প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে আসরে নেমেছে বিএনপি-জামাত ও তাদের সমমনা দলগুলো। তাদের কট্টর আন্দোলন ও আগুন সন্ত্রাসে উত্তপ্ত দেশ। অবাধ নির্বাচন কীভাবে হবে তা নিয়ে জবাব চেয়েছে আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য। এই প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা সরকারের ‘পাশে দাঁড়িয়ে’ কৌশলী বার্তা দিয়েছে ভারত।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ৈর মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, “ভারত বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান করে এবং সেদেশের জনগণই তাদের ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা অন্য কোনও দেশের নীতি নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।” বাগচি আরও বলেন, “ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহযোগী হিসাবে, আমরা তাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান করি এবং স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ এবং প্রগতিশীল জাতি গঠনে ঢাকার লক্ষ্যে আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।”
শেখ হাসিনা সরকারকে হঠাতে বিএনপি চতুর্থ দফায় অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে। রবিবার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত চলবে চতুর্থ দফার এই অবরোধ। বিএনপির এই আন্দোলনে সরাসরি সমর্থন দেয়নি আমেরিকা। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের দোষ-ত্রুটি খুঁজেই বেড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র বলে তোপ দেগেছে ঢাকা। এবার এই প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল ভারত।
অপরদিকে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে আমেরিকা। ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষ এবং দলের একাধিক নেতাকে গ্রেপ্তার কাণ্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশ বিষয়ক ও নিরাপত্তা নীতি সংক্রান্ত বিষয়ের শীর্ষ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেল বলেন, “বাংলাদেশে ৮ হাজারের বেশি বিরোধী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা সব পক্ষকে হিংসা থেকে বিরত থাকার আবেদন জানাচ্ছি।” বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলকে যুক্ত করে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া নিশ্চিত হোক, এমনটা চায় কানাডার হাউস অব কমন্সের ৮ সদস্য। নিজেদের এই প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে চিঠিও লিখেছেন।
বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আগামী নির্বাচনকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে। মনোনয়ন বাণিজ্যের জন্য হলেও তারা নির্বাচনে আসবে। তারেক জিয়া সেই সুযোগ নষ্ট করবেন না।”
বিএনপি-জামাতের ডাকা অবরোধ কর্মসূচিতে গত ১৩ দিনে রাজধানী ঢাকায় ৬৪টি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে ও ভাঙচুর করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে চতুর্থ দফায় অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি।’ ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি দাবি করেছে, বিএনপি-জামাতের অবরোধে ২০০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।