সাবেক ডিবিপ্রধান হারুনকে আটকের গুঞ্জন

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) হারুন অর রশীদকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আমি এখন বাসায়ই আছি।’

সোমবার(৫ আগস্ট) শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যায় রাষ্ট্রীয় একটি সংস্থা।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, কার নির্দেশে ডিবি প্রধান থাকা অবস্থায় হারুন অর রশীদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে আটকে রেখেছিলেন। তাদের কাছ থেকে জোর করে বিবৃতি আদায় করেছিলেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে নির্বিচারে ঘরে ঘরে ডিবি পুলিশ পাঠিয়ে মানুষ তুলে আনার কাজটি করেছেন। রাজনীতিকসহ জনগণের সঙ্গে বেপরোয়া আচরণ করেছেন সেটি জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ছয় সমন্বয়কের সঙ্গে দেখা করতে গেলে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজকে দেখা করতে দেননি অতিরিক্ত আইজিপি হারুন। তখন বলেছিলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া দেখা করা সম্ভব নয়। তাদের কবে ছাড়া হবে জানতে চাইলে বলেছিলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যখন নির্দেশ দেবে তখন ছাড়া হবে।

সেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কে সেটিও হারুনের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।

হারুন এডিশনাল এসপি থাকার সময় ২০১১ সালের ৬ জুলাই, সংসদ ভবনের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেছিলেন।

সূত্র: ইত্তেফাক




জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আজ মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বিকেলে রাষ্ট্রপতির প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করা হয়েছে।

এছাড়াও একই বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং ১ জুলাই ২০২৪ হতে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ও বিভিন্ন মামলায় আটককৃতদের মুক্তি দেওয়া শুরু হয়েছে এবং এরইমধ্যে অনেকে মুক্তি পেয়েছে।

এদিকে শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা চলছে। এ সরকার কেমন হবে—সে বিষয়ে প্রস্তাবনা দেবেন ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এরপরই চূড়ান্ত হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এর আগে গতকাল সোমবার দুপুরে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে মতামত নেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এরপর সন্ধ্যায় সেনাপ্রধান ও বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক হয়। সেখানে ২৪ ঘণ্টা বা দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনে সর্বসম্মতক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।




বিমানবন্দরে পলক আটক

সাবেক মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (০৬ আগস্ট) দুপুরে তাকে আটক করা হয়।

জানা গেছে, বিমানবন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে আটক করেছে। পরে তাকে হেফাজতে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি পাড়ি দেওয়ার জন্য তিনি বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে অপেক্ষায় ছিলেন পলক। এ সময় বিমানবন্দরের কর্মচারীরা তাকে ভিআইপি লাউঞ্জে আটকে রাখেন। পরে বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা এসে তাকে আটক করেন।

ছাত্রজনতার আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছিলেন পলক। তিনি আছেন কিনা তা নিয়েও নানা গুঞ্জন ছিল। এমন অবস্থার মধ্যে বিমানবন্দরে আটক হলেন তিনি।

সূত্র: কালবেলা




২ টি হোয়াটসঅ্যাপ একসঙ্গে ব্যবহার

তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে হোয়াটসঅ্যাপ বহুল ব্যবহৃত একটি যোগাযোগমাধ্যম। তাৎক্ষণিক বার্তা, ছবি আদান-প্রদানের পাশাপাশি অডিও-ভিডিও কলের সুযোগ থাকায় অনেকেই নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। অনেককেই একটির পরিবর্তে দুটো হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করতে দেখা যায়। সেটি অনেক সময় ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক কারণে হতে পারে। কারণ যেটাই হোক না কেন কখনো কখনো একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। একাধিক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার কষ্টকর, তেমনি ব্যয়বহুল।

তবে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা স্মার্টফোনে একই হোয়াটসঅ্যাপ থেকে একাধিক অ্যাকাউন্ট একসঙ্গে ব্যবহার করা যায়। একই অ্যাপে একসঙ্গে দু’টি হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের পদ্ধতি দেখে নেওয়া যাক। একই অ্যাপে একসঙ্গে দু’টি অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের জন্য প্রথমে স্মার্টফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রবেশ করে ওপরের ডানদিকে থাকা তিনটি ডট মেনুতে ট্যাপ করতে হবে। এরপর পপআপ বক্সে প্রদর্শিত অপশন থেকে ‘সেটিংস’ নির্বাচন করলেই পরের পৃষ্ঠায় প্রোফাইল নামের পাশে কিউআর কোড ও ড্রপডাউন মেনু দেখা যাবে।

এবার ড্রপডাউন মেনুতে ট্যাপ করে ‘অ্যাড অ্যাকাউন্ট’ অপশন নির্বাচন করে পরের পৃষ্ঠায় থাকা শর্তাবলির নিচে থাকা ‘অ্যাগ্রি অ্যান্ড কনটিনিউ’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর ফোন নম্বর লিখে নিচে থাকা নেক্সট বাটনে ট্যাপ করলেই একটি ছয় সংখ্যার কোড পাঠাবে হোয়াটসঅ্যাপ। কোডটি লেখার পর সেকেন্ডারি অ্যাকাউন্টের প্রোফাইলের অন্যান্য তথ্য যুক্ত করলেই নতুন অ্যাকাউন্ট চালু হয়ে যাবে। পরে যেকোনো সময় ড্রপডাউন মেনু থেকে কাঙ্ক্ষিত অ্যাকাউন্ট নির্বাচন করে সেই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা যাবে।
সূত্র: ইত্তেফাক




চুয়াডাঙ্গায় টগর এমপির বাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও জনতার উল্লাস

চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদায় বিজয়ের আনন্দ আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ এমপি সহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বাড়ি ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে।  গতকাল সোমবার দুপুর ৩ টার পর থেকে এই ঘটনা ঘটে।

দামুড়হুদা উপজেলায় সাধারণ শিক্ষার্থী জনসাধারণের রাস্তায় নেমে এসে বিজয়ের আনন্দ আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ করেছে। আনন্দ মিছিল শেষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক আবিদ হাসান রিফাত, যুগ্ন আহবায়ক সাদ্দাম সাকিব নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা দর্শনা সরকারি কলেজ শহীদ মিনারে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে। এই ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নীরবতা ও শোক পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে বিক্ষুপ্ত জনতারা চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগরের বাস ভবন সহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের এমপি আলী আজগার টগরের বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতা ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করেছে। ঘটনার বিবরনে জানাযায়, বৈষম্য বিরোধী সাধারণ ছাত্র/ছাত্রী সমাজের উদ্যোগে সরকার পদত্যাগের ১ দফা দাবি পৃরন হবার সাথে সাথে ঢাকা গনভবন দখল করে নেয় ছাত্র ছাত্রীরা এরপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সাথে সাথে সারা বাংলাদেশের ন্যায় বিক্ষুব্ধ জনতা চুয়াডাঙ্গা আসনের এমপি আলী আজগার টগরের দর্শনাস্থ আকাশ টাওয়ারের মার্কেট ও আলীসান বাড়িতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়। আগুনের লেলিহান শিখা দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকলে দর্শনা বাসির মধ্যে আতকং ছড়িয়ে পড়ে।

সরজমিনে দেখা যায়, জনগনের যে একদফা দাবি পৃরন হবার সাথে ও প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালাবার পরপরই দর্শনাসহ আশপাশ এলকায় মিষ্টি বিতরন করতে দেখা যায়। অপরদিকে, দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সহ সম্পাদক, আব্দুল মান্নানের সিঙ্গার শো রুম বিক্ষুব্ধ জনতা দোকান ভংচুর করে। পরে দর্শনা দক্ষিনচাদপুর ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল হাকিমের দোকান ভাংচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এরপর দর্শনা আকন্দবাড়িয়া শেখ পাড়ায় ওমর বাড়ি ভাংচুর করে। পরে প্রায় ৪ গ্রামবাসি মিলে সিংনগরের বিল দখল করে মাছ ধরা শুরু করেছে বলে জানা গেছে।




নড়াইলে মাশরাফির বাড়িতে আগুন

জাতীয় সংসদের হুইপ নড়াইল-২ সংসদ সদস্য ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার নড়াইলের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের বাসভবন ও জেলা আওয়ামী কার্যালয়েও আগুন দেওয়া হয়েছে।

গতকাল সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বিক্ষুব্ধ জনতা নড়াইলে মাশরাফির বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। এক পর্যায়ে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

মাশরাফি ছাড়াও নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস ও সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলুর বাসভবন এবং জেলা আওয়ামী কার্যালয়ে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে জাতীয় দলের সাবেক ও বর্তমান অনেক ক্রিকেটার প্রতিক্রিয়া জানালেও নিশ্চুপ ছিলেন মাশরাফি। এ নিয়ে অনেক আগে থেকেই তাকে নিয়ে সমালোচনা চলছিল।

সূত্র: ইত্তেফাক




দামুড়হুদায় শেখ হাসিনার পদত্যাগে বিএনপির আনন্দ মিছিল

দামুড়হুদায় শেখ হাসিনা’র পদত্যাগে বিএনপির আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ৪ টার দিকে দামুড়হুদা থানার মোড় এলাকা থেকে সর্বস্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ মিছিল টি বের করে দামুড়হুদার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

জানাগেছে, গতকাল দুপুরের পরে মূলত টেলিভিশনে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন, সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিএনপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত হয়ে দামুড়হুদা থানার মোড় এলাকায় জমা হতে থাকে। পরে থানার মোড় এলাকা থেকে বিশাল এক আনন্দ মিছিল বেড় হয়ে উপজেলার প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল টি শেষ হয়। এসময় কোথায় কোন প্রশাসনের দেখা মেলেনি। তবে উপজেলা বঙ্গবন্ধু মোড়াল চত্বর ভাংচুর করা হয়। থানার একটি গাড়ীকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুঁড়া হয়। এতে কোন পুলিশ হতাহত হয়নি। গাড়ীর সামনের কাঁচ ভেঙ্গে যাই।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার সব গুলো ইউনিয়নে বিএনপি’র আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় এবং তাতে সর্ব স্তরের হাজার হাজার মানুষ অংশ গ্রহণ করে। কোথাও তেমন কোন অপৃতিকর ঘটনা ঘটেনি। দামুড়হুদা দর্শনা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের রাস্তায় যে তোরণ গুলো ছিলো সেগুলো ভেঙ্গে দিয়েছে আনন্দ মিছিলে অংশগ্রহণ কারীরা। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশে আওয়ামী লীগের বেনার ফেস্টুন ছিড়ে ফেলা হয়েছে। সর্বশেষ দামুড়হুদা, কাঁঠাল তলা, ডুগডুগি, কার্পাসডাঙ্গা, নতিপোতা ও দর্শনায় বিএনপির বিশাল আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভাঙ্গা উল্লাসে মানুষ কে মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে।




মেহেরপুরে বিজয় উল্লাস, দূর্বত্তদের হামলায় ব্যাপক ভাংচুর

মেহেরপুর শহরসহ জেলা জুড়ে চলছে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতা হস্তান্তর ও দেশ ছেড়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েন।

বিকাল থেকে খন্ড খন্ড মিছিল শুরু হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে। রাস্তায় নেমে এসে উল্লাসে মাতে মানুষ। ছাত্র ছাত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ বিজয় মিছিল ও উল্লাস করে।

মিছিল শেষ করেই একদল দূবৃত্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের দোদুলের বাসভবনসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ঘটায়। দফায় দফায় তারা জেলা শহরের নেতাকর্মীদের বাড়ি ও দোকানে ভাংচুর চালায়।

এসময় জেলা আওয়ামী লীগের অফিস, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপির বাসভবন, বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খোকনের ব্যক্তিগত অফিস, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ইয়ারুল ইসলামের অফিস, মেহেরপুর জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি) পল্লব ভট্টাচার্যের বাসভবন, এসকন অফিস, মেহেরপুর প্রেস ক্লাব, ভাইভাই ফ্যাশন, লুকস ফ্যাশান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুস ছামাদ বাবলু বিশ্বাস, যুবলীগ নেতা নাহিদের বাড়ি, আরোহী বস্ত্রালয়, রশিদা ইলেকট্রনিকস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, ঠিকাদার মাহাবুবের বাড়ি, জোসনা বেকারিতে ভাংচুর অগ্নিসংযোগ চালানো হয়।

এদিকে গাংনী উপজেলা শহরের হাসপাতাল বাজার এলাকার মেহেরপুর-২ আসনের এমপি ডাক্তার এএসএম নাজমুল হক সাগরের এ্যাডভান্সড মেড কেয়ার ক্লিনিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ খালেকের বাসভবন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান মুকুলের রাজনৈতিক কার্যালয়, গাংনী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক হাসানের চৌগাছার বাড়িতে, গাংনী পৌরসভার কর্মচারি টিক্কার বনবিভাগ পাড়ার বাড়ি, সাবেক ছাত্রলীগের নেতা শাহাদুজ্জামান শিপুর ব্যক্তিগত অফিস, গাংনী উপজেলা পরিষদের ভিতরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর মুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে।

মুজিবনগরের দারিয়াপুরে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে, গাংনী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতার বাড়িতে বাড়িতে বিএনপি জামায়াতের লোকজন গিয়ে খোঁজ করছেন। আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ, যুবলীগের নেতা কর্মীরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে, রাত ৯টার দিকে সেনাবাহিনী টহল শুরু করলে দূবৃত্তরা ভাংচুর বন্ধ করে এলাকা ত্যাগ করে।




কুষ্টিয়ায় দিনব্যাপী থেমে থেমে সংঘর্ষ: পুলিশের গুলিতে নিহত-৭

কুষ্টিয়ায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে সাতজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত দুই শতাধিক। তারা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও আদ্বদীন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

গতকাল সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেলের দিকে থানাপাড়ায় ও মজমপুর এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। আহতরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিহতরা হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর এলাকার নওশের আলীর ছেলে বাবু ইসলাম (৩৫), একই এলাকার কফিলউদ্দিনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম(৪২), কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়া এলাকার লোকমানের ছেলে আবদুল্লাহ (১৪), ইউসুফ আলী (৫০), দহকুলা এলাকার ওসামা (২৬), বাকি দুজন অজ্ঞাত।

গতকাল সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া মডেল থানা ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হামলাকে কেন্দ্র করে পুলিশ গুলি চালালে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে শহরের মজমপুর রেলগেট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এ সময় পুলিশ কয়েক দফা কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। বেলা দেড়টার পর আন্দোলনকারীদের অপর একটি অংশ কুষ্টিয়া মডেল থানায় হামলা চালায়।

এসময় পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে আন্দোলনকারীদের হটাতে ব্যর্থ হয়। পরে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি করা শুরু করে। পুলিশের মুহুর্মুহু গুলি, কাঁদানে গ্যাসের শেলের শব্দে থানার আশপাশের এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতেও আন্দোলনকারীরা পিছু হটেননি।

খবর পেয়ে সেনাসদস্যরা এসে মডেল থানার সব পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান। এর পরপরই আন্দোলনকারীরা থানার ভবনে আগুন লাগিয়ে দেন। এতে থানার ভেতরের সব আসবাব, জরুরি রেকর্ডসহ অন্যান্য দ্রব্য পুড়ে যায়। এ ছাড়া ভবনের সামনে থাকা ৮-১০টি মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেট কার পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে বেলা দুইটার পর আন্দোলনকারীদের আরেকটি অংশ কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনসে ঢুকে পড়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও শটগানের গুলি চালায়। এতে অনেক মানুষ গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা সাতজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের চিকিৎসায় রক্তের জন্য হাহাকার চলছে। হতাহত ব্যক্তিদের স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতালের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

কুষ্টিয়ার সমন্বয়ক তুষার আহমেদ তুহিন জানান, সোমবার বিকেলের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষুব্ধরা থানাপাড়ার মোড় ও মজমপুর মোড়ে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশের গুলিতে থানাপাড়ায় ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা গেছেন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও চারজন মারা যান। এ ঘটনায় দুই শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে সোমবার সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারী ও পুলিশের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। কুষ্টিয়া শহরের থানার মোড়, মজমপুর, সাদ্দাম বাজার, এনএস রোড়, ছয় রাস্তার মোড়, পাঁচ রাস্তার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিকেলের দিকে মজমপুর ও থানাপাড়ায় আন্দোলনকারীদের গুলি করে পুলিশ। এতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ ৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক।

এর আগে আন্দোলনকারীরা কুষ্টিয়া ট্রাফিক অফিস, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলীর বাড়ী, পৌরসভা ভাংচুর চালায় এবং সড়কের বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।

পুলিশ ধাওয়া ও রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করলে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন অলিগলিতে আশ্রয় নেন। বিকেলের দিকে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে পুলিশ লাইনসে চলে যায়। পুলিশ পিছু হটলে আন্দোলনকারীরা থানায় হামলা করে। থানা কার্যালয়, ওসির বাসভবন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে এলে তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও চারজন মারা গেছেন। মোট সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

অন্যদিকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি তাইজাল আলী খান, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মানব চাকী, কুষ্টিয়া–২ আসনের সংসদ সদস্য কামারুল আরেফিনসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা–কর্মীদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে।

আওয়ামী সমর্থকদের কয়েকটি দোকানে লুটপাট হয়েছে। এ ছাড়া কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও ভাস্কর্য এস্কেভেটর দিয়ে গুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।




‘আসুন দেশকে বাঁচাতে একযোগে কাজ করি’

জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেছেন, আসুন দেশকে বাঁচাতে একযোগে কাজ করি। পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখি।

সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১১টা ২২ মিনিটে দেশের সকল গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ভাষণে তিনি বলেন, দেশে চলমান অস্থিরতা, বিশৃঙ্খলা ও লুটতরাজ বন্ধে উদ্যোগ নিতে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিও আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণের জানমাল রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকেও নির্দেশ দিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে উদ্যোগ নেওয়া হবে। সংবিধান অনুযায়ী অনতিবিলম্বে সংসদ ভেঙে দেওয়া হবে।এছাড়া ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আটক হওয়া ছাত্রদের মুক্তি দেওয়া হবে। যেসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, এতে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং বিচার করা হবে এবং। দেশের এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সকল কলকারখানা খুলে দেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসন সহ সকলকে আহ্বান জানাই। অফিস-আদালতও চলবে। এছাড়া ছাত্র নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের সময় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: ইত্তেফাক