ডেঙ্গুর কাছে পরাজিত এক অদম্য মেধাবী যমুনা খাতুন অবশেষে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলো না ফেরার দেশে। আর সেই সাথে ভেঙ্গে চুরমার করে দিল দিন মজুর দরিদ্র পিতা মাতার সব স্বপ্ন।
গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া গ্রামের দিন মজুর আমিরুল ইসলামের মেয়ে ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বি, এস, সি নার্সিং এঁর ছাত্রী যমুনা খাতুন সম্প্রতি ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েও ওঠেন। ডেঙ্গু পরবর্তি সময়ে তার শরীরে দেখা দেয় নানা উপসর্গ। এক পর্যায়ে আবারও অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। কিছুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর এক পর্যায়ে সব চিকিৎসা উপক্ষো করে গতকাল মঙ্গলবার সকালে চলে যান না ফেরার দেশে।
যমুনা খাতুনের মা সুখি খাতুন বলেন, দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে আমার সংসার চলে। চরম অভাব বলতে যেটা বোঝায় আমার সংসারে আছে। অভাবের মধ্যে দিয়েই চলে দিনাতিপাত। এত কিছুর মধ্য দিয়েই মেয়ে যমুনার অদম্য ইচ্ছায় এস এস সি, এবং এইচ এস সি তে কৃতিক্তের সাথে জি, পি, এ ফাইভ পেযে উত্তীর্ন হয়। ২০২২ সালে মেধা তালিকায় ১৩তম স্থান পেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বি, এস, সি নার্সিং এ ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই। তখন থেকেই যমুনাকে নিয়ে আমাদের স্বপ্ন বেড়ে যায়।
প্রতিবেশী এনামুল হক এনাম বলেন, আমার প্রতিবেশী হওয়ায় তাদের পরিবারের আর্থিক দৈন্যতার কথা আমার সাথে সবিই শেয়ার করতেন তার বাবা মা। আমিও তাদের সাহষ যোগাতাম। যমুনা খাতুন তার বাবা মাকে বলতেন তোমরা আর কয়েকটি বছর ধৈর্য ধরো। আমি নার্সিং বিএসসিতেও ভাল রেজাল্ট করবো। তোমাদের দু:খ কষ্ট সব শেষ হয়ে যাবে। পিতা মাতাও আশায় বুক বেধে ছিল। কিন্তু স্বর্বনাশা ডেঙ্গু তাদের সব আশা ভেঙ্গে চুরমার করে দিল।
ঢাকা থেকে আসা যমুনা খাতুনের বান্ধবী সাহারা খাতুন বলেন, যমুনা আমাদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিল। তাকে সবাই খুব ভাল বাসতো। তার এই অকালে চলে যাওয়া আমাদের ক্লাসের সবাই শোকার্ত হয়ে পড়েছে।
এদিকে যমুনার লাশ এলাকায় এসে পৌছালে প্রতিবেশীদের মাঝে নেমে আসে শোকের ছাঁয়া। গতকাল মঙ্গলবার দিনগত রাত ১১ টার দিকে হিজলবাড়িয়া গ্রামের কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।