মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়নের ভোমরদাহ গ্রামে শহীদ শেখ রাসেল ফাউন্ডেশনের নামে ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে এলাকার বেকার যুবকদের কাছে থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে লিটন নামের এক প্রতারক। প্রতারিত অনেকেই টাকা ফেরত চেয়ে থানায় মামলা করেছে। অনেকেই রয়েছে প্রতারক লিটনের খোঁজে। টাকা ফেরত চেয়ে প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা করলে উল্টো করে ভুক্তভোগীদের আদালতে মামলা করে হয়রানী করার চেষ্টা করছে ওই যুবক। লিটনের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই হয়েছেন সর্বশান্ত।
জানা গেছে, গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের শিরাজুল ইসলামের ছেলে লিটন হোসেন উপজেলার সাহারবাটি ইউনিয়নের ভোমরদাহ গ্রামের শহীদ শেখ রাসেল স্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে নিজেকে বিদ্যালয়ের পরিচালক প্রধান হিসেবে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অনেকেই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পত্র দেন স্থানীয় ববিতাসহ বেশ কয়েকজনকে। পরে দেখেন তাদের নিয়োগপত্র ভুয়া। ভুক্তভোগী ববিতা গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করলে নির্বাহী অফিসার বিষয়টি থানায় মামলা করতে পরমর্শ দিলে গাংনী থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে, শেখ রাসেল স্মৃতি ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোমরদাহ গ্রামের মহম্মদ আলীর স্ত্রী ববিতা খাতুনকে প্রধান শিক্ষক পদে চাকুরি দেবার কথা বলে পাঁচ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ভুয়া নিয়োগ পত্র প্রদান করেন। উক্ত নিয়োগ পত্রে শেখ রাসেল স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা শেখ মামুন, শেখ রাসেল স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রিয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রকৌঃ মোঃ মুনিরুল ইসলাম এর নামের ভুয়া স্বাক্ষর করেন এবং উক্ত ব্যক্তিদের সীল ব্যববহার করেন। প্রতারক লিটন শেখ রাসেল স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি ও বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পত্রে স্বাক্ষর করে ববিতা নামের নারীকে নিয়োগ পত্র দেন। পরে বিষয়টি জানতে পেরে প্রদানকৃত পাঁচ লাখ টাকা ফেরত চাইলে আজকাল করে ঘরিয়ে নিয়ে বেড়ায়।
পরে কয়েকবার গ্রাম্য সালিশের জন্য ডাকা হলেও লিটন সালিশে উপস্থিত হয়না। উপরন্ত আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, লিটন মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামের বেকার যুবকদের বিদেশ পাঠানোর কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে কয়েকবছর আত্নগোপনে থাকে। কয়েকবছর পর এলাকায় ফিরে এলে প্রতারিত কয়েকজন মেহেরপুর আদালতে মামলা করেন। মামলায় তার পিতা শিরাজুল ইসলাম হাজত খেটে জামিনে আছেন। পাওনাদারদের ভয়ে লিটন দুই বছর যাবত ভোমরদাহ গ্রামের সাত্তার বিশ্বাস নামের খালুর বাড়িতে বসবাস করেন।
প্রতারিত হয়ে টাকা ফেরত চাইলে লিটন আলী বাদি হয়ে মোহাম্মদ আলীর নামে মেহেরপুর আদালতে একটি মিথা মামলা দায়ের করেন। সিআর মামলা নং ২৪২/২০২১। একদিকে পাঁচ লক্ষ টাকা অন্যদিকে লিটনের দায়েরকৃত মামলায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী ও তার পরিবার।
লিটন সব বিষয় অস্বিকার করে বলেন, আমি করো সাথে টাকা গ্রহন করিনি। আমার নামে মিথ্যা মামলা বা অভিযোগ করা হয়েছে।