ঝিনাইদহে দুই টাকায় দুপুরের খাবার ইয়াতিম শিশুদের মুখে তৃপ্তির হাঁসি
মাত্র দুই টাকায় দুপুরের খাবার। এখন আর দুই টাকা দিয়ে লজেন্স ছাড়া তেমন কিছু পাওয়া যায় না। ভিখারিকে দিলেও অনেক সময় নিতে চাই না। আর সেই সামান্য দুই টাকার বিনিময়ে ইয়াতিম শিশুদের হাতে দুপুরের খাবার তুলে দিয়েছে ঝিনাইদহের প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে “দুই টাকায় হাসি” এর দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। “তৃপ্তির হাসি ফুটুক ইয়াতিম শিশুদের মুখে মুখে” এই শ্লোগানে নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মথুরাপুর আদর্শ ইয়াতিমখানায় এ খাবার বিতরণ করা হয়। প্রতি মাসের নিয়মিত আয়োজনের ৭ম পর্বে মঙ্গলবার ঝিনাইদহে মথুরাপুর আদর্শ ইয়াতিমখানার প্রায় ৪০ জন ইয়াতিম শিশুদের মাত্র ২ টাকায় দুপুরের খাবার সাদা ভাত ও গরুর মাংসের আয়োজন করা হয়। দুই টাকায় দুপুরের খার যা আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো।
মথুরাপুর আদর্শ ইয়াতিমখানার ছাত্র আজিজ মিয়া মাত্র দুই টাকায় দুপুরের খাবার পেয়ে বললেন, এটা আমার কাছে স্বপ্নের মত মনে হচ্ছে। দুই টাকায় খাবার পাবো এটা কখনও ভাবিনী।
খাবার বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি সাজিদ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জহুরুল ইসলাম, দুই টাকায় হাসি পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক মোঃ মেহেদী হাসান, মোঃ মনিরুল ইসলাম, মোঃ ওসমান গনিসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল সদস্যরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বপ্নচারু একাডেমি অব ফাইন আর্টস এর পরিচালক শাহিন চারুদেশ ও ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহমান চৌধুরী প্রমূখ।
স্বপ্নচারু একাডেমি অব ফাইন আর্টস এর পরিচালক শাহিন চারুদেশ বলেন, প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এর দুই টাকায় হাসি কর্মসূচির সার্বিক সফলতা কামনা করি এবং এই কার্যক্রম শুধুমাত্র ঝিনাইদহে নয় বরং পুরো দেশব্যাপী যেন চলমান থাকে এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহমান চৌধুরী বলেন, ছোট ছোট কোমলমতি শিশুদের এই মুখের হাঁসি যেন সদ্য ফোঁটা গোলাপের ন্যায় ফুটে উঠেছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জহুরুল ইসলাম জানান, অসহায় ইয়াতিম শিশু, শ্রমজীবী ও অসহায়রাও তাদের মতো করে আত্মসম্মান নিয়ে সমাজে বসবাস করছেন। সম্পূর্ণ ফ্রিতে খাবার দেয়া হলে তাদের আত্মসম্মানবোধে আঘাত করা হবে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিই ফ্রিতে না দিয়ে দুই টাকায় তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে। প্রগতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি সাজিদ মাহমুদ বলেন, প্রতিনিয়ত আমাদের কত টাকা তো এদিক-সেদিক খরচ হয়। আমাদের চারপাশে থাকা ইয়াতিম, শ্রমজীবি ছিন্নমূল পথশিশুদের জন্য কি আমরা এই সামান্য অর্থ ব্যয় করতে পারি না। আমরা মনে করি সমাজের পিচিয়ে পড়া এসব মানুষের সহযোগিতা করার জন্য অঢেল ধনসম্পদের চেয়ে সুন্দর মানসিকতাই বড়। এমন চিন্তা থেকে একদিন বন্ধু-বান্ধবের সাথে টোং দোকানের আড্ডা বাদ দিয়ে সেই টাকা অসহায় ইয়াতিম শিশুদের ও সুবিধাবঞ্চিতদের মুখে হাসি ফুটানোর প্রতিজ্ঞা করি। তারপর থেকেই আমাদের সংগঠনের পথচলা শুরু করি।