হঠাৎ করেই বৃষ্টিতে ঝিনাইদহের মাঠের ঘাসে নাইট্রেট বেড়ে যাওয়ায় কয়েকটি গ্রামে দুই-তিন দিনের ব্যবধানে মারা গেছে অন্তত ১২টি গরু। এমন ঘটনায় কৃষক ও খামারিদের মাঝে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। বিষয়টির তদন্তে মাঠে নেমেছে ঝিনাইদহ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মীরা। নমুনা পাঠানো হয়েছে ঢাকায়। মাঠে টানানো হয়েছে লাল পতাকা।
জেলাজুড়ে জারি করা হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। জানা গেছে, গত ৩ জুন শৈলকুপার চরধলহরা গ্রামের ভ্যানচালক আরশাদ মন্ডলের স্ত্রী লাইলী খাতুনের একটি মাত্র গাভি শ্বাসকষ্টে মারা যায়। এ নিয়ে নানা বিতর্ক শুরু হয়।
তার কান্নাকাটি দেখে বাড়িতে হাজির হয় প্রানী সম্পদ বিভাগের কর্মীরা। তদন্ত করে জানতে পারেন গরুকে খাওয়ানো হয়েছিলো বাড়ির পাশে বোনা গেমা ঘাস। এর আগে একই গ্রামের কৃষক রস্তম আলীর ৫টি গাভীর মধ্যে ৪টিই মারা যায় ১ ঘণ্টার ব্যবধানে।
খামার গড়ার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে যায় রস্তম আলীর। হেলেঞ্চা জাতীয় ঘাস খেয়ে পেটফুলে তাৎক্ষণিক মারা যায় ভুলুন্দিয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ৩টি, একই গ্রামের জামাল মোল্লার ১টি গরু। এভাবে শৈলকুপার বিভিন্ন গ্রামের কৃষক ও খামারীদের গরু মারা যাচ্ছে। এ অবস্থায় প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর বলছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বছরের এই সময়ে নাইট্রেট পয়জনের কারণে দু’একটি গরু মারা গেলেও, এবারে সে সংখ্যা বেশি। কৃষি গবেষকদের ধারণা, মূলত নাইট্রোজেন ভিত্তিক রায়াসনিক সারের মাধ্যমেই চুঁইয়ে ভূগর্ভস্থ পানিতে মিশছে নাইট্রেট। যদিও সর্বত্রই মূলত রাসায়নিক সারের মাধ্যমে চাষ চলে। এতে শুধু প্রািণকুল নয়, মানবকুলও ঝুকির মধ্যে পড়তে পারে।
শৈলকুপার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মামুন খান জানান, দেখে যেটা মনে হয়েছে এটা নাইট্রেট পয়জন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলাপ করে ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। সরকারি তথ্যমতে ঝিনাইদহ জেলায় ৬ লাখ গাভী, ৬ লাখ ছাগল, ১ লাখ ২৫ হাজার ভেড়া ও দেড় হাজার মহিষ রয়েছে।