মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে প্রাইভেটকার ভ্যান ও মোটরসাইকেল ত্রি-মুখি সংঘর্ষে এক ব্যাংক কর্মকর্তা, শিশুসহ ৩ জন নিহত ও অন্তত ২ জন আহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, সদর উজলপুর গ্রামের হাসান মোল্লায় ছেলে এনআরবিসি ব্যাংকের রুপনগর ব্রাঞ্জের অফিসার আক্তারুজ্জামান ওরফে শোভন, তার অপর বন্ধু মেহেরপুর সদর উপজেলার বাড়িবাঁকা গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ছেলে আল ইমরান, গাংনী উপজেলার ধানখোলা গ্রামের ভ্যানচালক আলী হাসানের ছেলে শিশু জুবায়ের হাসান।
এঘটনায় আহত হয়েছেন নিহত জুবায়ের হোসেনের পিতা ভ্যানচালক আলী হাসান, প্রাইভেট কার চালক পলাশ হোসেন।
আজ সোমবার বিকেলে ৫ টার দিকে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো কার্যালয়ের সামনে এই সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটে।
অপর দুর্ঘটনাটি ঘটে গত রবিবার সন্ধ্যায় ধানখোলা ইউনিয়নের ভাটপাড়া-কচুইখালী সড়কে মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের মধ্যে সংঘর্ষে গাংনী উপজেলার কসবা গ্রামের শাহীন আলীর ছেলে স্কুল ছাত্র জাভেদ আলী নিহত হয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মেজবাহ উদ্দিন এবং গাংনী থানার ওসি বানী ইসরাইল।
জানা গেছে, প্রাইভেট কার চালক পলাশ হোসেন বেপরোয়া গতিতে আমঝুপি থেকে মেহেরপুরের দিকে আসছিলেন। এসময় ভ্যানচালক আলী হাসান তার পরিবারের লোকজন নিয়ে ভ্যানযোগে আমঝুপির দিকে যাচ্ছিলেন। প্রাইভেট চালক প্রথমে পাখিভ্যানের সাথে সজোরে ধাক্কা মারলে ভ্যানের সকল যাত্রী রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে প্রাইভেট কারটি মোটরাসাইকেলকেও ধাক্কা দেই। এতে মোটরসাইকেলের দুই আরোহী আক্তারুজ্জামান শোভন ও তার বন্ধু আল ইমরান রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে মারাত্বক আহত হন।
খবর পেয়ে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স তাদেরকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিলে ব্যাংক কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান মারা যান। এছাড়া অবস্থার অবনতি হওয়ায় আল ইমরানকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ও জুবাইয়ের হাসানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। রাজশাহীতে নেওয়ার পথে সন্ধ্যার দিকে পাবনার মধ্যে শিশু জুবায়ের হোসেন মারা যান। আল ইমরান রাত ৯ টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান। এই ঘটনায় আহত ভ্যানচালক আলী হাসান বর্তমানে মেহেরপুর ২৫০ শয্যার বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে, প্রাইভেট চালক পলাশ স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় গাংনী উপজেলার কসবা-কছুইখালি রাস্তায় মোটরসাইকেল ও ভ্যানের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষে হলে মোটরসাইকেল চালক কসবা গ্রামের শাহীন আলীর ছেলে স্কুল ছাত্র জাভেদ আলী মারাত্বক আহত হন। আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গাংনী ও পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। ঢাকায় নেওয়ার পথে সোমবার ভোররাতের দিকে মারা যায় স্কুল ছাত্র জাভেদ আলী।
এর আগে গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় গাংনী-কাথুলি সড়কের চৌগাছার আদুর নাবিল ফার্নিসাসের সামনে মোটরসাইকেল ও আলগামনের মুখোমুখি সংঘর্ষে সাগর মিয়া (২৪) নামের এক সৌদি প্রবাস ফেরত নিহত হয়েছেন। সাগর মিয়া গাংনী থেকে তার নিজ গ্রাম ভাটপাড়াতে ফিরছিলেন। নাবিল ফার্নিসাসের নিকট পৌছানো মাত্র বিপরীত থেকে আসা একটি আলগামনের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে মোটরসাইকেলটি দুমড়ে মুছড়ে যায়। এসময় গরুতর আহত সাগর মিয়াকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃতু ঘোষণা করেন।
এনিয়ে গত এক সপ্তাহে ব্যাবধানে মেহেরপুর জেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত ও অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন।