দেশের জনসংখ্যা ১৯ কোটি, ঢাকাতেই দেড় কোটি : ইসি তাহমিদা

নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৯ কোটি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় রয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ মানুষ।

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) তাহমিদা আহমদ এ কথা বলেন।

দেশের মোট জনসংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জনসংখ্যা নিয়ে বিবিএসের ডেটা প্রশ্নবিদ্ধ।

একবার তারা যেটা প্রকাশ করল, পরে আবার সেটা কমিয়ে দেখানোর জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৯ কোটি। আমরা যে ভোটার তালিকা করলাম বাড়ি বাড়ি গিয়ে, সেখান থেকে এ তথ্য পেয়েছি। এটা একদম সঠিক তথ্য।

আমাদের জনসংখ্যা হলো ১৯ কোটি। এর মধ্যে ১ কোটি ৫১ লাখ বাইরে, প্রবাসী যেটাকে বলা হয়। আর ঢাকাতেই রয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ মানুষ।
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে খোলা মাঠে ভোটগ্রহণের পক্ষে আবারও মত দেন ইসি তাহমিদা।

তিনি বলেন, ‘আমি বলে আসছি ট্রান্সপারেন্ট (স্বচ্ছ) নির্বাচন যদি চান, তাহলে ওপেন স্পেসে (উন্মুক্ত জায়গা) নির্বাচন করার মানসিকতা তৈরি করেন, সেটাই হবে স্বচ্ছ নির্বাচন।’
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বরে বিবিএস জানিয়েছিল, দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮ কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার ৩ জন এবং নারী ৮ কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৮৪ জন।




ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে মেহেরপুরে শারদীয় দুর্গোৎসবের যাত্রা শুরু

মেহেরপুরে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে শ্রী শ্রী শারদীয় দুর্গোৎসবের যাত্রা শুরু হয়েছে।

গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মেহেরপুর জেলা শাখার আয়োজনে শারদীয় দুর্গোৎসবের উদ্ধোধন করা হয়।

শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির সভাপতি শ্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল ছালাম।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মেহেরপুর জেলা শাখার সদস্য সচিব ড. অশোক চন্দ্র বিশ্বাসের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর আহমেদ সিদ্দিকী এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম।

এছাড়া আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ মেহেরপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মাধব চন্দ্র ভাস্কর, শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের কোষাধ্যক্ষ শেখর দে ও সাধারণ সম্পাদক শ্রী সুভাষ রায়।




মেহেরপুরে ধানের শীষের পক্ষে জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের গণসংযোগ

মেহেরপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি ও পৌর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের উদ্যোগে ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেলে শহরের শেখপাড়া ও কালাচাঁদপুরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

গণসংযোগ কর্মসূচিতে জাহাঙ্গীর বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিএনপি নেতারা স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পাশাপাশি তারা বিএনপি’র প্রতীক ধানের শীষের পক্ষে থাকার আহ্বান জানান। আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষের জয় নিশ্চিত করতে সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান তারা।

এ সময় পৌর বিএনপি’র সাবেক নেতা হাবিব ইকবাল, ফজলু খানসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।




দর্শনায় বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়িজলীগ এর সাধারণ সভা 

দর্শনায় বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের চুয়াডাঙ্গা শাখার উদ্যোগে অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়িজলীগ এর সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রবিবার সকালে দর্শনা রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন ইয়ার্ডে সংগঠনের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মোঃ আমিন উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেনম, বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়িজলীগ এর সভাপতি ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব মোঃ আখতারুজ্জামান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমীর ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের চুয়াডাঙ্গা শাখার প্রধান উপদেষ্টা মোঃ রুহুল আমিন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের চুয়াডাঙ্গা শাখার সভাপতি মোঃ কাইয়ুম উদ্দিন হিরক, জামায়াতের জীবননগর থানা আমীর মাওলানা মোঃ সাজেদুর রহমান, জামায়াতের জীবননগর থানা সেক্রেটারী মোঃ মাহফুজুর রহমান, থানা সভাপতি শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ বিল্লাল হোসেন, সেক্রেটারী মোহাম্মদ আজিজুর রহমান থানা, মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সভাপতি দর্শনা পৌর শাখা, দর্শনা পৌর আমীর সাহিকুল ইসলাম অপু ও পৌর সেক্রেটারি মোঃ শাহরিয়ার হোসেন দবির প্রমুখ।

প্রধান অতিথি জনাব মোঃ আখতারুজ্জামান তার বক্তব্যে বিগত সরকারের আমলে রেলওয়েতে ব্যাপক দূর্নীতি ও লুটপাটের ইতিহাস তুলে ধরে আগামীতে রেলওয়েকে লাভজনক প্রতিষ্ঠান ও শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানান।

জামায়াতের জেলা আমীর ও সংগঠনের উপদেষ্টা মোঃ রুহুল আমিন বলেন- ইসলাম শ্রমিকের সবচেয়ে বেশী মর্যাদা দিয়েছে। আমাদের রাসুল (সা.) শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকাবার আগেই তার ন্যায্য প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে বলেছেন। আগামী দিনে ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনতে পারলে সমাজের সকল বৈষম্যের অবসান হবে। এজন্য সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার আহ্বান জানান।




আলমডাঙ্গার সকল পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে রাসেল

আলমডাঙ্গা পৌর সভার ঐতিহ্যবাহী রথতলা দূর্গামন্দির সহ পৌর সভার সকল পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের জামায়াতে ইসলামের মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলাম ক্ষমতায় আসলে সকল ধর্মের মানুষ সমানভাবে তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উৎযাপন করতে পারবে। পৃথিবীতে ইসলাম একমাত্র ধর্ম যেখানে সকল শ্রেণির মানুষ সমান ভাবে সকলের ধর্ম পালন করতে পারে। সংখ্যালঘু হিন্দু সনাতনীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা আপনাদের পাশে থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।

আরও উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আইন আদালত বিষয়ক সম্পাদক দারুসসালাম, যুব বিভাগের সম্পাদক নূর মোহাম্মদ টিপু, আলমডাঙ্গা উপজেলা আমির শফিউল আলম বকুল, আলমডাঙ্গা উপজেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারি তরিকুল ইসলাম প্রমুখ।




ঝিনাইদহে বিশ্ব নদী দিবস পালিত

‘নদীর নাব্যতা বজায় রাখুন, আপনার পরিবেশকে রক্ষা করুন’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে বিশ্ব নদী দিবস-২০২৫ পালিত হয়েছে।

রোববার বিকালে এ উপলক্ষে জেলা শহরের নবগঙ্গা নদীর পাড়ে ধোপাঘাটা ব্রিজ এলাকার আশে পাশের নদীর পাড় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পেইন করা হয়।সেসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা যুব ফোরামের সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক সোহানা, সাংগঠনিক সম্পাদক সজল পারভেজ বাপ্পি, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মুহাইমিনুল ইসলাম, জেলা যুব ফোরামের সদস্য মাহারুন তন্নি, সুমি ইসলাম, নাহিদ হোসেন, জিসান আমিন বাপ্পি, তাহসিন ও সজল সহ স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এই তারুণ্যে আগ্রহ ও শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমাদের নদী মাত্রিক বাংলাদেশকে পুরানো রুপে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা।




মেহেরপুরে পৃথক মাদক মামলায় চার আসামির জেল-জরিমানা

মেহেরপুরে মাদক রাখার অপরাধে পৃথক মামলায় মোঃ রাকিবুর হাসানকে ১ বছর, মোঃ সুমন, মোঃ লিজন ও মোঃ স্বপনকে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ রবিবার দুপুরে মেহেরপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাজাহান আলী এ আদেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর জেলা গোয়েন্দা শাখার এ.এস.আই মোঃ ইব্রাহিম বিশ্বাস ফোর্স নিয়ে মেহেরপুর পৌর এলাকার কাখুলি বাসস্ট্যান্ডে বিশেষ অভিযানে যান। এসময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে গোভিপুর দিক থেকে তিন ব্যক্তি ইয়াবা ট্যাবলেটসহ শহরের দিকে আসছে। পুলিশি উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করলে ধৃত করা হয়। পরে তাদের হেফাজত থেকে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।

তল্লাশিতে আসামী রাকিবের ট্রাউজারের পকেট থেকে নীল প্যাকেটে মোড়ানো ৪১ পিস ইয়াবা, সুমনের জিন্সের পকেট থেকে ৫ পিস ইয়াবা এবং লিজনের পকেট থেকে আরও ৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। মোট ৫১ পিস ইয়াবা জব্দ করে পুলিশ।

২০১৮ সালের ১১ ডিসেম্বর ভোররাতে মেহেরপুর সরকারি কলেজ মোড়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে স্বপনকে আটক করে। পরে তার জিন্স প্যান্টের পকেট থেকে ডারবি সিগারেটের প্যাকেটে লুকানো ২ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সদর থানায় মামলা দায়েরের পর দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হয়।

আসামীদের বিরুদ্ধে পূর্বে একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে, রাকিব হাসানের বিরুদ্ধে ২০১৪ ও ২০১৭ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা। সুমনের বিরুদ্ধে ২০১২, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে মাদক এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে একাধিক মামলা। লিজনের বিরুদ্ধেও পূর্বে মাদক মামলার রেকর্ড রয়েছে। এছাড়া স্বপনের বিরুদ্ধে পূর্বে একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ২০১২ ও ২০১৭ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি এবং একই বছরে দণ্ডবিধির ৪৫৭/৩৮০ ধারায় আরেকটি মামলা এখনও চলমান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। নথি ও সাক্ষ্য পর্যালোচনা শেষে আদালত এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার পর আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।




ঝিনাইদহে বিভিন্ন কর্মসুচীর মাধ্যমে জলাতংক দিবস পালিত

ঝিনাইদহে জলাতংক দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসুচী পালন করা হয়েছে। রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঝিনাইদহ জেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের আয়োজনে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে র‌্যালি, ফ্রি ভ্যাক্সিনেশন কর্মসূচী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

দিবসের শুরুতে অফিসের সামনে থেকে একটি র‌্যালি বের করা হয়, র‌্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে পুনরায় জেলা প্রাণি সম্পদের কার্যলয়ে এসে শেষ হয়। সেখানে ফ্রি ভ্যাক্সিনেশন অনুষ্ঠিত হয়।

এরপর জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা: মো: কামরুজ্জামান, বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা ভেটেরিনারি অফিসার ডা: সনজিৎ কুমার বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঝিনাইদহ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: এ.এম আতিকুজ্জামান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ঝিনাইদহ সদর উপজেল প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: রেজাউল করিম। জলাতংক দিবসের কনটেন্ট তৈরী করেন সদর উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন তারেক মুসা। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলার ৬ টি উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাবৃন্দ।




ঝিনাইদহে আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস পালিত

‘পরিবেশের তথ্য ডিজিটাল যুগে হোক সুনিশ্চিত’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস পালন করা হয়েছে।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও টিআইবি’র আয়োজনে রোববার সকালে শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বরে বেলুন উড়িয়ে দিবসটি উদ্বোধন করা হয়। পরে সেখান থেকে একটি র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পোস্ট অফিস মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

সেখানে অনুষ্ঠিত হয় মানববন্ধন কর্মসূচীতে। এতে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান, সনাকের সভাপতি এম সাইফুল মাবুদ, সদস্য এনএম শাহজালাল, নাসরিন ইসলামসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।

সেসময় বক্তারা, অবিলম্বে স্বাধীন তথ্য কমিশন গঠন, জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ আইন সম্পর্কে সচেতন ও কার্যকর ব্যবহারে উদ্যোগ গ্রহণসহ বেশ কয়েকটি দাবী তুলে ধরেন।




শহর-গ্রামের আর্থ-সামাজিক বৈষম্য কমলে দেশ আরও দ্রুত এগিয়ে যাবে

শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষের মাঝে আয়-বৈষম্য একটি চিরাচরিত বিষয় । তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, এ বৈষম্য দেশের সুষম ও সামগ্রিক উন্নয়নের বিবেচনায় সুখকর কিছু নয়। বাংলাদেশে গ্রাম ও শহরের মধ্যে ব্যবধান কমছে, তবে খুব ধীর গতিতে।

শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষের আয় যেমন কম, তেমনি সুযোগ-সুবিধা আরও কম। মানসম্মত চিকিৎসা ও শিক্ষার জন্য গ্রামের মানুষকে ছুটতে হয় শহরে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গ্রামের কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পান না। অথচ গ্রামে খাদ্য উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও এখাতে মূল্যস্ফীতির হার গ্রামেই বেশি। অর্থনীতির ধারায় গ্রাম থেকে টাকা এনে ঋণের জোগান বাড়ানো হয়। অথচ গ্রামে ঋণপ্রবাহ কমে। গ্রামে কর্মোপযোগী মানুষ বেশি থাকলেও স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ সে অর্থে নেই বললেই চলে। সমস্যাগুলো থেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে ভাবছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গতবছর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘এমনিতেই গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এসব অঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করতে হবে। দ্রুত নতুন প্রকল্প শুরু করতে হবে, না হলে বিদ্যমান প্রকল্পগুলো সংশোধন ও পরিমার্জনের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে।’

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যে দেখা যায়, বাংলাদেশের মোট আয়তন এক লাখ ৪৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে গ্রামীণ এলাকা এক লাখ ৩৩ হাজার বর্গকিলোমিটার এবং শহুরে এলাকা ১৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার। শহরের আয়তনের চেয়ে গ্রামের আয়তন এক লাখ ১৮ হাজার বর্গকিলোমিটার বেশি। অর্থাৎ প্রায় নয় গুণ বেশি। শহরের চেয়ে গ্রামে জনসংখ্যাও বেশি। এ হিসেবে উন্নয়নের সুবিধা বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে পৌঁছে দিতে হলে গ্রামীণ উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

বিবিএস’র ২০২২ সালের হিসেবে শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষের আয় কম। গ্রামে পরিবার প্রতি আয় মাসে গড়ে ২৬ হাজার ১৬৩ টাকা। অথচ প্রতি মাসে খরচ করে ২৬ হাজার ৮৪২ টাকা। অর্থাৎ আয়ের চেয়ে খরচ বেশি। আবার মূল্যস্ফীতিজনিত টাকা ক্ষয়ের দিক থেকে গ্রামই এগিয়ে। একদিকে পণ্যের দাম বেশি, অন্যদিকে আয় কম। গ্রামে চাল-ডাল, শাক-সবজি, মাছ-মাংস, দুধ-ডিম, ফল ও শিল্পোজাত পণ্যের কাঁচামাল উৎপাদন হচ্ছে। অর্থনীতির নিয়মে পণ্য যেখানে উৎপাদন হয় সেখানে সরবরাহ বেশি থাকে। এ কারণে গ্রামে মূল্যস্ফীতির হার কম থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে মিলছে উলটো চিত্র। কৃষক পর্যায় ছাড়া গ্রামে পণ্যের দাম বেশি। ফলে শহরের চেয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতির হারও বেশি। গ্রামে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ, শহরে এ হার ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আবার, ২০২২ সালের হিসেবে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং শহরে ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। এ চিত্র খানিকটা বদলেছে, তবে আরও বদলের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

আবার, বিবিএস’র সেই প্রতিবেদনে শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষের নানা ধরনের জটিল রোগে বেশি আক্রান্ত হওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। এর মধ্যে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভোগেন গ্রামের ১২ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ, শহরে এ হার ৮ শতাংশ। উচ্চরক্তচাপে ভোগেন গ্রামের ৪ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ, শহরে এ হার ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। ক্যানসারের মতো মরণব্যাধিগুলোও গ্রামে বেশি হচ্ছে। এর মধ্যে লিভার ক্যানসার ও ব্লাড ক্যানসার শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি। গ্রামের ৪ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। শহরে এ হার ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। ব্লাড ক্যানসারে ভোগেন গ্রামের ৩ শতাংশ মানুষ। শহরে এ হার ২ দশমিক ৭ শতাংশ। আবার, বিদ্যুৎ ব্যবহারেও শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষ পিছিয়ে। গ্রামের ৯৯ দশমিক ১০ শতাংশ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। শহরের বিদ্যুৎ ব্যবহারের হার ৯৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। আগের চেয়ে শহরে ও গ্রামে বিদ্যুতের ব্যবহারের হার বেড়েছে। তবে শহরের চেয়ে গ্রামে লোডশেংডিং বেশি করা হয়।

ব্যাংকে আমানত জোগানের মধ্যে ৭৯ শতাংশ শহরের, ২১ শতাংশ গ্রামের। এর বিপরীতে মোট ঋণের ৮৮ শতাংশ দেওয়া হয় শহরে, গ্রামে ১২ শতাংশ। আগে গ্রামে ঋণের হার আরও কম, আমানতের হার বেশি ছিল। গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রণোদনার জোগান বাড়াতে সরকার নানামুখী তহবিল গঠন করেছে। সেগুলো থেকে গ্রামে কম সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এতে গ্রামে ঋণের প্রবাহ কিছুটা হলেও বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গ্রামে ব্যাংকিং সেবার পরিধি বাড়ছে। প্রচলিত ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি মোবাইল ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের প্রসার বেশি ঘটছে গ্রামে। মোট এজেন্টের মধ্যে ১৪ শতাংশ শহরে, ৮৬ শতাংশ গ্রামে। এধারা ব্যাংকিং এর হিসাবধারীদের মধ্যে ১৪ শতাংশ শহরে ও গ্রামে ৮৬ শতাংশ।

বিবিএস’র প্রতিবেদন হতে জানা যায়, দেশের মোট শ্রমশক্তির ৪০ দশমিক ৬ শতাংশই কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। কৃষির প্রায় পুরোটাই গ্রামে। পাশাপাশি, সেবা ও শিল্পখাতের একটি অংশও গ্রামে রয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পণ্য উৎপাদন করেও কৃষক পণ্যের সঠিক দাম পান না। উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে তা বিক্রি করে আগের ধারদেনা শোধ করেন। এ কারণে কৃষক পাইকারি বাজারে পণ্য নিয়ে প্রত্যাশিত দাম থেকে বঞ্চিত হন। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় খামারিরা দুধের ভালো দাম না পেয়ে রাস্তায় দুধ ঢেলে প্রতিবাদ করেছেন এমন নজিরও আছে। তাই নাগরিক সুবিধাগুলো তো বটেই, উপরন্তু বিপণন ব্যাবস্থাকে অর্থনীতির চালিকাশক্তি, তথা গ্রামে পৌঁছে দেওয়া দরকার হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ পরিসখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর হিসেব অনুযায়ী ২০২২ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮.৭ শতাংশ এবং অতি দরিদ্রের হার ছিল ৫.৬ শতাংশ। পিপিআরসির গবেষণায় দেখা গেছে, অতি দারিদ্র্যও তিন বছর পর বেড়ে ৯.৩৫ শতাংশ হয়েছে। দারিদ্র্য বেড়ে হয়েছে ২৭.৯৩ শতাংশ। পিপিআরসি বলছে, এখনো দেশের ১৮ শতাংশ পরিবার যে-কোনো সময় গরিব হয়ে যেতে পারে।

গ্রামের জীবন এক সময় কিছুটা স্থবির ছিল। গ্রামের মধ্যেই মানুষের যাবতীয় চাহিদার অনুসঙ্গের উপর তারা পরিতৃপ্ত ছিল। জীবন-জীবিকা-শিক্ষা-চিকিৎসা-ভ্রমণ কোনো প্রয়োজনেই তারা গ্রামের বাইরে যেত না। কৃষি মৌসুমবিহীন সময়ে অলস বেকার বসে থাকার দরুন সঞ্চিত অর্থ ও ফসল খরচ করতে হতো, যার কারণে দারিদ্র্যতা তাদের নিত্য সঙ্গী ছিল। তাদের সামগ্রিক জীবন ব্যবস্থা ছিল গতিহীন ও স্থির। বর্তমানে পরিপার্শ্বিক কারণে তাদের জীবনে গতিশীলতা এসেছে। গ্রামের অনেকেই মধ্যপ্রাচ্য-সহ ইউরোপ-আমেরিকা প্রবাসী হওয়ার সুবাদে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে হরহামেশাইে এখন বিদেশ গমন করে থাকে। প্রবাসীদের অধিকাংশই গ্রামের অধিবাসী, যাদের পাঠানো রেমিটেন্সের কল্যাণে গ্রামীণ জীবনধারায় ব্যাপক সচ্ছলতা এসেছে ও গ্রামের মানুষের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন ঘটেছে। যার কারণে গ্রামের মানুষের মাঝে আধুনিক সুবিধার স্বাচ্ছন্দ্যময় শহরে জীবন ব্যবস্থার প্রতি ঝোঁক বাড়ছে। ফলে তারা সবাই শহুরে জীবনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। বিশ্বের অনেক দেশেই নাগরিক অধিকার সুরক্ষায় শহর আর গ্রামের মধ্যে উন্নয়ন-বৈষম্য পরিলক্ষিত হয় না। সেখানে নাগরিক সেবারমান সবখানে সমান ভাবে প্রযোজ্য। সেসব দেশে আধুনিক শিক্ষা-চিকিৎসার সাথে যুক্ত প্রতিষ্ঠান ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দাপ্তরগুলো শহর থেকে দূরে স্থাপন করা হয়, যাতে ঐ এলাকা সমৃদ্ধি লাভ করে। এভাবে অখ্যাত পল্লীর প্রত্যন্ত অঞ্চলও নাগরিক সুবিধার আওতায় আসে আবার মূল শহরগুলো বহুলাংশে চাপমুক্ত থাকে।

গ্রামের উন্নয়নে বাস্তবমূখী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন না হলে শহর ও গ্রামের পার্থক্য থেকেই যাবে। মনে রাখা দরকার, শহরের মানুষের খাদ্যের জোগান আসে গ্রাম থেকে। খাদ্যের জোগানদাতা হিসাবে গ্রামের মানুষদেরই বেশি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে এমনটা সবসময় হচ্ছে না। ফলে কোনো পরিবার একটু আর্থিক সক্ষমতা অর্জন করলেই শহরমুখী হতে চাইছে। নগরমুখী এ প্রবণতা রোধ করতে গ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বেকারত্ব হ্রাস, কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, ব্যবসাবাণিজ্য সম্প্রসারণ, গ্রামে শিল্পাঞ্চল স্থাপনসহ গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতিশীল করা দরকার। একই সাথে গ্রামের যোগাযোগ, শিক্ষাব্যবস্থা, চিকিৎসা, সামাজিক নিরাপত্তা ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য দরকারি সকল সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

লেখক: সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর, ঢাকা