যোগদানের তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেন খারিজের (নামজারি) কাজ শুরু না করায় চরম বিপাকে পড়েছে ভূমি মালিকরা।
দিনের পর দিন ভুমি অফিসে ধরণা দিয়েও নামজারি না করতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে এলাকাবাসি।
জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই মাসের ১০ তারিখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেন গাংনীতে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে জুলাই মাসের শেষ দিন পর্যন্ত কোন নামজারি করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
নামজারি না হওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে নিত্য নতুন জটিলতা। এতে বাড়ছে ভূমি বিরোধ ও নতুন নতুন দেওয়ানি মামলার।
এদিকে নামজারির আবেদন পড়ে থাকায় ভূমি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলাবাসী। নামজারি, ভূমি উন্নয়নকর পরিশোধসহ নানা ধরনের সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে হচ্ছে।
নামজারি সহ ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেনের সাক্ষাৎ না পাওয়ার অভিযোগ করেছে বেশ কয়েকজন ভূমি মালিক।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নামজারি না হওয়ার কারনে ভূমি রেজিস্ট্রিও করতে পারছে না অনেকে। নামজারি, মিস কেসসহ বিভিন্ন সেবা পেতে দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে ভূমি অফিসের বারান্দা।
সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক কামরুজ্জামান বলেন, নতুন এসি ল্যা- স্যার জয়েন করে খারিজ (নামজারি) করেননি। খারিজ না হওয়ার জমি রেজিস্ট্রি কম হচ্ছে এবং মানুষের খুব ভোগান্তি হচ্ছে। গাংনী একটি বড় উপজেলা এভাবে খারিজ বন্ধ হয়ে থাকা উচিৎ নয়।
একটি সূত্রে জানা গেছে, নামজারি বন্ধ থাকায় গত কয়েকদিনেই ১২শ ৫০ টি ফাইলের স্তুপ জমা হয়েছে। এসি ল্যা- নামজারি শুরু না করায় গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা এসি ল্যাণ্ডের উপর অসন্তোশ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।
কাজিপুর গ্রামের আব্দুল করিম বলেন, জমি বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশে পাঠাবেন কিন্তু নাম জারি না হওয়ার কারনে জমি রেজিষ্টি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন তিনি।
তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের রফিবুল ইসলাম বলেন,বাবা মারা গেছে। বাবার জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ চলছে। নামজারি করতে না পারায় বন্টননামা রেজিস্ট্রেশন করা যাচ্ছেনা। তাই নাম জারি করা হলে দ্রুত বিরোধ নিস্পত্তি হবে।
ধানখোলা গ্রামের খবির উদ্দীন বলেন, তিনি সৌদি আরবে থাকেন সম্প্রতি বাড়িতে এসেছেন। পারিবারিক কারনে একটি জমি বিক্রি করতে হবে। নামজারি না থাকার কারনে রেজিষ্টি করতে পারছেন না। তিনি আগামী ১২ আগষ্ট রাতে সৌদ্দি আরব চলে যাবেন।
নামজারি না করার বিষয়ে জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেন কথা বলতে রাজি হননি।
জেলা প্রশাসক শামীম হাসান বলেন, নামজারি বন্ধের বিষয়টি তিনি অবগত হওয়ার পর দ্রুত নামজারি করার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।