আলোচিত পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দীর্ঘ ১৬ বছর কারাভোগের পর চুয়াডাঙ্গার দর্শনার দুই বিডিআর সদস্য তৌহিদ হোসেন ফকির ও শাকিল নিজ নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।
দর্শনা থানার পারকষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের বড়বলদিয়া বাজারপাড়ার আব্দুস সালাম ফকিরের ছেলে তৌহিদ হোসেন ফকির এবং দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের সুবুলপুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে শাকিল গত ২৩ জানুয়ারি জামিন পেলেও দুদিন পর ২৫ জানুয়ারি (শনিবার) বাড়ি ফেরেন।
২০০৬ সালে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে বিডিআরে যোগ দিয়েছিলেন তৌহিদ। কিন্তু ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনি ও শাকিল আসামি হয়ে চাকরিচ্যুত হন এবং কারাগারে পাঠানো হয়। তৌহিদ জানান, ঘটনার সময় তিনি ব্যারাকেই ছিলেন, তবুও তাকে আসামি করা হয়।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর তৌহিদ ও শাকিল বাড়ি ফিরলে তাদের দেখতে ভিড় জমায় স্থানীয়রা। পরিবারের সদস্যরা আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তৌহিদের বাবা-মা বলেন, “আমাদের সন্তানকে ফিরে পেয়েছি, এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া। তবে তাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। আমরা মামলা প্রত্যাহার ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানাই।”
তৌহিদের স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছেন, আর শাকিল এখনো অবিবাহিত। তিনি বলেন, “ছুটিতে এসে বিয়ে করার কথা ছিল, কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি।”
বিডিআর তৌহিদ বলেন, “পিলখানার ঘটনার সময় ব্যারাকে থাকলেও আমাকে আসামি করা হয় এবং চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়। আমি চাকরি পুনর্বহাল, মামলা থেকে অব্যাহতি ও ১৬ বছরের পাওনা প্রদানের দাবি জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমি বাংলাদেশ বিডিআরের হয়ে বক্সিংয়ে স্বর্ণপদক ও বাংলাদেশ অলিম্পিক গেমসে ব্রোঞ্জপদক অর্জন করেছি। তিন বছরের চাকরিজীবনে আমি ল্যান্স নায়েক পদে পদোন্নতি পেয়েছিলাম।”
বিডিআর শাকিল বলেন, “ছাত্র আন্দোলনের কারণে আমরা মুক্তি পেয়েছি, তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। পাশাপাশি সরকার যেন আমাদের চাকরি পুনর্বহাল করে এবং ন্যায়বিচার দেয়, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”