দামুড়হুদায় শেখ হাসিনার পদত্যাগে বিএনপির আনন্দ মিছিল

দামুড়হুদায় শেখ হাসিনা’র পদত্যাগে বিএনপির আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ৪ টার দিকে দামুড়হুদা থানার মোড় এলাকা থেকে সর্বস্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ মিছিল টি বের করে দামুড়হুদার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

জানাগেছে, গতকাল দুপুরের পরে মূলত টেলিভিশনে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন, সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিএনপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত হয়ে দামুড়হুদা থানার মোড় এলাকায় জমা হতে থাকে। পরে থানার মোড় এলাকা থেকে বিশাল এক আনন্দ মিছিল বেড় হয়ে উপজেলার প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল টি শেষ হয়। এসময় কোথায় কোন প্রশাসনের দেখা মেলেনি। তবে উপজেলা বঙ্গবন্ধু মোড়াল চত্বর ভাংচুর করা হয়। থানার একটি গাড়ীকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুঁড়া হয়। এতে কোন পুলিশ হতাহত হয়নি। গাড়ীর সামনের কাঁচ ভেঙ্গে যাই।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার সব গুলো ইউনিয়নে বিএনপি’র আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় এবং তাতে সর্ব স্তরের হাজার হাজার মানুষ অংশ গ্রহণ করে। কোথাও তেমন কোন অপৃতিকর ঘটনা ঘটেনি। দামুড়হুদা দর্শনা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের রাস্তায় যে তোরণ গুলো ছিলো সেগুলো ভেঙ্গে দিয়েছে আনন্দ মিছিলে অংশগ্রহণ কারীরা। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশে আওয়ামী লীগের বেনার ফেস্টুন ছিড়ে ফেলা হয়েছে। সর্বশেষ দামুড়হুদা, কাঁঠাল তলা, ডুগডুগি, কার্পাসডাঙ্গা, নতিপোতা ও দর্শনায় বিএনপির বিশাল আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভাঙ্গা উল্লাসে মানুষ কে মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে।




মেহেরপুরে বিজয় উল্লাস, দূর্বত্তদের হামলায় ব্যাপক ভাংচুর

মেহেরপুর শহরসহ জেলা জুড়ে চলছে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতা হস্তান্তর ও দেশ ছেড়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েন।

বিকাল থেকে খন্ড খন্ড মিছিল শুরু হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে। রাস্তায় নেমে এসে উল্লাসে মাতে মানুষ। ছাত্র ছাত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ বিজয় মিছিল ও উল্লাস করে।

মিছিল শেষ করেই একদল দূবৃত্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের দোদুলের বাসভবনসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ঘটায়। দফায় দফায় তারা জেলা শহরের নেতাকর্মীদের বাড়ি ও দোকানে ভাংচুর চালায়।

এসময় জেলা আওয়ামী লীগের অফিস, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপির বাসভবন, বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক খোকনের ব্যক্তিগত অফিস, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ইয়ারুল ইসলামের অফিস, মেহেরপুর জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি) পল্লব ভট্টাচার্যের বাসভবন, এসকন অফিস, মেহেরপুর প্রেস ক্লাব, ভাইভাই ফ্যাশন, লুকস ফ্যাশান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুস ছামাদ বাবলু বিশ্বাস, যুবলীগ নেতা নাহিদের বাড়ি, আরোহী বস্ত্রালয়, রশিদা ইলেকট্রনিকস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, ঠিকাদার মাহাবুবের বাড়ি, জোসনা বেকারিতে ভাংচুর অগ্নিসংযোগ চালানো হয়।

এদিকে গাংনী উপজেলা শহরের হাসপাতাল বাজার এলাকার মেহেরপুর-২ আসনের এমপি ডাক্তার এএসএম নাজমুল হক সাগরের এ্যাডভান্সড মেড কেয়ার ক্লিনিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ খালেকের বাসভবন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান মুকুলের রাজনৈতিক কার্যালয়, গাংনী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক হাসানের চৌগাছার বাড়িতে, গাংনী পৌরসভার কর্মচারি টিক্কার বনবিভাগ পাড়ার বাড়ি, সাবেক ছাত্রলীগের নেতা শাহাদুজ্জামান শিপুর ব্যক্তিগত অফিস, গাংনী উপজেলা পরিষদের ভিতরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর মুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে।

মুজিবনগরের দারিয়াপুরে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে, গাংনী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতার বাড়িতে বাড়িতে বিএনপি জামায়াতের লোকজন গিয়ে খোঁজ করছেন। আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ, যুবলীগের নেতা কর্মীরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে, রাত ৯টার দিকে সেনাবাহিনী টহল শুরু করলে দূবৃত্তরা ভাংচুর বন্ধ করে এলাকা ত্যাগ করে।




কুষ্টিয়ায় দিনব্যাপী থেমে থেমে সংঘর্ষ: পুলিশের গুলিতে নিহত-৭

কুষ্টিয়ায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে সাতজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত দুই শতাধিক। তারা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও আদ্বদীন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

গতকাল সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেলের দিকে থানাপাড়ায় ও মজমপুর এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। আহতরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিহতরা হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর এলাকার নওশের আলীর ছেলে বাবু ইসলাম (৩৫), একই এলাকার কফিলউদ্দিনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম(৪২), কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়া এলাকার লোকমানের ছেলে আবদুল্লাহ (১৪), ইউসুফ আলী (৫০), দহকুলা এলাকার ওসামা (২৬), বাকি দুজন অজ্ঞাত।

গতকাল সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া মডেল থানা ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হামলাকে কেন্দ্র করে পুলিশ গুলি চালালে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে শহরের মজমপুর রেলগেট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এ সময় পুলিশ কয়েক দফা কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। বেলা দেড়টার পর আন্দোলনকারীদের অপর একটি অংশ কুষ্টিয়া মডেল থানায় হামলা চালায়।

এসময় পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে আন্দোলনকারীদের হটাতে ব্যর্থ হয়। পরে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি করা শুরু করে। পুলিশের মুহুর্মুহু গুলি, কাঁদানে গ্যাসের শেলের শব্দে থানার আশপাশের এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতেও আন্দোলনকারীরা পিছু হটেননি।

খবর পেয়ে সেনাসদস্যরা এসে মডেল থানার সব পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান। এর পরপরই আন্দোলনকারীরা থানার ভবনে আগুন লাগিয়ে দেন। এতে থানার ভেতরের সব আসবাব, জরুরি রেকর্ডসহ অন্যান্য দ্রব্য পুড়ে যায়। এ ছাড়া ভবনের সামনে থাকা ৮-১০টি মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেট কার পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে বেলা দুইটার পর আন্দোলনকারীদের আরেকটি অংশ কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনসে ঢুকে পড়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও শটগানের গুলি চালায়। এতে অনেক মানুষ গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা সাতজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের চিকিৎসায় রক্তের জন্য হাহাকার চলছে। হতাহত ব্যক্তিদের স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতালের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

কুষ্টিয়ার সমন্বয়ক তুষার আহমেদ তুহিন জানান, সোমবার বিকেলের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষুব্ধরা থানাপাড়ার মোড় ও মজমপুর মোড়ে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশের গুলিতে থানাপাড়ায় ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা গেছেন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও চারজন মারা যান। এ ঘটনায় দুই শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে সোমবার সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারী ও পুলিশের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। কুষ্টিয়া শহরের থানার মোড়, মজমপুর, সাদ্দাম বাজার, এনএস রোড়, ছয় রাস্তার মোড়, পাঁচ রাস্তার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিকেলের দিকে মজমপুর ও থানাপাড়ায় আন্দোলনকারীদের গুলি করে পুলিশ। এতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ ৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক।

এর আগে আন্দোলনকারীরা কুষ্টিয়া ট্রাফিক অফিস, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলীর বাড়ী, পৌরসভা ভাংচুর চালায় এবং সড়কের বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।

পুলিশ ধাওয়া ও রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করলে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন অলিগলিতে আশ্রয় নেন। বিকেলের দিকে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে পুলিশ লাইনসে চলে যায়। পুলিশ পিছু হটলে আন্দোলনকারীরা থানায় হামলা করে। থানা কার্যালয়, ওসির বাসভবন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে এলে তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও চারজন মারা গেছেন। মোট সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

অন্যদিকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি তাইজাল আলী খান, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মানব চাকী, কুষ্টিয়া–২ আসনের সংসদ সদস্য কামারুল আরেফিনসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা–কর্মীদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে।

আওয়ামী সমর্থকদের কয়েকটি দোকানে লুটপাট হয়েছে। এ ছাড়া কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও ভাস্কর্য এস্কেভেটর দিয়ে গুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।




‘আসুন দেশকে বাঁচাতে একযোগে কাজ করি’

জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেছেন, আসুন দেশকে বাঁচাতে একযোগে কাজ করি। পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখি।

সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১১টা ২২ মিনিটে দেশের সকল গণমাধ্যমে প্রচারিত এই ভাষণে তিনি বলেন, দেশে চলমান অস্থিরতা, বিশৃঙ্খলা ও লুটতরাজ বন্ধে উদ্যোগ নিতে সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিও আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণের জানমাল রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকেও নির্দেশ দিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে উদ্যোগ নেওয়া হবে। সংবিধান অনুযায়ী অনতিবিলম্বে সংসদ ভেঙে দেওয়া হবে।এছাড়া ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আটক হওয়া ছাত্রদের মুক্তি দেওয়া হবে। যেসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, এতে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং বিচার করা হবে এবং। দেশের এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সকল কলকারখানা খুলে দেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসন সহ সকলকে আহ্বান জানাই। অফিস-আদালতও চলবে। এছাড়া ছাত্র নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের সময় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: ইত্তেফাক




গাংনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় পাখিভ্যান চালক নিহত

স্যালো ইঞ্জিন চালিত অবৈধ স্ট্রীয়ারিং গাড়ির ধাক্কায় লিটন (৩৮) নামের এক পাখিভ্যান চালক নিহত হয়েছেন।
নিহত লিটন গাংনী উপজেলার হাড়িয়াদহ গ্রামের ইয়াসিন আলীর ছেলে।

আজ সোমবার (৫ আগষ্ট) বিকালের দিকে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কের গাংনী উপজেলার ছাতিয়ান বাসস্ট্যান্ডের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

তবে, অবৈধ যান স্ট্রীয়ারিং গাড়ির চালক কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার নওদা আজমপুর গ্রামের হামজাদ আলীর ছেলে জনি মিয়াকে জনগণ আটক করে রাখলেও কঁমারীডাঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সোয়েবুর রহমান তাকে ছেড়ে দেন।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাখিভ্যান চালক লিটন বামন্দী থেকে ছাতিয়ানের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় পেছন দিক থেকে দ্রুতগামী স্ট্রিয়ারিং গাড়িটি গিয়ে তাকে ধাক্কা দিলে রাস্তার উপর পড়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মারা যান তিনি।

খবর পেয়ে কুমারীডাঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সোয়েবুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌছান। পরে অজ্ঞাত কারনে স্ট্রীয়ারিং এর ঘাতক চালক জনি মিয়াকে ছেড়ে দেন।

এসআই সোয়েবুর রহমান জানান, বিষয়টি উভয় পক্ষই মিমাংসা করে ফেলাই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।




গাংনীতে ভাগ্নেকে ধারালো হাসুয়ার কোপে মামা হত্যা

মায়ের সম্পত্তির দখল চাওয়ায় ভাগ্নে জামারুল ইসলাম (২৬) কে ধারালো হাসুয়া দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করলো মামা।

আজ সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া গ্রামে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ঘাতক মামা আবুল কালাম পালিয়ে গেছে।

নিহত জামারুল ইসলাম হিজলবাড়িয়া গ্রামের মধ্যপাড়া এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে। সে সম্প্রতি সৌদি প্রবাস ফেরৎ। বর্তমানে পেশায় ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যান চালক।

ঘাতক মামা আবুল কালাম একই গ্রামের সাবদাল বিশ্বাসের ছেলে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে গাংনী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌছেছেন।

নিহতের বোন সাজেদা খাতুন জানান, আমার নানা সাবদাল বিশ্বাস ও নানী মারা গেছেন অনেক আগে। মা মমতাজ খাতুন নানা নানীর কাছে থেকে বাড়ির জমি ২ কাঠা ও মাঠান জমি ৩ কাঠা ভাগ পেয়েছে। জমি ভাগ হলেও মামা আবু কালাম জমির দখল দেননি দীর্ঘদিন। আজকে আমার ভাই জামারুল ইসলাম জমির দখলদার মামা আবুল কালামের কাছে জমি দখল দেওয়ার অনুরোধ করতে যান। এসময় মামা ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো হাসুয়া দিয়ে বাম পায়ে একটি কোপ মেরে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমাইয়া ইসলাম পাপড়ি তাকে মৃতু ঘোষণা করেন।

সুমাইয়া ইসলাম পাপড়ি জানান, অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে মারা গেছেন তিনি।

গাংনী থানার এসআই কামরুজ্জামান বলেন, নিহত জামারুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে। তিনি আরও বলেন, ঘাতক আবুল কালামকে আটক করতে পুলিশ অভিযানও চালাচ্ছে।




সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে সেনাপ্রধান

দেশের বর্তমান সংকট নিরসনে সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

এর আগে সোমবার (৫ আগস্ট) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানায়, দুপুর ২টায় জাতির উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন সেনাপ্রধান। পরে দুই ঘণ্টা পিছিয়ে বিকেল ৪ টায় সেনাপ্রধান বক্তব্য রাখবেন বলে জানানো হয়।

জানা গেছে, এ বৈঠক চলছে সেনা সদর দপ্তরে। বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু সেনাপ্রধানের ডাক পেয়েছেন।

বৈঠকে বিএনপি ও জামায়াতের ইসলামীর নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দুপুরের দিকে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

বার্তা সংস্থা এ এফপি জানিয়েছে, দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে শেখ হাসিনা উড্ডয়ন করেন। এ সময় তার ছোট বোন শেখ রেহানা সঙ্গে ছিলেন।

শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। শেখ হাসিনা যাওয়ার আগে একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি সে সুযোগ পাননি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তারা হেলিকপ্টারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।

সূত্র: কালবেলা




অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে : সেনাপ্রধান

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি একথা বলেন।

সেনাপ্রধান বলেন, রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল চলছে। একটি অন্তবর্তী সরকার গঠন করা হবে। সব হত্যার বিচার হবে। সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখেন। আমরা রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।

জনগণের উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেন, দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখেন। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখেন, একসঙ্গে কাজ করি। দয়া করে সাহায্য করেন। মারামারি সংঘাত করে আর কিছু পাব না। সংঘাত থেকে বিরত থাকুন। সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়বো।

কোন কোন রাজনৈতিক দল সঙ্গে বৈঠক করেছেন—সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আফিস নজরুল ও জোনায়েদ সাকিও বৈঠকে ছিলেন।

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, আমরা এখন বঙ্গবভনে যাব। সেখানে অন্তবর্তী সরকার গঠনের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হবে। তিনি ছাত্রদের শান্ত হওয়ার পরামর্শ দেন।




গণভবনে সাধারণ মানুষের ঢল

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘিরে গণভবনে ঢুকে গেছে লাখো লাখো মানুষ। করছেন উচ্ছ্বাস।

সোমবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিকেল ৩টার দিকে গণভবনে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা।

সোমবার (৫ আগস্ট) মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। প্রথমে সেনাবাহিনী বাধা দেয়। কিন্তু আন্দোলনকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর হাজার হাজার বিক্ষোভকারী গণভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন।

এরপর দুপুর পর গণভবন দখল করেন আন্দোলনকারীরা। গণভবনে প্রবেশ করে বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে উল্লাস করছেন তারা।
এদিকে উত্তরায় দুপুরের দিকে আন্দোলনকারীরা আশপাশের গলি থেকে মূল সড়কের দিকে আসতে থাকেন। এ সময় উত্তরা-আজমপুর মূল সড়কে তারকাঁটার ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তায় আটকে রাখে সেনাসদস্যরা। মূল সড়কে অবস্থান নিয়ে তারা আন্দোলনকারীদের সরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

প্রায় আধাঘণ্টা পাশের সড়কে বিক্ষোভ করার পর একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা মূল সড়কে উঠে আসেন। পরে তারা শাহবাগ অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন।

রামপুরা-বনশ্রী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। তবে সেই সংঘর্ষের মধ্যেও তারা শাহবাগ অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।

এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে শাহবাগ অভিমুখে জনতার ঢল নেমেছে বলে জানিয়েছেন সময় সংবাদের প্রতিনিধিরা




পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা ও রেহানা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন বলে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। তিনি ইতোমধ্যে দেশও ছেড়েছেন। সাথে তার বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

সোমবার (৫ আগস্ট) বেলা আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার শেখ হাসিনাকে নিয়ে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তারা হেলিকপ্টারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।

এদিকে দেশের নেতৃবৃন্দের সাথে সেনাপ্রধানের আলোচনা চলছে।

বর্তমান সংকট নিরসনে দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআরের পরিচালক শাম্মী আহমেদ। তিনি বিবিসিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা গণভবন থেকে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। শেখ হাসিনা যাওয়ার আগে একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি সে সুযোগ পাননি।

সূত্র: ইত্তেফাক