অনৈতিক সম্পর্কের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অন্যতম হোতা কথিত সাংবাদিক নাজনীন খান প্রিয়া ওরফে প্রিয়া খানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), সদর থানা পুলিশ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শহরের হোটেল বাজার এলাকার ভাড়া বাসা থেকে প্রিয়া খানকে গ্রেফতার করেন।
এর আগে মনোয়ার হোসেন নামের এক ভূক্তভোগী মঙ্গলবার তাকে আসামি করে দণ্ডবিধির ৪১৭/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৩২, তারিখ ২২/১১/২০২২ইং।
নাজনীন খান প্রিয়া চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দুলালনগর গ্রামের নাজমুল হোসেনের মেয়ে। বর্তমানে মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসাতে বসবাস করছেন তিনি।
বাদীর অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, মানব উন্নয়ন কেন্দ্র মউকে চাকুরী সূত্রে মোছা: নাজনীন খান প্রিয়া ওরফে প্রিয়া খানের সাথে পরিচয় হয়। কাজের সূত্রে আমঝুপি ফার্ম সংলগ্ন মউক হেলথ কেয়ারের দায়িত্ব পালনের সময়ে গত তিন মাস আগের ২৩/০৮/২২ তারিখে আনুমানিক বেলা ১২টার সময়ে আমাকে ছাদে যাওয়ার জন্য ডাকলে, আমি সরল বিশ্বাসে ছাদে উঠলে, আমাকে জড়িয়ে ধরে বেশ কয়েকটি ছবি তোলে, আমি স্বাভাবিকভাবে সহজ-সরল বিশ্বাসে সহকর্মী হিসাবে তখন কিছু বলিনি। কিন্তু বর্তমানে নাজনিন খান প্রিয়া আসামাজিক আচারণের দায়ে মানব উন্নয়ন কেন্দ্র মউক হতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর চাকুরিচ্যুত হন।
চাকরিচ্যুত হওয়ার পর গত দুই মাস যাবৎ তিনি বিভিন্ন সময়ে আমাকে পূর্বের সেই ঘনিষ্ট ছবিগুলি ভাইরাল করে দিবে ও পত্রিকায় সংবাদ ছাপানোর ভয় দেখিয়ে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। ইতোমধ্যে আমি সামাজিক ও পারিবারিক ভয়ে তাকে বিশ হাজার টাকা প্রদান করেছি। এর পরে নাজনীন খান প্রিয়া বিভিন্ন নাম্বার থেকে ফোন দেওয়ায়, ভয়ে আমি আমার ব্যবহৃত সিমটি ফেলে দিয়েছি। বর্তমানে আমি সব সময় আতঙ্কিত আছি যেকোন সময়ে নাজনীন খান প্রিয়াসহ তাদের গ্রুপ আমাকে ব্ল্যাক মেইল করে বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি ও মামলা-মোকদ্দমা করিয়ে সামাজিক ও পারিবারিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে নিঃস্ব করে দেবে।
মেহেরপুর সদর থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীর মামলা দায়ের হওয়ার পর তার শহরের ভাড়া বাসাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি জানান, নাজনীন খান প্রিয়া শহরের বিত্তশালীদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে সেটি ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও নিয়ে শুরু করে ব্লাকমেইলের মাধ্যমে চাঁদাবাজি।
ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, নাজনীন খান প্রিয়াকে আদালতের মাধ্যমে মেহেরপুর জেল হাজতে প্রেরণ করার প্রস্তুতি চলছে।
একাধিক সূত্র জানা গেছে, নাজনীন খান প্রিয়াসহ ৮ থেকে ৯ জনের সুন্দরী নারী রয়েছেন। এসকল সুন্দরী নারীদের ব্যবহার করে মেহেরপুর শহরের কিছু সিনিয়র ও জুনিয়র সাংবাদিক ব্ল্যাকমেইল করে চাঁদা দাবী করেন বলেও পুলিশের কাছে অভিযোগ রয়েছে। তারা বিভিন্ন সময়ে পুরুষদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে আসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়। নাজনীন খান প্রিয়া মানব উন্নয়ন কেন্দ্র মউকের মাঠ কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। পরে সে মানব উন্নয়ন কেন্দ্রের একটি ফেইসবুক পেইজ ‘মানবতার চোখ’ এ উপস্থাপক হিসেবে কাজ করেছেন। সে শহরে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আসছিলেন।