২৮ অক্টোবর রাজনৈতিক সহিংসতার তাৎক্ষণিক যেসব ফুটেজ পাওয়া গেছে, সেগুলো বিদেশি মিশনগুলোতে পাঠিয়েছে সরকার। সোমবার আবার তাদের সহিংসতার ভিডিও ফুটেজ ছবিসহ তাদের নানা ডকুমেন্ট দেখানো হয়েছে। তাদের অভিব্যক্তি দেখে বোঝা গেছে, তারা এসব দেখে খুব অবাক হয়েছেন।
আজ সোমবার (৩০ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ব্রিফিংয়ে কূটনীতিকরা কোন প্রশ্ন করেননি বলেও সাংবাদিকদের জানানো হয়।
কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বিএনপির সমাবেশ ঘিরে শনিবার ঢাকায় যে রাজনৈতিক সহিংসতা সংঘটিত হয়েছে, তা বিদেশি কূটনীতিকদের জানিয়েছে সরকার। পাশাপাশি বিএনপির সংশ্লিষ্টতায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দেওয়া মিঞা জাহিদুল ইসলাম আরেফীর কর্মকাণ্ডের কথাও কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ মহাসমাশের নাম নিয়ে বিএনপি যেসব সংঘাত-সহিংসতা করেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা দরকার। গত কয়েকদিনে তারা যা করেছে, তার মূল উদ্দেশ্য আসছে নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু না হয়। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য তারা এ ধরনের অপকর্ম করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সেজন্য বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ডেকেছি। তাদের বলেছি, ২৮ তারিখে এখানে কি হয়েছে। প্রেডিসেডন্ট বাইডেনের মিথ্যা উপদেষ্টা হিসেবে একজন নিয়ে কি কি করা হয়েছে, সেটাও তুলে ধরেছি।’
এসময় বিএনপিকে নির্বাচনে আসার অনুরোধ জানান ড. মোমেন। তিনি বলেন, আমরা তাদের (বিএনপি) অনুরোধ করব, আপনারা নির্বাচনে আসেন। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়। আমরা আমাদের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন করব। রাজনৈতিক সহিংসতা করে সরকার পতনের যে অপচেষ্টা, এটা অলীক।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত ব্রিফিংয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, যুক্তরাজ্য, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, স্পেন, সিঙ্গাপুর, কানাডা, জার্মান, ইতালি, ফ্রান্স, রাশিয়া, জাপান, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, ইইউ, জাতিসংঘ, ওআইসি, বিমসটেকসহ ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশনসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এসময় আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সে ব্যাপারে আমরা কূটনীতিকদের পুনর্ব্যক্ত করেছি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।’ কূটনীতিকদের কোনো প্রশ্ন আছে কিনা জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে তারা ব্রিফিংয়ে কোনো প্রশ্ন করেননি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২৮ তারিখে যেসব ঘটনা ঘটেছে, ওইদিন তাৎক্ষণিক যেসব ফুটেজ পাওয়া গেছে; সেগুলো বিদেশি মিশনগুলোতে পাঠিয়েছি। আজকের আবার তাদের সহিংসতার ভিডিও ফুটেজ ছবিসহ তাদের নানা ডকুমেন্ট দেখানো হয়েছে।’ বিদেশি কূটনীতিকদের বক্তব্য কি ছিল— জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘তাদের অভিব্যক্তি দেখে বোঝা গেছে, তারা এসব দেখে খুব অবাক হয়েছেন।’