চুয়াডাঙ্গায় নিরাপদ সড়ক চাই দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত

‘ছাত্রজনতার অঙ্গীকার, নিরাপদ সড়ক হোক সবার’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) দিবস পালন করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টায় নিসচার চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আয়োজনে এই দিবসটি পালনসহ র‌্যালি ও সমাবেশ করা হয়।

এসময় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বর থেকে একটি র‌্যালি বের হয়ে শহরের কোর্ট মোড় ঘুরে একই স্থানে এসে র‌্যালি শেষ করা হয়। ওই সময় চুয়াডাঙ্গা নিসচার দিবসটি সফল করতে র‌্যালিতে অংশনেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজানুর রহমান। এরপর এই দিবসের র‌্যালি শেষ করে সংগঠনটির সভাপতি এ্যাড. মানিক আকবরের সভাপতিত্বে সমাবেশ সভা করা হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, সড়ক যেন হয় শান্তির, মৃত্যুর নয়। তাই সকলকে সড়কের নিয়ম মেনে চলাচল করতে হবে। সড়কের চলাচলের মোবাইল ফোনে কথা বলা যাবে না। এতে দূর্ঘটনার ঝুকি থাকে। ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক, অবৈধ যানবাহন সড়ক নিরাপত্তার যে ঝুঁকি তৈরি করে, সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক তা উপলব্ধি করে এ থেকে বেরিয়ে আসতে পারলে নিরাপদ সড়কের প্রত্যাশা পূরণ অনেকটাই সহজ হবে। প্রায় তিন দশক আগে এই দিনে বান্দরবানে শুটিংয়ে থাকা স্বামী ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের অদূরে চন্দনাইশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন জাহানারা কাঞ্চন। সেই থেকে নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করে আসছেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। ‘পথ যেন হয় শান্তির, মৃত্যুর নয়’ এই স্লোগান নিয়ে গড়ে তোলেন সামাজিক সংগঠন-নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সাল থেকে দেশে দিবসটি জাতীয় ভাবে পালন হচ্ছে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচার) সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেন, সহ-সভাপতি কানিজ সুলতানা, সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম-সম্পাদক কামরুজ্জামান সেলিম, জামান আখতার, শামিম আহমেদ বিপ্লব, সমাজকল্যান ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মামুন মোল্লা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক তানজিলা মিনি, দপ্তর সম্পাদক শেখ লিটন, সদস্য ইলিয়াস হোসেন, বিজন, মাজেদুল, ওবাইদুল ইসলাম তুহিন সহ অন্যান্যরা।




মুজিবনগরে গ্রাম আদালত প্রকল্পের অগ্রবর্তী পরিদর্শন

মেহেরপুরের মুজিবনগরে গ্রাম আদালত প্রকল্পের অগ্রবর্তী পরিদর্শন করেছেন জাতীয় প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বিভাস চক্রবর্তী।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শনকালে ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা, হিসাব সহকারী ও অন্যান্য মেম্বারদের সাথে গ্রাম আদালত এর কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন। এবং মামলার লতি পর্যবেক্ষণ, একলাস পরিদর্শন করেন।

এ সময় গ্রাম আদালতের সেবা পেয়েছে এমন উপকার ভোগীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন।

পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর শংকর পাল, গ্রাম আদালত ইউএনডিপির প্রজেক্ট এনালিস্ট শরিফা পারভীন, গ্রাম আদালত বাস্তবায়ন কমিটির জেলা ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান, মুজিবনগর উপজেলা সমন্বয়কারী শাকিলুজ্জামান, প্রকল্প সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম।

পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলামের সাথে গ্রাম আদালতের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।




মুজিবনগরে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত

মুজিবনগরে উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের উদ্যোগে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ভবেরপাড়া গ্রামে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের একটি বাড়ি একটি খামার সমিতির উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উঠান বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাইরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহেনাজ।

উঠান বৈঠকে উপস্থিত মহিলাদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি বলেন, আপনাদের সন্তানদের দেখে শুনে রাখবেন বর্তমান সমাজে অনলাইন জুয়া, মাদক এবং বাল্যবিবাহে বিস্তার ঘটছে এগুলো থেকে আপনি দূরে থাকবেন আপনার সন্তানকেও থেকে দূরে রাখবেন। ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে আপনাদের সন্তানদের মোটর বাইক কিনে দিবেন না কারণ মোটরবাইকে দুর্ঘটনা ঘটলে আপনার সন্তানদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে এমনকি আপনি আপনার সন্তানকেও হারাতে পারেন তাই তাদেরকে বোঝাবেন এবং তাদের প্রতি খেয়াল রাখবেন তারা যেন মাদকাসক্ত না হয়ে পড়ে এবং অনলাইন জুয়ায় যেন জড়িয়ে না পড়ে।

সময় উঠান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক আলমগীর কবির, মুজিবনগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসান মোস্তাফিজুর রহমান, পল্লি সঞ্চয় ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার মুছারুউদ্দিন সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এবং একটি বাড়ি একটি খামারের সদস্যাবৃন্দ।




রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ

রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর পদত্যাগের দাবিতে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

আজ মঙ্গলবার(২২ অক্টোবর) বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্ত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পায়রা চত্ত্বরে এসে শেষ হয়।

মিছিলকারীরা সেসময় রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

মিছিল শেষে এক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু হুরাইরা, আবু রায়হান রিহান, সাইদুর রহমান, রতনা খাতুন ও শামিম আহম্মেদ।

এ সময় বক্তরা বলেন, ‘ স্বৈরাচারের দোসর রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অনতবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। সেই সঙ্গে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানান তাঁরা।’




দর্শনায় রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

দর্শনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও ছাত্রলীগের নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও গনজামায়েত অনুষ্টিত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে দর্শনা রেলবাজার শাহারিয়ার শুভ মুক্ত মঞ্চ থেকে এ গনজামায়েত ও মিছিলটি বের হয়।

এ মিছিলে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ ও ফ্যাসিটদের দোসোর রাষ্টপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর পদত্যাগের দাবিতে বিপ্লবি ছাত্র-জনতার উদ্দ্যগে গন জামায়েত ও বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়।

মিছিলটি দর্শনার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে দর্শনা বাসষ্ট্যান্ড চৌরাস্তার মোড়ে এক পথ সভায় বক্তরা বলেন, অবিলম্বে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ ও ফ্যাসিবাদের দোসোর রাষ্টপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে। বর্তমান সরকারের সময় ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর ও ছাত্রলীগ বিভিন্ন অপতৎপরতা চালানো চেষ্টা করছে।আমরা ছাত্র জনতা সজাগ থেকে যে কোন ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবো। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থেকে দেশ বিরোধী নানা ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ছাত্রজনতাকে সজাগ থাকার আহব্বান জানান।

এ সময় বক্তব্য রাখেন দর্শনা থানা জামায়েতের সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমান টুকু, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনের সমন্বয়ক রিফাত রহমান, তানভীর অনিক। আর অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ছাত্র আন্দোলন শিক্ষার্থী নাঈম ফেরদৌস।




মুজিবনগরে তারানগর গ্রাম বিএনপির আয়োজনে দোয়া ও আলোচনা সভায়

তিনি বিএনপি’র নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন,ছাত্রজনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহ তাআলার আশীর্বাদ স্বরূপ আমরা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম নির্যাতন থেকে মুক্তি পেয়ে একটি নতুন দেশ পেয়েছি। এই দেশ গঠনে পুলিশ বিজিবি, র‍্যাব, সেনাবাহিনী এবং সিভিল প্রশাসনের পাশে থেকে দেশ গঠনে তাদের সহযোগিতা করে যেতে হবে।

দুর্নীতিবাজ খুনি শেখ হাসিনার আওয়ামী সরকারের দীর্ঘদিনের জুলুম নির্যাতন, গুম খুন হামলা মামলা সহ্য করে জেলা বিএনপি’র সভাপতি মাসুদ অরুনের নেতৃত্বে আরও শক্তিশালী হয়েছে মেহেরপুর জেলা বিএনপি। বিগত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বাংলাদেশের মানুষের কোন বাক স্বাধীনতা ছিল না। বাংলাদেশের মানুষ তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে পারত না। বিগত বছর গুলোতে আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগের নেতারা কি ছিল জনগনের হক মেরে আজ তারা কোটি টাকার মালিক। আমি সেইসকল আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বলতে চাই আপনারা বিগত ১৬টি বছরে যে সকল অপকর্ম , দুর্নীতি করে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন, সেই সকল অপকর্ম, দুর্নীতির প্রমাণ আমাদের হাতে আছে তাই আপনারা চুপ থাকুন বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না।

আপনারা বিল খেয়েছেন পুকুর খেয়েছেন ভিজিএফ এর চাল খেয়েছেন বিধবা ভাতা দেওয়ার নাম করে টাকা খেয়েছেন টিসিবির চাল খেয়েছেন সব আমাদের জানা এগুলা এখন দরিদ্র অসহায় মানুষ আছে যারা তারা খাবেন কোনরকম হস্তক্ষেপ করবেন না যদি ভালো থাকতে চান গরিব অসহায় মানুষের কোন হক মেরে খাওয়ার চেষ্টা করবেন না। আপনাদের পালিয়ে যাওয়া নেত্রী শেখ হাসিনা ফিরে আসবে আওয়ামীলীগ আবার ক্ষমতায় আসবে এই দিবস স্বপ্ন দেখবেন না।
আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের তারানগর বিএনপির আয়োজনে,
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থ্যতা কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সকল কথা বলেন মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম।

তিনি আরো বলেন, সকল বিএনপি নেতা কর্মীদের একত্রিত হয়ে আগামীতে বিএনপির হাতকে শক্তিশালী করে বিএনপিকে ক্ষমতায় এনে সারা বাংলাদেশের মানুষকে একটি সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দিতে হবে। এজন্য সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে সকল বিএনপির নেতা কর্মীরা এক হয়ে কাজ করে যেতে হবে।

উক্ত দোয়া মাহফিলে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাগোয়ান ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক ইসলাম আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক।

যুবনেতা আশরাফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দারিয়াপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দীন,মুজিবনগর উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আবুল হাসান, সদস্য সচিব আনারুল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আকিব জাভেদ সেনজীর প্রমুখ।

এ সময় বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এবং জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত সকল ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয় এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত রোগ মুক্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।




মেহেরপুরের আমঝুপিতে মহিলাসহ দুইজনকে পিটিয়ে জখম, থানায় মামলা

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপিতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে রোজিনা খাতুন ও মনিরুল ইসলাম নামের দুজনকে বেধড়ক মারপিট করার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত ২০ অক্টোবর রাতে রোজিনা খাতুন বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে, আমঝুপি উত্তরপাড়ার আব্দুল লতিফ, তার ছেলে মেহেদী হাসান ও আমির হাসান হিমেলকে। মামলায় অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী রোজিনা খাতুন এজাহারে উল্লেখ করেন, আসামিদের সাথে জমিজমার বিষয় নিয়ে পূর্ব হইতে বিরোধ চলে আসছে। আসামিরা প্রতিনিয়ত তাদের বিভিন্নভাবে হেও প্রতিপন্নসহ খুন-জখমের হুমকি প্রদান করিয়া আসিতেছে। জমিজমা সংক্রান্তে আসামিদের বিরুদ্ধে মেহেরপুর আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত ১৪৫ ধারা জারি করিয়া স্ব-স্বস্থানে থাকার জন্য উভয়পক্ষকে নোটিশ প্রদান করে। আসামিরা আদালতের আদেশ অমান্য করে গত ২০ অক্টোবর দুপুরের দিকে তাদের ভাড়াকরা গুন্ডা বাহিনী নিয়ে বাদীর দখলীয় জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে জোর পূর্বক বাড়ী নির্মাণ করতে যায়। এসময় বাদী বাধা প্রদান করলে আসামিরা একত্রে বাদীকে উদ্দেশ্যে করিয়া বিভিন্ন রকম খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে। বাদী আসামিদেরকে গালিগালাজ করিতে নিষেধ করলে আসামি মেহেদী হাসান মারতে হুকুম দিলে আসামি আমির হাসান দৌড়ে এসে আমাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে এবং আমার মাথার চুল চেপে ধরে মাটিতে টানাহেচড়া করে নিয়ে বেড়ায় ও আমার পরনের কাপড়-চোপড় বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানী করে। তখন আমার চিৎকারে আমার দেবর মনিরুল ইসলাম চঞ্চল আমাকে উদ্ধার করতে যায়।

এসময় আসামি আমির হাসান হিমেল ও আব্দুল লতিফ বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করিয়া শরীরের বিভিন্নস্থােনে আঘাত করে জখম করে। ওই আঘাতের ফলে আমি মাটিতে পড়ে গেলে আসামী মেহেদী হাসান তার হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা বরাবর আঘাত করতে গেলে আমি আমার মাথা সরিয়ে নিলে আমার ডান চোখের উপরে লেগে আমার চোখ অন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। আমাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসলে আসামিরা পালিয়ে যায় এবং আমাদের উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে।




দর্শনা কেরুজে ২ কোটি টাকার মালামাল ক্রয়ে স্বৈরশাসক কর্মকর্তাদের সখ্যতার অভিযোগ

চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনায় প্রতিষ্ঠিত একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরুজ চিনিকল কমপ্লেক্স। এ প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন জায়গা থেকে কর্মকর্তরা কেরু চিনিকলে আসার জন্য লবিং করে থাকে। সেই সুবাদে কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর মহাব্যাবস্থাপক কারখানার ইনচার্জ সুমন কুমার সাহা আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে উপর মহলের নির্দেশে কেরু চিনিকলে আসে। দীর্ঘ ৪ বছর চাকুরীর বয়স হলেও নবাগত ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসানের সাথে গড়ে তুলেছেন গভীর সখ্যতা। হঠাৎ করে কি কারনে এ গভীর সখ্যতা গড়ে উঠলো তা নিয়ে বইছে আলোচনা সমালোচনা ঝড়।

এ বিষয়ে সরজমিনে গেলে দর্শনা কেরুজ চিনিকলের ফ্যাক্টারীতে বিভিন্ন কাজের জন্য বছরে প্রায় কোটি টাকার মালামাল ক্রয় করা হয়ে থাকে। অভিযোগ রয়েছে কিছু কর্মকর্তা একই জায়গায় দীর্ঘদিন চাকুরী করার সুবাদে ফ্যাক্টারীর মালামাল সাপলাই দেয়া ঠিকাদারের সাথে গড়ে তুলেছেন সখ্যতা। এতে চিনিকলের ক্ষতি হলেও ব্যাক্তিগত ভাবে লাভবান হয়ে থাকেন দেখভাল করা কর্মকর্তারা। দুর্নীতি করা কর্তাকর্তাদের তালিকায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন মহাব্যবস্থাপক কারখানা সুমন কুমার সাহা, মেক্যানিকেল ইঞ্জিনিয়ার ইসমাইল হোসেন, ডিজিএম তড়িৎ প্রবীরচন্দ্র সাহা,  প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ, সহকারী ব্যবস্থপক যান্ত্রীক কৌশল নাজমুল হাসান ও ডিজিএম উৎপাদন জাহিদুল হক টুটুলের ও সহকারী মহাব্যবস্থাপক নৃরুল হাসানের নাম। বেতনের পাশাপাশি অনৈতিক সুবিধা থাকায় ঘুরেফিরে এসব কর্মকর্তারা এ চিনিকলটিকেই বেঁচে নিয়েছেন। ফলে পতন হওয়া স্বৈরশাসকের সুপারিশ প্রাপ্ত কর্মকর্তারা স্বৈরশাসকের এজেণ্ডা বাস্তবায়ন করতে সুকৌশলে কাজ করে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, দেশের চিনি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর্শনা কেরুজ চিনিকল এশিয়া মহাদেশের ভিতরে দ্বীতীয় অন্যান্য চিনি কলের শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মাস শেষে বেতন পাওয়া অনিশ্চয়তা থাকলেও দর্শনা কেরুজ চিনকলে মাসের এক তারিখ আসার আগেই বেতনসহ সকল সুযোগ সুবিধা ব্যাংক একাউন্টে ঢুকে যায়। বেতনের নিশ্চয়তা থাকায় তদবির করে অনেক কর্মকর্তা ঘুরে ফিরে এ চিনিকলে পৌষ্টিং নিয়ে আসেন।

তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ফ্যাক্টারী ম্যানেজার সুমন কুমার সাহা, মেক্যানিকেল ইঞ্জিনিয়ার ইসমাইল হোসেন, ডিজিএম তড়িৎ প্রবীরচন্দ্র সাহা, প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ, সহকারী ব্যবস্থপক যান্ত্রীক কৌশল নাজমুল হাসান ও ডিজিএম উৎপাদন জাহিদুল হক টুটুলের নাম। ঘুরে ফিরে তারা দীর্ঘদিন ধরে এ চিনিকলে চাকুরী করছেন। অভিযোগ রয়েছে একই জায়গায় চাকুরী করার সুবাদে বিভিন্ন দুর্নিতির সাথে জড়িয়ে পড়েছেন তারা। স্বৈরাশাসকের অবসান হবার পর দুর্নিতির কারণে অনেক কর্মকর্তার পৌস্টিং চাকুরী চ্যুতি হলেও স্বৈরাশাসকের সুপারিশ প্রাপ্ত এসব কর্মকর্তারা বহাল তবিয়তে স্বপদে বহাল রয়েছেন।

এদের মধ্যে ৪ বছর ধরে মহাব্যবস্থাপক কারখানা সুমন কুমার সাহা, সাত বছর ধরে সহকারী ব্যবস্থপক যান্ত্রীক কৌশল নাজমুল হাসান, দু’দফায় আট বছর ধরে ডিজিএম উৎপাদন জাহিদুল হক টুটুল ও সহকারী মহাব্যাবস্থাপক নুরুল হাসান। দর্শনা কেরুজ চিনিকলে চাকুরী করছেন। ফ্যাক্টারী ম্যানেজার সুমন কুমার সাহা বলেন, প্রতি বছর ফ্যাক্টারীতে প্রায় ২ কোটি টাকার মালামাল ক্রয় হয়ে থাকে। যে সব মালামাল বিভিন্ন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করে থাকেন। দীর্ঘদিন একই জায়গায় চাকুরী করার সুবাধে এসব কর্মকর্তরা সরবরাহকৃত নিম্নমানের মালামাল এবং পরিমানে কম থাকলেও বিশেষ সুবিধা নিয়ে এসব মালামাল ছাড় করিয়ে দিয়ে থাকেন বলে গুঞ্জণ রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠনের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। সহকারী মহাব্যবস্থাপক নুরুল হাসানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে কেরুর গোপনীয় কাগজপত্র পাবলিকদের কাছে দেওয়া এবং সাংবাদিকদের সাথে মাঝে মাঝে বাজে মন্তব্য করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আর মেরামতের কাজে ৭০ ভাগ মালামাল সদর দপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করে থাকেন। এদিকে স্বৈরসরকারের আমলে এসব কর্মকর্তারা বীরদর্পে রাজনীতির পাশাপাশি চাকুরী করে আসছেন।

কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর নাম প্রকাশে অস্বীকৃতী জানালে এক শ্রমিক বললেন দীর্ঘদিন ধরে একজায়গায় চাকুরী করলে দুর্নীতি যেমন বাড়ে তেমনি সবার সাথে সখ্যতা বাড়ে।তিনি আরও বলেন, কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর কারখানার বড় বড় লাট দীর্ঘদিন হলে জং ধরে যায় তখন চেন্জ করা লাগে।ঠিক তেমনি এসব কর্মকর্তরা দীর্ঘদিন ধরে আছে তাদের কে চেন্জ করলে কিছুটা দুর্নীতি কমবে বলে তিনি জানান। এখন সুরপাল্টে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে পরিচালিত করছেন বলে গুঞ্জণ শোনা যাচ্ছে। ঢাকা সদর দপ্তরকে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে ফ্যাক্টারীতে চাকুরীরত স্বৈরশাসকের দোষর এসব কর্মকর্তার দ্রুত বদলির দাবি তুলেছে বিপ্লবি জনতা।

এ বিষয়ে কেরু এ্যান্ড কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান বলেন,বিষয়টি সদর দপ্তর দেখেবেন,আমি নতুন এসেছি বিষয়গুলো আমি খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিব।




চুয়াডাঙ্গাতে কুয়াশায় শীতের আগমনী বার্তা

প্রকৃতিতে শুরু হয়েছে ঋতু পরিবর্তন। শরতের পর হেমন্ত নেমে আসছে, কার্তিক মাস চলছে। সামনে শীত আসলেও এখন প্রকৃতি ঘোষণা করছে শীতের আগমন। প্রকৃতিতে ইতিমধ্যেই বইতে শুরু করেছে মৃদু শীতের ছোঁয়া। কুয়াশাচ্ছন্ন সকালের মতো লাগছে।

চুয়াডাঙ্গায় সারাদিন গরম থাকলেও গভীর রাত থেকে শুরু হয়েছে হালকা কুয়াশা। শীতকে ঘিরে বিভিন্ন পিঠাপুলির দোকান জমজমাট। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী হেমন্তের পর অগ্রহায়ণ পার হলেই শীত আসবে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রকৃতির বিরূপ প্রভাব ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শীতের শুরুতেই শীতের আগাম সতর্কতা পাওয়া যাচ্ছে।

আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশার কারণে প্রকৃতিতে এক অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ প্রচণ্ড গরমের পর কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ পেয়ে উচ্ছ্বসিত চুয়াডাঙ্গা জেলার বাসিন্দারা।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যত দিন যাচ্ছে তাপমাত্রা ততই কমছে। প্রতি সন্ধ্যায় ঠাণ্ডা বাতাস বইতে শুরু করেছে। কুয়াশার মাত্রাও বাড়ছে। সম্প্রতি রেকর্ড করা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল 23.5 ডিগ্রি
সেলসিয়াস।

গ্রামীণ বাঙালির জীবনে হেমন্ত মানেই নবান্ন উৎসবের মেজাজ। হেমন্ত এলে এ জনপদের মানুষের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করে। হেমন্তের আগমনে, সকালবেলা গ্রামের পথে হাঁটতে হাঁটতে আমার পা ভেজা শিশির কণা। হেমন্তের আগমনে ক্ষেতে সোনালী ধান ওঠে। পাকা ধানের গন্ধে ভরে ওঠে চারপাশ। আর কয়েকদিন পর কৃষকের ঘরে ধানের সোনালি চারা ফুটে উঠবে এবং বাংলার গৃহিণীরা এই নতুন ধান থেকে বাঙালি পিঠা-পুলি তৈরি করবে।

কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসজুড়ে বাংলাদেশে হেমন্ত ছড়িয়ে পড়ে। শরতের ফুল মাটিতে পড়ার পরপরই বাংলার বৈচিত্র্যে হেমন্তের আবির্ভাব ঘটে। বসন্তের মতো এর নিজস্ব কোনো রঙের গন্ধ বা মর্যাদা নেই। হেমন্ত মৌন শান্ত এবং অন্তর্মুখী। হেমন্তে প্রস্ফুটিত শিউলি, কামিনী, গন্ধরাজ, মল্লিকা, দেবকাঞ্চন, হিমঝুরি, রাজ অশোক প্রভৃতি ফুলের সুবাস বাঙালির জীবনে নতুন মেজাজ জাগায়। সকালের শিশির-ভেজা ঘাসে ফসলের সোনালী সাগর আর মুক্ত শস্যের ছড়াছড়ি প্রকৃতিকে পরিপূর্ণ করে তোলে। হেমন্তের সকালে শিউলির সুবাস বাঙালির প্রাণে নিয়ে আসে উৎসবের আমেজ।

চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন ধরেই গভীর রাতে কুয়াশা এবং ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঠান্ডা বাতাস বেড়েছে।

অনুভূতি যাইহোক, কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হয় না. সূর্য উঠার সাথে সাথে কুয়াশা মুছে যায়। দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর এলাকার আব্দুল কাদের, নিয়মিত ফজরের নামাজ পড়তে বের হন। সকালে বেড়াতে এসে তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরে সকালে প্রচুর কুয়াশা পড়েছে। এমনকি দিনের বেলা সূর্যের তাপমাত্রাও কমেছে। বোঝা যাচ্ছে শীত আসছে।

এদিকে প্রকৃতিতে শীতল হাওয়া বইলেও তীব্র তাপদাহ দেখা গেছে এলাকার সবজি বাজারে। কিন্তু বাজারে মৌসুমি সবজির আগমনে এই গরম বেড়েছে। দামুড়হুদা বাজার, জয়রামপুর বাজার, ডুগডুগী বাজার ও কার্পাসডাঙ্গা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায় ধনে, শিম। বাজারে আসছে বাঁধাকপি, মুলা, ফুলকপি, পালং শাক, গাজর, টমেটোসহ নানা ধরনের মৌসুমি সবজি। কিন্তু সরবরাহ কম থাকায় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এসব সবজি।

ফলে দিন ছাড়া রাতের একটি নির্দিষ্ট সময় থেকে প্রচুর হিমশীতল বাতাস বইতে শুরু করেছে। সন্ধ্যার পর থেকে রাত বাড়ার সাথে সাথে ঠান্ডা অনুভূত হয়। কুয়াশাও বাড়ছে। মধ্যরাত থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শীত অনুভূত হচ্ছে। সম্প্রতি জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে 23.5 ডিগ্রি সেলসিয়াস।




ঝিনাইদহে ধান ক্ষেতে পচন রোগ, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ফলন কম হওয়ার আশংকা

ঝিনাইদহে মাঠে কৃষকের ধান ক্ষেতে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ফলন কম হওয়ার আশংকা করছে এ জেলার কৃষকরা। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর বৃষ্টির পর ভ্যাপসা গরমের কারনে ঝিনাইদহের ছয়টি উপজেলার গ্রামগুলোর মাঠে কৃষকের ধান ক্ষেতে খোলা পচা রোগ দেখা দিয়েছে। মাঠের পর মাঠ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ধান গাছের পাতা মারা যাচ্ছে। অনেক কৃষকের গোটা জমিতে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। বিআর-৫১ জাতের ধান ক্ষেতে এই রোগ বেশি দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন এ জেলার কৃষকরা।

কৃষকরা বলছেন, এই রোগের কারনে তাদের ক্ষেতের ধানগাছ ক্রমেই শুকিয়ে আসছে। আগামীতে রোগাক্রান্ত ধান গাছে শীষ বের হবে না। ফলে ধানের উৎপাদন কমে যাবে। এখনই এই রোগ প্রতিরোধ করা না গেলে তারা মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।

আর কৃষি বিভাগ বলছেন, ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে এই রোগ অনেকটা প্রতিরোধ করা যায়। তারা কৃষকদের সেভাবেই পরামর্শ দিচ্ছেন।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানাগেছে, চলতি বছর ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলায় উপসী জাতের ধান চাষ হয়েছে ৯৬ হাজার ৩০৮ হেক্টর, আর হাইব্রিড ধান চাষ হয়েছে ৮ হাজার ১৮০ হেক্টর। মোট ১ লাখ ৪ হাজার ৪ শত ৮৮হেক্টরে জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এ থেকে ৫ লাখ ৬৮ হাজার ৪০৯ মেঃ টন ধান উৎপাদন হবার কথা।

কৃষি বিভাগ এই লক্ষ্যমাত্র নিলেও টানা বৃষ্ঠিতে ১১০ হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে প্রায় ৬ শত মেঃ টন ধান কম উৎপাদন হবে। এরপর দেখা দিয়েছে খোল পচা রোগ। এই রোগেও ফলন আরো অনেকটা কম হবে বলে কৃষকরা আশংকা করছেন।

সরেজমিনে ঝিনাইদহের ছয় উপজেলার একাধিক মাঠ ঘুরে ধান ক্ষেতে পাতা পচা রোগ দেখা গেছে। ধান গাছে থোড় (র্শীষ) হওয়ার পূর্ব মূহুর্তে গাছের পাতা মারা যাচ্ছে। কোনো কোনো জমিতে গোটা ফসলেই আক্রান্ত হয়েছে। এই পঁচন রোগ ধান গাছের নিচ থেকে শুরু হচ্ছে। যা ক্রমান্বয়ে উপরের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এই রোগে আক্রন্ত ধান গাছের নিচের অংশ খয়েরি রং ধারন করছে, যা আস্তে আস্তে গোটা গাছে ছড়িয়ে পড়ছে। এক পর্যায়ে ধান গাছের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে।

সদর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের কৃষক পারভেজ আহমেদ জানান, তার ৭ বিঘা জমিতে ৫১ জাতের ধান চাষ করেছেন। প্রায় সব জমিতেই এই রোগ দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির পর অল্প সময়ের মধ্যে গোটা জমিতে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রথমে গাছের নিচের অংশ থেকে পচন দেখা দেয়, যা ইতিমধ্যে উপরের দিকেও চলে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, সার-ঔষধ, জমি তৈরীতে চাষ, ধানের জমির আগাছা পরিষ্কার, কাটা-পরিষ্কার সহ লেবার খরচ সহ এক বিঘায় তার ২২ হাজার থেকে ২৩ হাজার খরচ হয়েছে। এই এক বিঘায় তিনি ১৮ থেকে ২০ মণ ধান পাবেন যা বিক্রি করে ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা পাবেন। এখন যে অবস্থা তাতে ফলন অনেক কমে যাবে। এতে তিনি আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন বলে জানান। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ছত্রাকনাশক ঔষধ দিয়েছেন, কিন্তু এতে কোনো কাজেই আসছেনা।

সদর উপজেলার বিষয়খালী গ্রামের কৃষক ফজলুর মিয়া জানান, বিআর-৫১ জাতের ধান তিনি প্রায় ৩ বিঘা চাষ করেছেন। গোটা জমিই তার এই পচন রোগে আক্রান্ত। ক্ষেতের আইলে গেলে মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এবার জমিতে ধান গাছ ভালো হয়েছিল। এখন থোড় (র্শীষ) বের হওয়ার সময়। সেই সময় বৃষ্টির কারনে এই পঁচন রোগ দেখা দিয়েছে। যা মাঠের পর মাঠ ছড়িয়ে পড়ছে।

শৈলকুপা উপজেলার মহাম্মদপুর গ্রামের কৃষক আজাদ হোসেন জানান, দ্রুত এই পচন রোগ ঠেকাতে না পারলে কৃষক মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। অনেক কৃষক ধারদেনা করে চাষ করেন, তারা কিভাবে তাদের ঋণ পরিশোধ করবেন। তিনি নিজেও দোকান থেকে সার-ঔষধ বাকিতে নিয়ে দুই বিঘায় চাষ করেছেন। তার জমির ধানও পচন রোগে আক্রান্ত। ভালো ফলন না পেলে কিভাবে দোকান বাকি পরিশোধ করবেন তা নিয়ে চিন্তিত এই কৃষক।

কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করে জানান, বৃষ্টির পর এই রোগ দেখা দিয়েছে। তবে সেটা ব্যপক নয়। তারা কৃষকদের আক্রান্ত জমিতে ছত্রাকনাশক ঔষধ স্প্রে করতে পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে পচন অনেকটা ঠেকানো সম্ভব বলে জানান।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ষষ্ঠি চন্দ্র রায় জানান, কৃষকের ধান ক্ষেতে খোলপচা রোগ এখনও তেমন একটা দেখা দিয়েছে বলে তাদের কাছে এমন কোন তথ্য নেই। তবে বৃষ্টির পর খরা হলে এই রোগ দেখা দিয়ে থাকে। তিনি কোন এলাকায় এই রোগ দেখা দিয়েছে তার বিষয়ে তথ্য নিয়ে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান। তিনি বলেন, এই রোগে আক্রান্ত ক্ষেতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।