ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে সামাজিক দ্বন্দ্বের জেরে সাবেক ও বর্তমান ইউপি সদস্যের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ২১ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত বর্তমান ইউপি সদস্য কুরবান (৪৮)সহ ৫ জনকে আটক করেছে হরিণাকুণ্ডু থানা পুলিশ।
আজ শনিবার (১৮মে ) সকালে উপজেলার কাপাশাটিয়া ইউনিয়নের পোলভাতুড়িয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে হরিণাকুণ্ডু থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন ওই এলাকার ইসরাইল হোসেনের ছেলে হাশেম কাজী (৩৫), হাশর কাজী (৩০), আব্দুলের ছেলে করিম (৫২), মক্কেলের ছেলে পানু (১৯), আনসার কাজীর ছেলে লতিফকাজী (৪২), আবু তালেবের ছেলে রাহুল (১৮), মৃত সিফাতের ছেলে আব্দুল গণি (৭০), সমশের কাজীর ছেলে নজরুল কাজী (৪৮) মৃত সোহরাবের ছেলে মধু (৪৬), বাসারেতের ছেলে শহিদুল (৫৫), মৃত মজিবারের ছেলে বিল্লাল এবং মিন্টু, বজলু (৪০), রেশমা (৩৫), জগেশ (২৮), রায়হান(৪২)সহ অজ্ঞাত আরো ১২ জন।
আহতদের মধ্যে ৯ জনকে উদ্ধার করে হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে ইসরাইল কাজীর ছেলে হাসেম কাজীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাকি ১১ জনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে বিল্লাল ও মিন্টুর অবস্থার অবনতি হলে তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত ১১মে উপজেলার পোলভাতুড়িয়া গ্রামের চেরাক আলী মন্ডলের ছেলে আজিবর রহমানের বাড়ির বৃষ্টির পানি প্রতিবেশী মশিউর কাজীর উঠান দিয়ে খালে বের করা নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয়পক্ষের ৭ জন আহত হয়েছিল। এ ঘটনায় থানায় মামলাও হয়েছে। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান উভয়পক্ষের সম্মতিতে বিষয়টি মীমাংসা করে। এর জের ধরে আজ শনিবার সকালে সাবেক মেম্বারের সমর্থক হাশেম কাজী ও তার ভাইয়েরা বাড়ির পার্শ্ববর্তী মাঠ এলাকায় ধান গোছানোর কাজ করতে গেলে প্রতিপক্ষ বর্তমান ইউপি সদস্য কুরবান মেম্বরের দুই ভাই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাবেক মেম্বরের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এসময় হাশেম কাজী ও হাসর কাজীকে দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। পরে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।এতে উভয় পক্ষের ২১ জন্য আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাথানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আহত মশিয়ারের সমর্থকরা এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত দৌলা ঝন্টু কে ইন্ধনদাতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তারা বলেন ইউপি চেয়ারম্যান ইচ্ছা করেই এই দ্বন্দ্ব জিইয়ে রেখেছেন। তিনি ইচ্ছা করেই কুরবান মেম্বরের দিয়ে এগুলো করিয়ে থাকেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শরাফত দৌলা ঝন্টু বলেন, কয়েকদিন আগে বৃষ্টির পানি বের করাকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে একটা ঝামেলা হয়। ওই ঘটনা নিয়ে আজ সকালে তারা দু’পক্ষই সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে অনেকে হতাহত হয়েছে। সবাইকে উদ্ধার করে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, দু’পক্ষের সংঘর্ষে অনেকে আহত হয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইউপি সদস্য কুরবান আলীসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও তিনি জানান।