মেহরেপুরে গাংনী উত্তরপাড়ায় গাংনী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে আলোচিত ও টাকার ব্যাংক খ্যাত দুই সুদ কারবারি আবু হানিফ (৪০) ও আনারুল ইসলামকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সুদ ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম গাংনির উত্তর পাড়ার মৃত ইউনুস আলীর ছেলে ও আবু হানিফ একই পাড়ার ছমিরুদ্দীনের ছেলে। এসময় আরও এক সুদ কারবারী পালিয়ে যায়। পুলিশ তাকে আটকের চেস্টা করছে।
শনিবার সন্ধা সাড়ে ৭ টার দিকে গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে অভিধান পরিচালিত হয়। সুদ ব্যবসায়ী আবু হানিফের ছয়তলা বিশিষ্ট বাড়িতে আধা ঘন্টা যাবত তল্লাশী চালায় পুলিশ। সুদ কারবারের কাজে ব্যবহৃত ব্লাঙ্ক চেক, সাদা স্ট্যাম্প ও ৫টি মোটর সাইকেল জব্দ করেছে পুলিশ। এসব ব্ল্যাংক চেক ও স্ট্যাম্প জিম্মা রেখে অবৈধভাবে সুদ ব্যবসার মাধ্যমে হাজারো মানুষকে পথে বসিয়েছে এসব সুদ ব্যবসায়ীরা। এমন অভিযোগে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় অভিযান পরিচালনাকারি পুলিশের টিম।
এদিকে গাংনীর আলোচিত দুই সুদ ব্যবসায়ীর বাড়িতে পুলিশের অভিযানের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে শত শত উৎসব জনতা আবু হানিফের ছয়তলা বাড়ির নিচে ভিড় জমাই এবং এই সুদ ব্যবসায়ীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেন। একই সাথে উপস্থিত জনতা গাংনী থানা পুলিশের এই অভিযানকে স্বাগত জানান এবং শুধু গাংনী শহর নয়,বিভিন্ন গ্রামেও সমবায় সমিতির কথিত রেজিস্ট্রেশন নিয়ে যারা দেদারছে সুদ ব্যবসা চালিয় আসছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গাংনী থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রাখতে আহ্বান জানান।
স্থানীয়রা জানান, সুদ কারবারী অবু হানিফ একসময় ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। সে সময় আর্থিক দৈন্যতার মধ্যদিয়ে চলতো আবু হানিফের সংসার। পরে জড়িয়ে পড়ে সুদ কারবারীর সাথে। সুদের টাকায় এখন সে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছেন। তার সুদের খপ্পরে পড়ে কয়েক হাজার পরিবার নিঃস্ব হলেও আবু হানিফ ও আনারুল গড়েছেন টাকার পাহাড়। সুদ ব্যবসা করে আবু হানিফ নির্মাণ করেছেন গাংনীতে ছয় তলা বাড়ি। এলাকাবাসী তাকে উত্তরা ব্যাংক নামে চেনে ও জানে। শুধু আনারুল ইসলাম ও আবু হানিফ নয় , গাংনী শহরের অনেক নামিদামি প্রভাবশালী ব্যক্তিও সুদ ব্যবসার সাথে জড়িত বলে জনান স্থানীয়রা।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিপদে পড়া মানুষ তাদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে সুদের জালে আটকে যায়। টাকা নেওয়ার সময় ব্লাঙ্ক চেক ও সাদা স্ট্যাম্পে সই করে নেওয়া হয়। টাকা দেওয়ার পর থেকে সুদ ব্যবসায়ীদের জুলুমের শিকার হন অনেকে। চড়া সুদের অর্থ আদায় করতে অনেকের নামে চেক ডিজঅনার মামলা করে ফাঁসিয়েছে গ্রেফতারকৃত সুদ ব্যবসাযীরা। সুদের জালে আটকিয়ে অনেক পরিবার আজ এলাকাছাড়া হয়ে বিভিন্ন শহরে পালিয়ে মানবতার জীবন যাপন করছে। অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি বিক্রি করে সুদের টাকা পরিশোধ করে ওরে হায় পাইনি। অবশেষে ভুক্তভোগী পরিবারগুলির নামে মিথ্যা চেক বিজয়ার মামলা করে হয়রানি করছে। সুদ ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়া নিঃস্ব
ভুক্তভোগীদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নামে মামলা দায়ের পুর্বক আদালতে সোপর্দ করা হবে বলেও জানান ওসি।