সৌদি আরবে করোনাভাইরাসে বাংলাদেশি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। দূতাবাসের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশটি ৩ হাজার ৭১৭ জন বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটিতে করোনায় প্রাণ নিয়েছে ৫৫ বাংলাদেশির।
গত ২ মার্চ থেকে সৌদি আরবে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা শনাক্ত শুরু করে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৯৩ জন বিদেশি এবং সৌদি নাগরিকের করোনাভাইরাস টেস্ট করা হয়েছে।
সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ৬৫৬ জন। প্রাণহানি হয়েছে ১৯১ জনের এবং সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছে ৪৪৭৬ জন। আক্রান্তের মধ্যে ৮৫ শতাংশ বিদেশি এবং ১৫ শতাংশ সৌদি নাগরিক বলে জানা গেছে।
এদিকে, আগামী ১৩ মে পর্যন্ত সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল এবং শপিং মল খুলে দেয়া হয়েছে। শুরুর দিকে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা একদিন কম একদিন বেশি হলেও গত ১৬ এপ্রিল থেকে আক্রান্তের সংখ্যা উর্ধ্বমুখি। প্রতিদিনই এক দেড়শ মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে সুস্থ হওয়ার সংখ্যাও অনেক বেশি।
সৌদিতে আক্রান্তের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে মক্কা। শহরটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ৫১১ জন, রিয়াদে ৪ হাজার ৯২২ জন, জেদ্দায় ৪ হাজার ৬৪৮ জন, মদিনায় ৪ হাজার ৬৪৩ জন, দাম্মামে ১ হাজার ৯০৪ জন, হুফুফে ১ হাজার ৩১৯ জন, জুবাইলে ১ হাজার ৭৭ জন। এছাড়া অন্যান্য শহরেও আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে দূতাবাসের সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত বিমান চলাচল বন্ধ, স্থানীয় অফিস-আদালত বন্ধ, লাশ সংরক্ষণে হিমঘরে স্থান সংকুলান না হওয়ায় এবং অন্যন্য নানা কারণে সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, বর্তমানে বাংলাদেশি কর্মীদের লাশ বাংলাদেশে প্রেরণ করা সম্ভব হবে না। তাই সব মরদেহ স্থানীয়ভাবে সৌদি আরবে দাফনের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জুবাইল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে নতুন নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি এলাকার পুলিশ/ট্রাফিক, হাসপাতাল এবং গভর্নর অফিসের সমন্বয়ে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা ৩-৭ দিনের মধ্যে পুরোনো যে কোনো লাশ দাফন করতে পারবে।
মৃতের পরিবার দাফনের অনুমতি না দিলে দূতাবাস এনওসি (অনাপত্তি পত্র) ইস্যু করে না। আর এনওসি ইস্যু না হলে মৃত্যু সনদসহ অন্যন্য কাগজপত্র ইস্যু হবে না। এনওসি ও অন্যন্য কাগজপত্র ঢাকায় প্রবাসী কল্যাণ বোর্ডে জমা দিতে না পারলে পূর্বঘোষিত এককালীন সাহায্য ৩ লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে- এমন নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না।
এমতাবস্থায় বিভিন্ন কারণে সৌদিতে মারা যাওয়া প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের লাশ স্থানীয়ভাবে দাফন করার অনুমতি দিতে মৃতদের পরিবারের প্রতি আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস রিয়াদ।
সূত্র-বাংলাদেশ প্রতিদিন