অ্যাডভোকেট না হয়েও নামের পূর্বে অ্যাডভোকেট লিখা, জমি অন্যের জেনেও জাল দলিল তৈরী করে তা নামজারি করাসহ নানা তথ্য প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হওয়ায় তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কুষ্টিয়ার পরিদর্শক মো: রবিউল আলম এসব তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে ৫ জনকে অভিযুক্ত করা হলেও মামলার আসামী সাহারবানু মারা যাওয়ায় তাকে মামলার দায় থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্যও সুপারিস করা হয়েছে।
এ মামলায় আসামি করা হয়েছে মীর কামরুজ্জামান ওরফে লেলিন, তার ভাই আব্দুর রহিম (৬০), আব্দুল করিম (৬২) ও বোন নিলুফা ইয়াসমীন (৫১)।
এ মামলার প্রধান আসামি মীর কামরুজ্জামান লেলিন এর বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১৯৩/১৯৬/৪০৬/৪২০/৪০১৭/৪১৯/৪৬৪/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।
এছাড়া ভাই আব্দুল করিম, আব্দুর রহিম ও নিলুফা ইয়াসমীনের বিরুদ্ধে পিতা এবং স্বামীর সম্পত্তি নয়, জেনেও অপরের সম্পত্তি তার পিতার সম্পত্তি হিসেবে জালিয়াতি পূর্বক সৃজন করে তা সঠিক হিসেবে ব্যাবহার করে জাল দলিল তৈরী করা ও তা নামজারি করায় তাদের বিরুদ্ধে পেনাল কোর্ডের ১৯৩/১৯৬/৪০৬/৪২০/৪১৭/৪১৯/৪৬৪/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৩৪ ধারায় প্রাথমিকভাবে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে বলে তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গাংনী উপজেলার তেরাইল গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে কামরুজ্জামান লেলিন, তার ভাই আব্দুল করিম, আব্দুর রহিম ও বোন নিলুফা ইয়াসমীন একই গ্রামের মেম্বর আজগর আলী, আব্দুল মান্নান ও লুৎফর রহমান শাহ’র ১৫ শতক জমি জাল দলিল করে রেজিস্ট্রি করে নেন মীর কামরুজ্জামান। এই জমি শুধু জাল করে রেজিস্ট্রি করেই ক্ষান্ত হননি খারিজ করে নেন। জমির দাগ নং ৪৪৪৪ ও ৪৪৫০, যার দলিল নং ৯০৯৩/১৪।
এঘটনায় মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকায় সরকার,“ প্রতিবেশী, আপন ভাই বাদ যায়নি কেউ মীর কারুজ্জামানের হাত থেকে, প্রতারনায় ছুঁয়েছেন আসামন” শিরোনামে বিগত ১২/০৪/২০২২ ইং তারিখে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর মেহেরপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এস এম শরিয়ত উল্লাহ স্বপ্রণোদিত মামলা করেন। মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। প্রতিবেদনে মীর কামরুজ্জামান ও তার দুই ভাই আব্দুর রহিম, আব্দুল করিম ও বোন নিলুফা ইয়াসমীনকে আসামি করা হয়। তার মাকেও এই মামলায় আসামি করা হয়েছিল। তার মা মারা যাওয়ায় মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মীর কামরুজ্জামান লেলিন নিজেকে কখনো হাইকোর্টের আইনজীবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিকসহ নানা ভূয়াঁ পরিচয় দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন। মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকায় তাকে নিয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত কামরুজ্জামান লেলিন গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছেন।