মেহেরপুরের গাংনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী গাংনী পৌরসভার চৌগাছা গ্রামের জুলফিকার আলীর ছেলে রেজানুল হক ইমন (২৫) বাদী হয়ে ধারা ২০০৯ সাল (সংশোধনী/২০১২) এর সন্ত্রাস বিরোধী আইনের ৬(২)/৭(৫)/৭(৬)(ক)/৭(৬)(খ)/১০/১১/২/১৩ ধারায় বিজ্ঞ “সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে” মামলাটি দায়ের করেন। গাংনী থানার মামলা নং-১১, তারিখ-২০/০৮/২০২৪ মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম গাংনী থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দেন।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তাজুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে মামলাটি এফআইআরভ’ক্ত করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে গাংনী বাসস্ট্যান্ড এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী তন্ময়।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কসবা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে বিপ্লব হোসেন (৩০), সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শিশিরপাড়া গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে জীবন আকবর (৩০), গাংনী সরকারি ডিগ্রী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ধর্মচাকী গ্রামের মৃত ইসমাইলের ছেলে শাহিনুজ্জামান (২৫), চৌগাছা গ্রামের হান্নানের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা পিন্টু (২৮), গাংনী মাদ্রাসাপাড়ার খোকন দেওয়ানের ছেলে রেজাউল হক (২৫), গাংনী পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবু (৩৮), চৌগাছা গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে যুবলীগ নেতা মিলন (৪০), জালশুকা গ্রামের জমসেদ আলীর ছেলে ছাত্রলীগ নেতা ওবায়দুল (২৫), চৌগাছা গ্রামের মৃত আজিমের ছেলে রকিব(৩৮), থানাপাড়া এলাকার ইব্রাহিম জোয়ার্দারের ছেলে হাবিবুর(২৮), শিশিরপাড়া গ্রামের খলিলের ছেলে রমজান আলী (৪৫), মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে বান্টু (৫০), গাংনী বাজারপাড়া এলাকার মৃত মোজাহার আলীর ছেলে মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক (৫৭), মৃত নুর হকের ছেলে গাংনী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন, গাংনী পৌরসভার মেয়র আহম্মেদ আলী, মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল আহমেদ, ষোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার পাশা, রাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সাকলায়েন ছেপু, বামন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান কমল, গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল অনিক (২২), শিমুলতলা গ্রামের হারান মন্ডলের ছেলে রাশি (৪০), জোড়পুকুর গ্রামের ফড়ং এর ছেলে ইমারুল (৪০), খোকার ছেলে ফয়সাল (৪০), ময়নাল হকের ছেলে খোকন (৪৫), হাবিবুর রহমানের ছেলে হাসান (৩৮), গাংনী পৌরসভার সাবেক মেয়র আশরাফুল ইসলাম (৫০), গাংনী বাজারপাড়া এলাকার হাসেম ফকিরের ছেলে মনি (৪০), হাড়িয়াদহ গ্রামের ইয়ার আলীর ছেলে ও রাইপুর ইউনিয়নের সদস্য (মেম্বর) রাজু আহমেদ (৪০), গাংনী উত্তরপাড়া এলাকার সাবেক ছাত্রলীগের নেতা ও এমপি মকবুল হোসেনের পিএস শাহিদুজ্জামান শিপু (৪০), নওপাড়া গ্রামের কছিমদ্দীনের ছেলে ইয়ারুল ইসলাম (৫০), মুকুল হোসেন (৪৫), গাংনী র্যাব ক্যাম্পপাড়া এলাকার জালাল উদ্দীনের ছেলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের হোসেন উজ্জল (৪০), চৌগাছা গ্রামের মৃত জুলহাসের ছেলে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিরুল ইসলাম মিয়া (৫৫), মেহেরপুর ভূমি অফিসপাড়া এলাকার খবির উদ্দীনের ছেলে তুফান (৫২) সদর উপজেলার বুঁড়িপোতা গ্রামের মো: মামুন (৩৮) ও মো: সুমন (৩৫)।
মামলার বাদি রেজানুল হক ইমন বলেন, আদালতে এজাহার দিলে বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে গাংনী থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ৩০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ঢাকায় আন্দোলন চলাকালীন সময়ে নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় উপজেলা শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্বলন করতে গেলে আসামিরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়।
আসামীগণসহ অজ্ঞাত আরো ১০০ জন অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ধারালো রামদা, কিরিচ, লোহার রড, বাঁশের লাঠি সহ এসে ভয়ভীতি, খুন, জখম করার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। তখন আন্দোলনরত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র ও তাদের অভিভাবক এবং জনসাধারণ ভিতি সন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়ে। আসামীদের হামলায় এদিক সেদিক ছোটাছুটি করাকালীন আসামীরা ছাত্র ও উপস্থিত জনতাকে খুন জখমের হুমিক প্রদান করে। আসামীগণের প্রকাশ্য হুকুমে অন্যান্য আসামীগণ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে।