অপকর্ম বন্ধ ও ভূয়া সমন্বয়ক চিহ্নিত করতে মাঠে নেমেছে বৈশম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা
সারাদেশে চাঁদাবাজি, দূর্ণীতি’ দখলদারিত্ব বন্ধসহ ভূয়া সমন্বয়ক চিহ্নিত করতে মাঠে নেমেছে বৈশম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেহেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ওয়াহিদ উজ জামান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) পৃথক সময়ে মেহেরপুরে পৃথক পৃথক মতবিনিময় সভা করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ওয়াহিদ উজ জামান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ৫ তারিখের পর সারাদেশে ভূয়া সমন্বয়ক সেজে নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে এক শ্রেণীর ছাত্র। অভিযোগ উঠেছে, দেশে আগের মতোই কিছু স্বার্থন্বেশী মানুষ নিজেদের স্বার্থগুলো হাসিলের উদ্দেশ্যে নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। ফ্যাসিস্ট সরকার বিতাড়িত হলেও তাদের পেতাত্মারা ভর করেছে তাদের মাঝে।
এসব অপকর্ম যাতে কেউ করতে না পারে সেই লক্ষে প্রতিটি জেলায় গিয়ে শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের সচেতন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করেছি। কিন্তু অভ্যুত্থানপরবর্তীকালে কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেভাবে আন্দোলন করেছি, ঠিক তেমনিভাবেই এখনো আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থেকে রাষ্ট্র সংস্কার ও মেরামত করতে হবে।’ আগামীতে কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান, সেই বিষয়গুলো সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে মতবিনিময় সভা থেকে।
তিনি বলেন, আমাদের দেড় হাজার ভাই ও বোনের রক্তের বিনিময় যে নতুন বাংলাদেশে পেয়েছি। সেই বাংলাদেশে বিনির্মানে সাধারণ মানুষের ভূমিকা অপরিসীম। দেশের ৬৪ জেলার মানুষের চিন্তাধার মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। সেই ভিন্ন চিন্তাগুলো একজায়গায় করা হচ্ছে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে তাদের ভূমিকা থাকবে সবার শীর্ষে।
তিনি বলেন, স্বেরাচার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে সারাদেশে আহত ও নিহত শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। চিকিৎসা থেকে শুরু করে তাদের পরিবারের চাহিদাগুলোও জানার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, শহীদদের জন্য একটি ফান্ড তৈরির চিন্তা করছে সরকার। তাদের চিকিৎসার পাশাপাশি আহত ও নিহতদের পরিবারের স্বজনদের চাকুরি দেওয়ার মাধ্যমে তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।
সারাদেশে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে অপকর্ম করার কোন সুযোগ নেয়। দ্রুত জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হবে। দেশে প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে কমিটি দিতে বিলম্ব হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন,‘সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বরতীকালীন সরকারকে সময় দিতে হবে।
সমন্বয়কের দলটি সকালে মেহেরপুর সরকারী কলেজ শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন। পরে তারা সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে, জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহীনি, রাজনিতিবিদ, জেলার বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেন।
জেলা প্রশাসক শামীম হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহসান খান, জেলা জামায়াতের আমির মাও. তাজউদ্দীন খান, পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, ইসলামি আন্দালনের জেলা আমীর মাওলানা আব্দুল কাদেরসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকেলে সাড়ে ৪ টার দিকে ডঃ শহীদ সাসুজ্জোহা পার্কে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে মিলিত হন সমন্বয়করা। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাদের ভূমিকা কি হবে, কেমন বাংলাদেশে দেখত চান তার উপর নানা ধরনের পরামর্শ নেন তারা।
এসময় সমন্বয়ক দলের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন রাজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশরেফা খাতুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু বক্কর খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহানা ফারিনা, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মঈনুল ইসলাম, বদরুন্নেছা কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাত, এনইউ বির শিক্ষার্থী তৌহিদ ইসলাম শুভ, ডিআই ইউ এর শিক্ষার্থী মোঃ বাবু খান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিশ্বজিৎ দত্ত উপস্থিত ছিলেন।