জঞ্জাল পরিস্কার না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান অন্তর্বতিকালীন সরকারকে যৌক্তিক সময় দেবে বিএনপি। জঞ্জাল পরিস্কার না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো নির্বাচনে যাবোনা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্ররা যে কারণে জীবন দিয়েছেন সেই আন্দোলন ফলপ্রসু করার জন্য বাংলাদেশ থেকে ঘুঁষ, দূর্ণীতির মূলোৎপাটন করতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে হাসপাতাল বাজার এলাকার দলীয় কার্যালয়ের সামনে গাংনী উপজেলা বিএনপি আয়োজিত বিরাট সমাবেশ এসব কথা বলেন, গাংনী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলু।
ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপর খুনি হাসিনার বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে এই গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মতিউর রহমান মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু।
প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা কৃষক দলের আহবায়ক মাহবুবুর রহমান মাহবুব।
গাংনী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সুলেরী আলভীর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের গাংনী উপজেলা শাখার সভাপতি আমিনুল বারী মোতালেব, সাবেক ছাত্রনেতা নুরুজ্জামান হকা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল হাসান শাওন, স্বেচ্চাসেবক দলের মেহেরপুর জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হোসেন, গাংনী পৌর বিএনপির ৪ নং ওয়ার্ডের সভাপতি ইনামুল হক, মেহেরপুর জেলা ছাাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাজমুল হুসাইন, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রেজওয়ানুল হক ইমন, গাংনী পৌর যুবদলের সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি, কাথুলি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান হুসাইন আহমেদ, সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যন চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সহ-সভাপতি আসমা খাতুন, মেহেরপুর জেলা মহিলা দলের শাখার যুগ্ম সম্পাদক নাজমা খন্দকার, বিএনপি নেত্রী ও সাবেক মহিলা মেম্বর সামিরুন নেছা, সাবেক ছাত্রনেতা শাহিবুল ইসলাম, সাহেবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান বাবলু আরও বলেন, খুনি হাসিনা ইন্ডিয়াতে বসে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে জুডিশিয়ারি ও আনসার ক্যু ঘটানোর চেষ্টা করেছে। যা এদেশের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও জনতা রুখে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ভারতের আগ্রাসনেই এদেশে পিলখানায় বিডিআর হত্যা হয়েছে। তাদের ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশের দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীর মেধাবী ও চৌকস ৫৪ জন আরমি অফিসার হারিয়েছি। তারা সীমান্তে পাখির মত গুলি করে আমাদের দেশের মানুষকে হত্যা করে। ভারতের আগ্রাসনেই আজকে বাংলাদেশের তিনটি জেলার লাখ লাখ মানুষ পানির নিচে তলিয়ে দিয়েছে। ওই এলাকার মানুষ আজ অসহায় হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন ভারতের আগ্রাসন বন্ধ না হলে আগামীতে আমরা ভারতের সকল পণ্য বয়কটের ডাক দেবো। তিনি পিলখানা হত্যার ঘটনাটি পুন: তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
বাবলু আরও বলেন, শেখ হাসিনা ও তার দোসররা দূর্ণীতি ও লটপাটের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তিনি এসব দূর্ণীতির বিচার দাবি করেন। খুনি হাসিনা তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ৫ আগষ্টের আগে ও পরে হাজার ছাত্র জনতার বুকে গুলি করে হত্যা করেছে। আয়না ঘর তৈরী করে হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী ও ভিন্নমতাবলম্বী মানুষকে ধরে নিয়ে বিনাবিচারে নির্যাতন ও হত্যা করেছে। তারা এদেশে লুটপাট, ঘুঁষ, দূর্ণীতির রাজত্ব কায়েম করেছিলো। এদেশের মানুষ তার প্রত্যেকটি অপকর্মের বিচার চাই। তিনি বলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এদেশের মানুষের সকল বৈষম্য দুর করতেই তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়েছে। আজ বাংলাদেশের মানুষ সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। এদেশ থেকে ঘুঁষ দূর্ণীতি বন্ধ হলে বৈষম্য আন্দোলনে নিহত সকল আত্মা শান্তি পাবে। তিনি চাঁদাবাজি, লুটপাট, দখল ও সকল প্রকার অন্যায় জুলুম থেকে দুরে থাকার জন্য গাংনীর সকল নেতাকর্মীকে আহবান জানান।
তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ রাস্ট্রনায়ক তারেখ রহমান বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র নেতারা যে কারনে জীবন দিয়েছেন সেটা ফলপ্রসূ করার জন্য বাংলাদেশ থেকে ঘুঁষ, দূর্ণীতির মূলোৎপাটন করতে হবে। বিএনপির নেতাকর্মীদের বিষয়টি ধারণ করতে হবে। এই দেশে কোনো লুটপাট, দখল হবেনা।
সমাবেশের প্রধান বক্তা জেলা কৃষকদের আহবায়ক মাহবুবুর রহমান বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির মধ্যে দিয়ে আজ দেশে সংস্কার কাজ চলছে। এই সরকারের সংস্কার কর্মসূচি পূর্ণভাবে বাস্তবায়নের জন্য বিএনপি তাদের সহযোগীতা করবে। খুনি হাসিনার সময়ে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে আজকেও যেনো সেই ঘটনা না ঘটে এজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
সমাবেশ শেষে একটি বিরাট গণ মিছিল থেকে শুরু হয়ে গাংনী বড়বাজার শহীদ আবু সাঈদ মোড় ঘুরে সমাবেশস্থল এসে শেষ হয়।