বিমান বাহিনীর কোচ হেদায়েতুল ইসলাম রাজীব চোখ মুছতে মুছতে বললেন, ‘অনেক কষ্টের পর ফল পেলাম’। হকির ইতিহাসে প্রথম বার হকি ফেডারেশনের কোনো টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলো। এমন আনন্দের দিনে কোচ রাজীবের চোখ ভিজল। তার নির্দেশনায় একেবারে তরুণ একটা দল প্যারাগন গ্রুপ বিজয় দিবস হকির ফাইনাল খেলল জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া নৌবাহিনীর বিপক্ষে। বিমান বাহিনী ৫-৪ গোলে নৌবাহিনীকে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
দারুণ খেলেছে বিমান বাহিনী। নৌবাহিনী টানা ৫টা ফাইনাল খেলল। ২০২০ সালে বিজয় দিবস টুর্নামেন্টেও নৌবাহিনীর বিপক্ষে ফাইনাল খেলে রানার্সআপ হয়েছিল। সেবার কোচ রাজীব ছিলেন সোনালী ব্যাংকের। এরপর টানা তিন বছর বিমান বাহিনীর কোচ হয়ে খেলোয়াড়দের তৈরি করলেন। গতকাল সেই ফল পেলেন। ফেডারেশন কর্তারাও খুঁজলেন শেষবার কবে ফেডারেশন আয়োজিত টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বিমান বাহিনী? খুঁজে পেলেন না কর্মকর্তারা।
নৌবাহিনী শক্তিশালী দল। বিমান বাহিনী ততটা না। রোমান সরকার, ফরহাদ আহমেদ সিটুল, দ্বিন ইসলাম, চয়ন, রাসেল মাহমুদ জিমি, আশরাফুল ইসলাম, রাকিন শুভ, মাহবুব, মাইনুল ইসলাম, গোলরক্ষক অসীম গোপ, ফজলে হোসেন রাব্বীদের কাগজে কলমে নৌবাহিনী এগিয়ে ছিল। তাদের সামনে বিমান বাহিনীর অধিনায়ক রাজু আহমেদ তপু, তাসিন আলী, মেহেরাব হাসান সামিন, ওবায়দুল হোসেন জয়, মিঠু, জীবন, আজীজুল, সজীবুর রহমান, মেহেদী হাসান, সোহানুর রহমান সবুজ, রাকিবুল হাসানরা মাঠের লড়াইয়ে নেমেই ধুমধাম করে ২ গোল করে ফেলল নৌবাহিনীর পোস্টে।
মাওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে ওবায়দুল হাসান জয় রাকিবুল হাসানকে দিয়ে প্রথম গোল করালেন, এর পরই জয় রিভার্স হিটে দর্শনীয় গোল করেছেন। এ দুজন নৌবাহিনীর রক্ষণ তছনছ করে দিয়েছেন। রাকিবুল হাসান দারুণ খেলেছেন। এই তরুণের স্টিক ওয়ার্ক নৌবাহিনীর রক্ষণ কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল। হ্যাটট্রিক করেছেন রাকিবুল। অধিনায়ক সামিন গোল করেন। নৌবাহিনী একবার ৩-৩ স্কোর করলেও ম্যাচ জেতা হয়নি।
আশরাফুল, সিটুল, মাইনুল ইসলাম ও অধিনায়ত জিমি গোল করেন। সিটুল লাল কার্ড পেয়েছিলেন শেষ দিকে। নৌবাহিনীর দাবি তারা পেনাল্টি কর্নার পেয়েছিলেন, আম্পায়ার সেটি এড়িয়ে গেছেন। টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন সবুজ, রানার্সআপ দলের আশরাফুল ১১ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। পুরস্কার বিতরণ করেন বিমান বাহিনী প্রধান ও হকি ফেডারেশনের সভাপতি এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান।
সূত্র: ইত্তেফাক