুধ বাদ দেওয়া হতে পারে।
গতকাল হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প বলেন, আগামী জুনে জি-২০ সম্মেলনে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘সাক্ষাতে হয়তো কিছু একটা হবে। আমরা সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছি। আপনারা জানেন, জুনে জাপানে জি-২০ সম্মেলন আছে। সেখানে দেখা হবে। একটা ফলপ্রসূ বৈঠক হবে বলে আমি মনে করি।’
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দাবি করে আসছেন, চীনের সঙ্গে তাঁর দেশের যে বাণিজ্য ঘাটতি, সে জন্য চীনই দায়ী। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মগুলো থেকে চীনের প্রতিষ্ঠানগুলো বুদ্ধিবৃত্তি সম্পদ চুরি করছে বলেও অভিযোগ তাঁর। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেন তিনি। পরে চীনও পাল্টা শুল্ক আরোপ করে। পরে আলোচনার জন্য কিছুটা সময় নেয় দুই দেশ। তবে সম্প্রতি ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ এনে আবার শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। চীনের দিক থেকেও পাল্টা জবাব আসে।