ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলা আদর্শ আন্দুলীয়া গ্রামে সোনালী মুরগি খামারি আদর্শ পোল্ট্রি ফার্মে ভুল চিকিৎসা ও অতিরিক্ত ঔষধ প্রয়োগে ২৫ দিন বয়সী পাঁচশ সোনালী মুরগির বাচ্চা মারা গেছে।
কুলবাড়ীয়া বাজারের ঔষধ বিক্রেতা আন্দুলীয়া ফার্মেসী’র মালিক জাহিদ হোসেনকে দায়ী করে অভিযোগ তুলেছে খামারের মালিক আশরাফুল আলম বিপ্লব।
ভূক্তভোগী হৃদরোগে আক্রান্ত খামারী বিপ্লব অভিযোগ করে বলেন, জাহিদ অতিরিক্ত আইটেম ও ভুল ঔষধ দেওয়ায় আমার খামারের বাচ্চাগুলো মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে বাচ্চাদের পরিচর্যা করতে গিয়ে তিনি লক্ষ্য করলেন প্রায় ৭০ভাগ বাচ্চা চুন পাইখানা করছে, সন্ধ্যা নাগাদ তিনি কুলবাড়ীয়া বাজারে যান এবং আন্দুলীয়া ফার্মেসীর মালিক জাহিদ হোসেনের সাথে পরামর্শ করেন, তখন জাহিদ এলবিয়ন ল্যাবরোটারিজ এর ঔষধ সরবরাহকারী রফিকুল ইসলামের সাথে তার মোবাইল ফোনে কথা বলে ৬ আইটেমের ঔষধ দেন।
ঔষধ গুলো সিপটেক পাউডার (এক লিটার পানিতে ১গ্রাম), লিভো এল (এক লিটার পানিতে ১এম এল), ম্যাকম্যাক্স প্লাস সিরাপ (এক লিটার পানিতে ১ এমএল), ম্লি মক্স এল (তিন লিটার পানিতে ১বড়ি), এল মেট্রো ভেট ২গ্রাম (তিন লিটার পানিতে ১বড়ি) এল বিভিট বি ভেট (এক লিটার পানিতে ১ এমএল) এরকম ৬/৭ দফা ওষুধ দেন।
ঐ রাত থেকে ঔষুধ প্রয়োগ শুরু করেন বিপ্লব পরদিন সকাল থেকে মুরগির বাচ্চার মৃতু্যু শুরু হয়। এক পর্যায়ে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাড়ায় প্রায় পাঁচশর কাছাকাছি। খামারি বিপ্লব মরা বাচ্চা নিয়ে ঝিনাইদহ ভেটিরিনারী কলেজের পার টাইম লেকচারার ডাঃ শাওন এর সাথে সাক্ষাত করলে, ডাঃ শাওন বাচ্চার ময়নাতদন্ত করেন এবং ঔষধ এর ফর্দ্দদেখান যেখানে শুধু তিনি কড ভেট পউডার এক লিটার পানিতে ১ গ্রাম পাউডার ব্যবহারের কথা লিখেছেন।
বিপ্লব আরও জানান ডাঃ শাওন তাকে আরও জানিয়েছেন এই সামান্য ঘটনায় সিপটেক পাউডার ২০% ব্যবহার ঠিক হয়নি। তাছাড়া অতিরিক্ত ঔষধ ব্যবহারে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন।
এ ঘটনায় হরিণাকুণ্ডু উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মশিউর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সচারচার খামারীদের খামার গুলোতে বাচ্চা বা বড় মুরগি হর হামেশায় চুন পাইখানা করে থাকে এটা নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা এর জন্য হাই পাওয়ারের এতো আইটেমের ঔষধ প্রয়োগ ঠিক হয়নি। এ নিরাময়ে কড ভেট পাউডারই যথেষ্ট ছিল।
এ ঘটনায় আন্দুলীয়া ফার্মেসীর মালিক জাহিদ হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে ০১৯৫৫৬৯২২২১ নাম্বারে যোগাযোগ করলে বলেন, খামারি বিপ্লব গত মঙ্গলবার আমার কাছে আসেনি এবং আমার কাছথেকে ঔষধ কেনেনি।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারী ওর সাথে আগের সিপ্টের ঔষধ নেওয়ার হিসাব শেষ হয়েছে ওর কাছে আমার পাওনা ১৯৬৪২/- টাকা আগের সিপ্টের মুরগি বিক্রয় করার পরও আমার টাকা পরিশোধ করেনি। বিপ্লব সর্বশেষ ২ মার্চ আমার কাছথেকে এক বক্স মিমক্স এল নিয়েছিলো। এর পর থেকে সে আমার সাথে দেখা করেনা।
এ ঘটনায় সর্বসান্ত ভূক্তভোগী খামারি বিপ্লব এরকম ঘটনা আর কোন ঔষধ বিক্রেতা যেন ঘটাতে না পারে, এবং এ ঘটনায় আন্দুলীয়া ফার্মেসীর মালিক জাহিদ হোসেনের বিচারের দাবী জানিয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।