এক বিচারপতির ছেলের আইনজীবী সনদ নিয়ে রিট মামলায় ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানকে জরিমানা করায় প্রতিকী প্রতিবাদ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ আইনজীবীরা। প্রতিবাদস্বরূপ জরিমানার দুইশত টাকা পরিশোধ করতে প্রতিকী হিসেবে ১ টাকা করে প্রদান করছেন তারা।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সভাপতির কক্ষের সামনে রাখা বক্সে সাধারণ আইনজীবীরা টাকা রেখে প্রতিকী প্রতিবাদ করেন। যে কবিতা ফেসবুকে শেয়ার করার জন্য আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়েছে, বক্সের গায়ে সেই কবিতা সেঁটে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবাদ করতে আসা ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেন, আমাদের দুইজন আইনজীবীকে সুকুমার রায়ের কবিতা ও একটি সিনেমার ঘটনা ফেসবুকে লেখার জন্য কনটেম্পট ইস্যু করা হয়েছে এবং তাদেরকে একশ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আমরা মনে করি এটা শুধু দুই আইনজীবীকে করা হয়নি। আমাদের সুপ্রিম কোর্টের সব আইনজীবীকে এ জরিমানা করা হয়েছে। এ কারণে প্রতিকী প্রতিবাদ করছি।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্য নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট মহসিন কবির রকি বলেন, আমরা মনে করি এই জরিমানা দুই আইনজীবীকে করা হয়নি, সবাইকে করা হয়েছে। তাই দায়ভার আমরা নিজের কাঁধে নিয়েছি। প্রতিবাদস্বরূপ প্রতিকীভাবে এক টাকা প্রদান করেছি। যে টাকা উঠবে সেখানে থেকে আমরা জরিমানা প্রদান করবো।
সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নুসরাত জাহান বলেন, জাজমেন্ট নিয়ে আমাদের কোন বক্তব্য নেই। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, যারা এটার পিটিশনার ছিল তারা ফেসবুকে একটা কবিতা শেয়ার করেছিল। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়েছে। এই মামলায় তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে। এটা খারাপ লেগেছে। ওদের সাপোর্ট করার জন্য প্রতিকী হিসেবে এক টাকা করে প্রদান করছি।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক কার্য নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট কুমার দেবুল দে বলেন, আমরা দুই আইনজীবীর পক্ষে আছি। মামলা করে যদি আদালতের সময় নস্ট হয়, তাহলে তো মামলাই করা যাবে না।
এর আগে গতকাল আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ এক বিচারপতির ছেলে ব্যারিস্টার জুম্মন সিদ্দিকীকে সরাসরি হাই কোর্টের আইনজীবী হিসেবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের গেজেট প্রকাশ বৈধ বলে রায় ঘোষণা করেন হাই কোর্ট। একইসঙ্গে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানকে একশত টাকা করে জরিমানা করেন আদালত। এ ধরনের রিট করে আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য এ জরিমানা করা হয়।
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাই কোর্টের আইনজীবী হিসেবে জারি করা গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত করেন হাই কোর্ট। একইসঙ্গে সরাসরি হাই কোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
গত বছরের ২১ নভেম্বর আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় বার বার অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরও হাই কোর্টের এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাই কোর্টের আইনজীবী ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়। আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসান বাদী হয়ে এ রিট দায়ের করেন।