দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে দৃর্নিতির রিপোর্ট প্রকাশিত হলে দর্শনা কেরুজ ডিস্টিলারী বিভাগের দায়িত্বে থাকা মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ফিদা হাসান বাদশাকে অব্যাহতি দিয়েছে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপেরশন কতৃপক্ষ।
সোমবার (২৩ জানুয়ারী) ভারপ্রাপ্ত চীফ অফ পারসোনেল শাহরীনা তানাজ এর স্বাক্ষরিত ৩৬.০৪.০০০০.০১১.
১৯.০০১.১৮.১৪১ নং স্বারকে অব্যাহতির বিষযটি নিশ্চত করে।
পুনরাদেশ না দেওয়া পযর্ন্ত বিএসএফআইসি’র অধীনে কেরু এ্যান্ড কোম্পানী বাংলাদেশ লিমিটেডের মহাব্যাবস্থাপক ফিদা হাসান বাদশাকে বর্তমান বেতনক্রমে নামের পার্শ্বে উল্লেখিত পদ থেকে অব্যাহতি দেয়।
এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে “স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক” পত্রিকায় নিয়োগপত্র ছাড়াই মহাব্যবস্থাপক (জিএম) পদে ফিদা হাসান বাদশা কেরুজ চিনিকলের কোষাগার থেকে নিচ্ছেন বেতনভাতা এই মর্মে পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। তার পরিপেক্ষিতে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপেরশন কতৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে এবং সরেজমিনে তদন্তে আসে। তদন্তে এসে কর্মস্থলের তার বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে ব্যার্থ হয়। যে কারণে সাথে সাথে তার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ডিস্টিলারী পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে দেয়। এ বিষয়ে দর্শনা কেরুজ চিনিকলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আজ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন থেকে তার ডিস্টিলারী মহাব্যবস্থাপক (জিএম) পদ থেকে একটি পরিপত্র এসেছে। পরিপত্রে মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ফিদা হাসান বাদশাকে অব্যাহতি প্রদান করে ওই স্থলে রাজিবুল হাসান ডিস্টিলারী মহাব্যবস্থাপক (জিএম) পদে দায়িক্তভার গ্রহন করেছে।
উল্লেখ্য, দর্শনা কেরুজ চিনিকলের ডিস্টিলারী বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ফিদাহ হাসান বাদশা দীর্ঘ ১৮ বছর ঘুরে ফিরে অবস্থান করছেন একই প্রতিষ্ঠনে। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন কর্তৃক ফিদাহ হাসান বাদশাকে নিয়োগ দেওয়া হয় চিনিকলের বিএমআর প্রকল্পের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর (পিডি) হিসাবে। অথচ তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে আকড়ে রাখেন ডিস্টিলারী বিভাগের প্রধান চেয়ার। ফিদাহ হাসান বাদশার পদ মর্যাদা ব্যবস্থাপক, এ পদে পদন্নোতি হলে উপ-মহাব্যবস্থাপক, তার পরের পদ মহাব্যবস্থাপক। অথচ ব্যবস্থাপক পদ থেকে তিনি মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে একই ব্যাক্তি গুরুত্বপূর্ণ ২টি চেয়ার ধরে রাখায় অনেকের মধ্যে প্রশ্ন জাগে প্রকল্পের পিডি হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হলেও কি কারণে ধরে রেখেছেন ডিস্টিলারীর চেয়ার। কি মধু এ চেয়ারে ? এ সংক্রান্তে পত্রিকায় রিপোর্টা পত্রিকায় প্রকাশিত হলে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাপ শুরু করে দেন তিনি।
সুত্রে জানা যায়, দর্শনা কেরুজ চিনিকলে ২০০৫ সালে যোগদান করেন ফিদাহ হাসান বাদশা। যোগদানের পর পদন্নতি পেয়ে মিলের বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তা বাবুদের ম্যানেজ করেই ২০১৯ সালের ২৬ মে ডিস্টিলারী বিভাগে মহাব্যবস্থাপক পদে দায়িত্ব নেন। এরই মধ্যে পদন্নতি পেয়ে সদর দপ্তর থেকে চিনিকলের বিএমআরআই করণ প্রকল্পের প্রজেক্ট ডাইরেক্টর (পিডি) হিসেবে দায়িত্ব পান। তার মূলদায়িত্ব ওই প্রকল্পে হলেও অনৈতিক সুবিধা থাকায় ডিস্টিলারীর চেয়ার কৌশলে আকড়ে আছেন।
সূত্রে আরও জানা যায়, ডিস্টিলারী বিভাগে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার মালামাল ক্রয় হয়ে থাকে। পাশপাশি কয়েক শত কোটি টাকার মদ বিক্রি। পদাধিকার বলে ডিস্টিলারীরে মালামাল ক্রয় কমিটিতে তার যাচাই বাচাই এবং দেখভাল করার গুরুদায়িত্ব থাকে। অভিযোগ রয়েছে, প্রত্যেকটি মালামাল ক্রয় কমিটিতে তার সক্রিয় অবস্থান থাকে। যার ফলে সরবরাহকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠনের সাথে বিশেষ সখ্যতাও রয়েছে ফিদাহ হাসান বাদশার। ফলে কোন কোন ক্ষেত্রে সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে নিন্মমানের মালামাল সরবরাহের সুযোগ করে দেন তিনি। এতে প্রতিষ্ঠানের লোকসান হলেও আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন বাদশা। ডিষ্টিলারীর ক্রয় দুর্নিতি রোধে তার অপসারণ জরুরী বলে সাধারণ শ্রমিক কর্মচারীরা মনে করেন।
দীর্ঘদিন একই চেয়ারে থাকলে অনেকের সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠার সুবাদে দুর্ণিতি সিন্ডিকেট তৈরী হয়েছে। চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীদের দাবি ডিষ্টিলারীর চেয়ার ছেড়ে দিয়ে বিএমআরআই প্রকেল্পর মূলদায়িত্ব যেন গ্রহণ করেন ফিদাহ হাসান বাদশা। তাহলে অনেকাংশে দূর্নিতি কমে যাবে এ বিভাগে।
এ সংক্রান্ত রিপোর্ট পত্রিকায় প্রকাশের পরিপেক্ষিতে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপেরশন কতৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে এবং সরেজমিনে তদন্তে আসে। তদন্তে এসে কর্মস্থলের তার বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে ব্যার্থ হয়। যে কারণে সাথে সাথে তার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ডিস্টিলারী পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে দেয়। যে করণে গতকাল সোমবার চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন থেকে তার ডিস্টিলারী মহাব্যবস্থাপক (জিএম) পদ থেকে একটি পরিপত্র এসেছে। পরিপত্রে মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ফিদা হাসান বাদশাকে অব্যাহতি প্রদান করে ওই স্থলে রাজিবুল হাসানকে ডিস্টিলারীর মহাব্যবস্থাপক (জিএম) পদে দায়িক্তভার গ্রহণের আদেশ প্রদানের কথা জানানো হলে বাদশাকে অব্যাহতি দিয়ে রাজিবুলকে দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে বলে জানান দর্শনা কেরুজ চিনিকলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন।