ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কাপাশহাটীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরফতদৌলা ঝন্টু ইউনিয়নের স্কুল কলেজ দখল করে বাবা, ভাই ও অনুসারিদের সভাপতি বানিয়ে কোটি টাকার উপরে নিয়োগ বাণিজ্য করেছে। ইউনিয়নে তার ভয়ে কথা বলারমত শাহস করতেন না কেউ। স্কুল, কলেজ হাট বাজার, বাউড় সবই ছিল তার দখলে। তিনি কখনো আওয়ামী লীগের এমপি, কখনো উপজেলা চেয়ারম্যান, কখনো দলীয় নেতাদের লাঠিয়াল বাহিনি হয়ে একাধিক মানুষের উপর হামলা ও মারধর করেছেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর একের পর এক সবাই মুখ খুলতে শুরু করেছে।
ঝন্টু চেয়ারম্যান তার ইউনিয়নেনর ঘোড়াগাছা লাল মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, ল্যাব সহকারী, অফিস সহায়ক, আয়া, নিরাপত্তা কর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও নৈশ প্রহরী নিয়োগ দিয়ে ৮২লক্ষ টাকা বাণিজ্য করেছে। গত ২০২২/২০২৩ সালে এই নিয়োগ সম্পন্ন করেণ। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক পদে শিল্পি খাতুনের নিকট থেকে ৪ লাখ, সহকারী প্রধান শিক্ষক মোহন কুমারের নিকট থেকে ১৫ লাখ, অফিস সহায়ক আকিমুলের নিকট থেকে ৯লাখ, ল্যাব সহকারী তানভিরের নিকট থেকে ১৪ লাখ, আয়া রুমানার নিকট থেকে ১০ লাখ, পরিচ্ছন্নতা কর্মী মুন্নার নিকট থেকে ৯লাখ, নিরাপত্তা কর্মী অচিন্তের নিকট থেকে ১১ লাখ ও নৈশ প্রহরী দুর্জয় এর নিকট থেকে ১০ লাখ ঘুষ নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া বাবা গোলাম রহমানকে ভাতুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি বানিয়ে ৩জন কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে ২২লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছে। এর মধ্যে অফিস সহায়ক শাহীন এর নিকট থেকে ৮লাখ, নিরাপত্তা কর্মী মানোয়ার হোসেন মন্টুর নিকট ৯লাখ এবং পরিচ্ছন্না কর্মী রাম কুমার বাশফোড়ের নিকট থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এছাড়াও ছোট ভাই এ্যাড. আশরাফুল ইসলামকে হাজী আরশাদ আলী কলেজের সভাপতি বানিয়ে নিজের ছেলেকে অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দিয়েছে আর অন্য দুই প্রার্থীর নিটে থেকে ২৩লাখ টাকা বাণিজ্য করেছে। তাদের মধ্যে তমাল হোসেনের নিকট থেকে ১৫ লাখ এবং আিশক রহমানের নিকট থেকে ৮লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছে। এছাড়া ইউনিয়নের অন্যান্য স্কুলেও প্রভাব একাধিক প্রার্থীর নিয়োগের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
ঘোড়াগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শিল্পি খাতুন বলেন, চেয়ারম্যান শরফতদৌলা ঝন্টু তার নিজের মত স্কুলের কমিটি গঠন করেছিলো । পরে নিয়োগ দিয়েছে। এতে আমার কোন হাত নেই। আমি প্রধান শিক্ষক বাধ্য হয়ে সব সময় সব কাজে স্বাক্ষর করেছি।
ভাতুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী ইউনুচ আলী বলেন, আমি বংশীয় লোক। আমি নিয়োগ দিয়ে কোন টাকা/ঘুষ নিইনি। মাত্র ৩ লক্ষ টাকা নিয়োগের খরচ বাবদ নেওয়া হয়েছিলো। নিয়োগের খরচের পর বাকী টাকা বিদ্যালয়ের রুম করা হয়েছে ও সভাপতির নিকটে আছে।
কাপাশহাটীয়া হাজী আরশাদ আলী ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকির হোসেন বলেন, সরকরী নিয়ম মাফিক নিয়োগ হয়েছে। বাকীটা সভাপতি জানেন।
কাপাশহাটীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরফতদৌলা ঝন্টু বলেন, টাকা পয়সা দিয়ে কাওকে চাকুরী দিই নি। এর কোন ভিত্তি নেই। এসব ভিত্তিহীন কথা।