আলমডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
আলমডাঙ্গায় ভোররাতে সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাক হেলপারের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের মুন্সিগঞ্জ নিগার সিদ্দিক ডিগ্রী কলেজের সামনে গতকাল বুধবার ভোরে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকের সহকারী চালক (হেলপার) সোহেল (২৬) ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন। গতকাল বুধবার ভোর রাত প্রায় ৪টার দিকে দ্রুতগতিতে ছুটে চলা একটি বালি বোঝাই ট্রাক গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে উল্টে গেলে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোররাতে এলাকার মানুষ ঘুমে আচ্ছন্ন থাকাকালীন হঠাৎ প্রচণ্ড বিকট শব্দ শোনা যায়। শব্দ শুনে আশপাশের বাসিন্দারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে এসে দেখতে পান, ঢাকা মেট্রো-ট-২০-৪০০২ নম্বরের ট্রাকটি রাস্তার পাশে বড়সড় গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে উল্টে পড়ে আছে। চালকের আসনে আটকে থাকা একজনকে অচেতন অবস্থায় দেখা যায়। প্রথমে ধারণা করা হয় তিনি চালক, কিন্তু পরে জানা যায় তিনি ট্রাকের হেলপার সোহেল। স্থানীয়রা অনেক চেষ্টা করেও তাকে ট্রাক থেকে বের করতে ব্যর্থ হন।
খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে গাড়ির ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করে। কিন্তু ততক্ষণে তিনি মারা গিয়েছিলেন। পরে লাশ আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান জানান, নিহত সোহেল ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানার তালশার গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দিয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কে দীর্ঘদিন ধরেই অতিরিক্ত গতিতে বালি ও পাথর বোঝাই ট্রাক চলাচল করছে। এসব গাড়ির বেশিরভাগই রাতে ও ভোরে বেপরোয়া গতিতে চলে, ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়কে গতি নিয়ন্ত্রণ ও আইন প্রয়োগ কার্যকরভাবে না হওয়ায় প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। তারা অবিলম্বে এই সড়কে গতিসীমা নির্ধারণ, নিয়মিত ট্রাফিক টহল এবং ওভারলোড ও অতিরিক্ত গতি রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকে স্থানীয়দের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত সোহেলের পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তরুণ এই হেলপারের অকাল মৃত্যুতে তার গ্রামের মানুষও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।