স্বামী প্রধান শিক্ষক তাই দিনের পর দিন স্কুলে অনিয়মিত সহকারী শিক্ষক আনোয়ারা খাতুন। স্কুলে তার দেখা মিলে শুধুমাত্র অনুষ্ঠানে। অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক স্বামীর সাহায্যে বাড়িতে বসে নিয়মিত শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও করেন। বাড়িতে বসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে এভাবেই বিদ্যালয়ে শতভাগ উপস্থিতি দেখিয়ে বেতন তুলে নিচ্ছেন তিনি।
ঘটনাটি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার এইচ এস কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনোয়ারা খাতুনের। তাঁর স্বামী ওই একই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান। স্বামী প্রধান শিক্ষক হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এমন অনিয়ম দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন আনোয়ারা খাতুন। স্কুলের ক্লাস রুটিনে সপ্তাহে মাত্র দুটি ক্লাসে তার নাম থাকলেও সেসব ক্লাস নিচ্ছে ওই স্কুলের অন্য শিক্ষকরা। এ নিয়ে অন্য শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও আনোয়ারা খাতুনের স্বামী আসাদুজ্জামান প্রধান শিক্ষক হওয়ায় তাদের দাপটে মুখ খুলতে ভয় পায় শিক্ষকরা।
আর শিক্ষার্থীরা আনোয়ারা খাতুন নামের একজন শিক্ষকের কথা জানলেও তাকে শেষ কবে দেখেছে তা সঠিক ভাবে মনে করতে পারেনা। অষ্টম শ্রেণির একজন ছাত্রী জানান, আনোয়ারা ম্যাডাম ক্লাস সিক্সে আমাদের ক্লাস নিয়েছে কয়েকদিন তারপর তাকে স্কুলে আমরা সেভাবে দেখিনি।
নবম শ্রেণির একজন ছাত্র জানান, আনোয়ারা ম্যাডাম শুধুমাত্র অনুষ্ঠানে আসেন। তিনি আমাদের কোন ক্লাসও নেয়না।
দশম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, তিনি মাঝেমধ্যে স্কুলে আসেন কোন প্রয়োজন হলে। আনোয়ারা ম্যাডাম নিয়মিত স্কুলে আসেনা কেন এরকম কথা হলে হেডস্যার বলেন অসুস্থার জন্য ছুটিতে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তার অনিয়মিত স্কুলে আসা নিয়ে কোন ছাত্রছাত্রী মুখ খুললেই তার জন্য কঠিন শাস্তি হবে এরকম ভয়ে প্রকাশ্য আমরা কেউ বলতেও পারিনা।
স্কুলে না আসার বিষয়ে জানতে আনোয়ারা খাতুনের সঙ্গে মুঠোফোনে দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন অফিস থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক ও আনোয়ারা খাতুনের স্বামী আসাদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে টিফিন পিরিয়ডে ক্লাসে থাকার অজুহাতে ফোন কেটে দেন তিনি। পরে দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন অফিস থেকে তাকেও একাধিকবার ফোন ও পরিচয় দিয়ে বিষয়টি জানতে চেয়ে এসএমএস পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত রয়েছি এবং অভিযোগ শুনতে শুনতে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। সরকারের বেতন নিবে সে কিন্তু স্কুলে যাবেনা এটা কোন কথার মধ্যে পড়ে না। আমিও জেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি বলবো।
মেহেরপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: আব্বাস উদ্দিন বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে আমি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।