২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত পিইসি পরীক্ষায় নবিননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মিজান আহমেদ নামের একজন মাত্র পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করলেও সে ফেল করে। এনিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয় পুরো মেহেরপুরে। ২ জানুয়ারি মেহেরপুর প্রতিদিন এ প্রধান শিরোনাম হলে বিষয়টি নিয়ে আরো বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবহেলার দায়ে।
বিদ্যালটিতে প্রধান শিক্ষকসহ ৪জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে একজন শিক্ষক পিটিআইয়ে প্রশিক্ষণে থাকায় প্রধান শিক্ষকসহ বাকি তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম, সহকারি শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন ও ইয়াসমিন আক্তারের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে।
মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা মহা.ফজলে রহমান স্বাক্ষরিত তিনটি পৃথক স্মারকে এ মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা-২০১৯ এ ওই বিদ্যালয় হতে এক জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহ করে এবং সে অকৃতকার্য হয়। ওই শিক্ষকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবহেলা করায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(খ) ধারা মোতাবেক অসাদাচারণের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ওই তিন শিক্ষককে কেন চাকরি হতে বরখাস্ত বা অন্য কোন উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা হবে না তা ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে জবাবের সাথে ব্যক্তিগত শুনানি দিতে চানকিনা উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মেহেরপুর সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী নবিননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। যে গ্রামটিতে মাত্র ৩৫ পরিবারের বসবাস। সেখানে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায় করে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা করা হচ্ছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে নবিননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সব মিলিয়ে মাত্র ২৯ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে ৫ম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিল মিজান অঅহমেদ নামের ওই শিক্ষার্থী। অন্যান্য শ্রেণীর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে ৫ জন, প্রথম শ্রেণীতে ৬জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ৬ জন, তৃতিয় শ্রেণীতে ৬ জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
বিধি মোতাবেক ৪০ জন শিক্ষার্থীর স্থলে একজন করে শিক্ষক থাকার কথা। অথচ মাত্র ২৯ জন শিক্ষার্থীর জন্য ওই প্রতিষ্ঠানের রয়েছেন চার জন শিক্ষক।
ওই সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, অনেক চেষ্টা করেও আমরা ওই শিক্ষার্থীতে পাশ করাতে পারিনি। মিজান আহেমদ নামের ওই শিক্ষার্থী শারিরীক ও মানসিক ভাবে খুবই দুর্বল।
মেপ্র/ইএম
আরো পড়ুন:বিআরটিএ অফিসের চিত্র: নিজের লোকের কাছে আড়াই, অন্য কেউ হলে তিন হাজার