মেহেরপুরে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুল হাসানের গণসংযোগ

মেহেরপুরে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসানের নেতৃত্বে গণসংযোগ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আজ শনিবার সকাল ১০টায় মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজার থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত এক বিশাল গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়।

গণসংযোগ চলাকালে অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান বলেন, আমরা তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছি। যতদিন দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হবে, ততদিন বিএনপির গণসংযোগ চলবে।

তিনি আরও বলেন, মানুষ ধানের শীষকে বিশ্বাস করে, কারণ ধানের শীষ মানেই জনগণের অধিকার, ন্যায়বিচার ও মুক্ত গণতন্ত্রের প্রতীক। জনগণ আমাকে ভালোবাসে এবং যখনই তাদের কাছে যাই, তারা বলেন ‘ধানের শীষ চাই’। এতে প্রমাণ হয়, আগামীর বিজয় ইনশাআল্লাহ ধানের শীষেরই হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়েজ মোহাম্মদ, সদস্য ইলিয়াস হোসেন, হাফিজুর রহমান হাপি, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম, ওমর ফারুক লিটন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মিজান মেনন, জেলা জাসাসের সদস্য সচিব বাকাবিল্লাহ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আজমল হোসেন মোল্লা মিন্টু, যুব মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রহমান আহমেদ, রোমানা আহমেদ, আলমগীরসহ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যবৃন্দ, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।




জমির দখল নিতে প্রকৃত মালিকের বিরুদ্ধে ধইঞ্চা কাটার নাটক

৪০ বছরের ভোগ দখল করা জমি হঠাৎ অবৈধ দখল নিতে প্রকৃত মালিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে একটি চক্র। ধইঞ্চা কাটার অভিযোগা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে জমি দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে ওই চক্রটি।

তারা সাংবাদিক সম্মেলন করে জমির মালিককে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালিয়েছে। ঘটনাটি গাংনী উপজেলার নলগাড়ি মাঠে ঘটেছে।

এনিয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে জমির উপর সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন জমির মালিক হেলাল উদ্দীন মাস্টার। এসময় তেরাইল, জোড়পুকুরিয়া ও দুলর্ভপুর গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে জমির মালিক হেলাল উদ্দীন বলেন, ১০১৫ দাগে আমার দাদার নামে ক্রয়সূত্রে ৫৫ শতক জমি রয়েছে। আমার দাদা জোড়পুকুরিয়া গ্রামের আহমেদ আলী, আবুল হোসেন, ইসমাইল হোসেন ও তাদের উত্তরসরিদের কাছ থেকে কেনেন। দীর্ঘ ৪০ বছর এই জমি আমরা ভোগ দখল করে আসছি। অথচ, পট পরিবর্তনের সাথে সাথে একটি দু:স্কৃতিকারীর দাবী করছে এই জমি তাদের।

প্রায় ৪০ বছর যাবৎ আমার দাদার ওয়ারিশ আমার বাবা ও চাচারা ভোগ দখল করে আসছেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবছর ওই জমিতে সবুজ সার তৈরী করতে আমরা ধইঞ্চা বুনেছিলাম। কয়েকদিন আগে সেটা কেটে জমিতেই পচান দিয়েছি। আমরা কিছুদিনের মধ্যেই ধান লাগাবো। এর মধ্যে জোড়পুকুরিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে জিয়াউল হক, সেন্টু, জাহাঙ্গীর ও লাল্টু বলছে এই জমি আমাদের।

অথচ, বিগত ৪০ বছরের মধ্যে কোনোদিন তারা বলেনি এই জমি তাদের। আমরা এই জমিতে ধইঞ্চা বুনেছি ধান লাগাবো বলে। অথচ, এখন তারা বলছে ধইঞ্চা তারাই লাগিয়েছে, আমরা রাতের আধারে কেটে দিয়েছি। মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে আমরাই ধইঞ্চা কেটেছি এজন্য আমাদের দৃষ্টান্তমুলক দাবী জানাচ্ছেন। আমার পৈত্রিক জমিতে অবৈধভাবে কয়েকজন সাংবাদিক এনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দুই বিঘা জমির ধইঞ্চা ক্ষেত কর্তনের অভিযোগ তুলেছেন। জমিটি তার দাবি করে দুই বিঘা জমির ধইঞ্চা আমরা কেটে দিয়েছি বলে দাবী করেন। যা মিথ্যা ও সাজানো নাটক। এই মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।

তবে, বেশ কয়েকজন পার্শ্ববতি জমির মালিক বলেন, আমরা ৩৫/৪০ বছর যাবৎ এই জমিটি হেলাল মাস্টার ও তাদের বাপ চাচাদের আবাদ করতে দেখেছি। তবে, তারা বলেন, জিয়াউল, লাল্টুসহ অন্যান্যরা এই জমির পাশের ১০১৩ দাগ ৭ শতক জমি পাবে। অথচ, তারা পুরো ৫৫ শতক জমি দখল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে এবং হেলাল মাস্টারদের বিরুদ্ধে ধইঞ্চা কাটার মিথ্যা নাটক সাজাচ্ছেন।

ভুক্তভোগী কৃষক হেলাল উদ্দীন অভিযোগ করেন, তেরাইল মৌজার আরএস খতিয়ান ১৫৭৫, দাগ নম্বর ১০১৩ দাগভুক্ত ৭ শতক জমি তার দাদা বাদল শেখের নামে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। কিন্তু ধইঞ্চার জমিটি ১০১৫ দাগে আমার বাবা ও চাচার জমি ৫৫ শতক। দীর্ঘদিন ধরে তারা আমরা এই জমি ভোগদখল করে আসছি। জমিটি নিয়ে বর্তমানে আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা চলমান রয়েছে।

এবিষয় নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বসে শালিস বৈঠক করেছেন। এনিয়ে মামলা রয়েছে।

এ বিষয়ে গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বানী ইসরাইল বলেন, “এখনো পর‌্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”




ঝিনাইদহ সীমান্তে নিহত যুবকের মরদেহ ৮৫দিন পর ফেরত দিল বিএসএফ

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ)’র গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক ওয়াসিম আকরামের (২৮) মরদেহ অবশেষে দেশে ফিরেছে।

মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে মরদেহ দেশে ফেরায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে নিহতের স্বজনরা। মরদেহ নিহতের স্বজন ও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শনিবার (৫ জুলাই) মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের সহকারী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার মুন্সী ইমদাদুর রহমানের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নিহত ওয়াসিম আকরাম মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের রমজান আলীর ছেলে।

বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) জানিয়েছে, চলতি বছরের ১১ এপ্রিল ইছামতী নদীর ভারতীয় অংশে গুলিবিদ্ধ যুবকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী। পরে বাঘাডাঙ্গা গ্রামের রমজান আলী ঘটনাস্থলে বাংলাদেশ অংশে দাঁড়িয়ে মরদেহটি তার ছেলে ওয়াসিম আকরামের বলে দাবি করেন। ওই সময় বিএসএফ মরদেহ উদ্ধার করে ভারতীয় পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

পরে মরদেহটি ফিরে পেতে বিজিবির কাছে লিখিত আবেদন করে ওয়াসিমের বাবা রমজান আলী। আবেদনের প্রেক্ষিতে মহেশপুর ৫৮ বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ধারাবাহিক যোগাযোগের ফলে ভারতীয় পুলিশ ও বিএসএফ বাংলাদেশি ওই যুবকের মরদেহ ফেরত দেয়ার উদ্যোগ নেয়।

পরে আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে মেইন সীমান্ত পিলারএর ৬০ এর নিকটে বিজিবি ও বিএসএফ দুই দেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মরদেহটি হস্তান্তর এবং গ্রহণ সম্পন্ন হয়। নিহত ওয়াসিম আকরামের বাবা রমজান আলী এবং তার বড় ভাই মেহেদী হাসান মরদেহ গ্রহণ করেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বাঘাডাঙ্গা গ্রামে ওয়াসিম আকরামের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।




ঝিনাইদহের ফুটফুটে শিশু ফাতেমার বেঁচে থাকার আঁকুতি

ফাতেমা সাড়ে ৬ বছরের ছোট্ট একটা ফুটফুটে শিশু। যার হাসি মাখামুখ পিতা মাতাসহ পাড়া প্রতিবেশিদের সব সময় মাতিয়ে রাখে। তার মায়াবি চেহারার দিকে তাকালে দৃষ্টি আটকে যায়।

ঝিনাইদহের শহরের অক্সফোর্ড স্কুলের প্লে-গ্রুপে পড়া ছোট্ট এই মেয়েটির মুখে সব সময় লেগে থাকে। স্বপ্নের মতো তার প্রাণবন্ত হাসি, কিন্তু সেই হাসির আড়ালে লুকিয়ে আছে দুরারোগ্য রোগের সঙ্গে লড়াই করে বেচে থাকার স্বপ্ন। ফাতেমা লড়ছে সেই থ্যালাসেমিয়া রোগের সাথে।

ফাতেমার পিতা ঝিনাইদহ শহরের হামদহ পুর্বপাড়ার রাশেদুল ইসলাম মিলন একজন স্বল্প আয়ের মানুষ। নিজে কিছুই করতে পারেননি, তবে ছেলেমেয়ের সুস্থতার জন্য সংগ্রাম করছেন। পাঁচ বছর ধরে তার মেয়ের চিকিৎসার জন্য একাই লড়ে যাচ্ছেন। দেশ বিদেশ (ভারত) দৌড়ে পিতা আজ বড়ই ক্লান্ত! তার লড়াই-সংগ্রাম অর্থের অভাবে যেন ক্রমশঃ ছোট হয়ে আসছে।

সাড়ে ৫ বছরে প্রায় ১০ লাখ টাকা চিকিৎসা খরচ করেছেন, কিন্তু তবুও শিশু ফাতেমার পুরোপুরি সুস্থ করতে পারেননি। দিন যতই যাচ্ছে সন্তানের জন্য পিতার লড়াই ততই কঠিন হয়ে পড়ছে। ১৫ দিন পর পর ফাতেমার রক্ত দিতে হচ্ছে। এ ভাবে চলছে প্রায় সাড়ে ৫ বছর। স্থায়ী সমাধান বোনমেরু প্রতিস্থাপন করা। বোনমেরু জোগাড় হলেও অর্থের অভাবে তা হচ্ছে না।

ফাতেমার চিকিৎসক ভারতের ভ্যালর খ্রিষ্টান মেডিকেল কলেজের হেমোটলজি বিভাগের সিনিয়র প্রফেসর ডাঃ বিক্রম ম্যাথিউস বোনমেরু স্থপনের কথা বলেছেন। কিন্তু টাকা লাগবে অনেক। অনেক বড় অংকের (২১ লাখ) টাকা এই দরিদ্র পরিবারের পক্ষে জোগাড় করা অসম্ভব। তার বড় ভাই তামিমের সঙ্গে বোনমেরু প্রতিস্থাপনে রক্তের ম্যাচিং থাকলেও, অর্থের অভাবে তা স্থাপন করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ফাতেমার স্বজন রবিউল ইসলাম রবি বালেন, কেবল একজন ফাতেমা নয়, পুরো একটি পরিবারের আশা, সংগ্রাম এবং ভালবাসার গল্পটাই হৃদয়ে গভীর এক স্পন্দন সৃষ্টি করেছে। শিশুর জীবন শুধু তার নিজের নয়, তার চারপাশের সকলেরই।

শিশুটির দাদা আনোয়ার হোসেন জানান, ফাতেমার বুকে মাথা রাখলে মনে হয় সে বলছে “আমাকে বাঁচতে দাও, আমার জন্য কিছু করো।” তার ছোট্ট বুকের মধ্যে এখনো প্রাণের স্পন্দন, অশ্রুতে ভরা নয়, বরং বেঁচে থাকার অদম্য ইচ্ছা।

ফাতেমার চিকিৎসার জন্য তার পরিবার আর্থিক সহায়তা কামনা করেছেন। সাহায্য পাঠাতে পারেন বিকাশ ও নগদ নাম্বারঃ-০১৭২৪-০৫৬৯৯৩, অথবা অগ্রনী ব্যাংক, ঝিনাইদহ শাখা’র হিসাব নং ০২০০০০১৭৫৫৯৮৪।




মুজিবনগরের কোমরপুর থেকে ৬০ বোতল ফেন্সিডিলসহ একজন আটক

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কোমরপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৬০ বোতল ফেন্সিডিলসহ তুষার আলী (২৮) নামের এক চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কোমরপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই হারুনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম এ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় তার কাছে থেকে দুটি মোবাইল ও নগদ দুই হাজার ৫শ টাকা করা হয়েছে। পরে জব্দকৃত ফেন্সিডিলসহ তুষার আলীকে মুজিবনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

মুজিবনগর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, আটক তুষারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আটক তুষারের বিরুদ্ধে কোমরপুর গ্রামে মাদক ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ আছে। মাদক বিক্রি করে সে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। অনলাইন জুয়ার চ্যানেল মালিকদের কাছে মাদক সরবরাহ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এসকল তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে স্থানীয়রা দাবী করেছেন।




গাংনীতে সেনাবাহিনীর অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার

গাংনী উপজেলার পোড়াপাড়া-জুগিন্দা সড়কে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করেছে।

আজ শনিবার ভোররাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পোড়াপাড়া-জুগিন্দা সড়কের মাঝখানে একটি ইপিলইপিল বাগানে অভিযান চালিয়ে ওয়ান শুটারগানটি উদ্ধার করা হয়।

২৭ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারির মেজর রাব্বি এবং গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করেন।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বানী ইসরাইল এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নিয়মিত একটি টহল দল পোড়াপাড়া-জুগিন্দা সড়কে টহল দেওয়ার সময় অজ্ঞাত কিছু লোক সেনাবাহিনীর টিমকে দেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে সেখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটারগানটি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটি গাংনী থানায় জমা দেওয়া হয়েছে ।




মেহেরপুরে যৌথ অভিযানে ১৩০ গ্রাম হেরোইনসহ মা-ছেলে আটক

মেহেরপুর শহরের ওয়াদাপাড়া এলাকায় সেনাবাহিনী ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে ১৩০ গ্রাম হেরোইনসহ মা-ছেলেকে আটক করা হয়েছে।

শনিবার (৫ জুলাই) সকালে পরিচালিত এ অভিযানে আটক হন মিয়াপাড়ার বাসিন্দা নুরুন্নবীর স্ত্রী শিখা খাতুন (৪৫) এবং তার ছেলে জাহিদ (২৫)।

জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক বিদ্যুৎ বিহারী নাথ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিখা খাতুনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ১৩০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা। অভিযানে মাদক বিক্রির নগদ ৬২ হাজার ৮৩০ টাকা এবং দুটি ডিজিটাল ওজন পরিমাপক নিক্তিও জব্দ করা হয়।

অভিযানের সময় মাদক মামলার প্রধান আসামি মিয়াপাড়ার লুৎফর রহমানের ছেলে নূর নবী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।

পরিদর্শক বিদ্যুৎ বিহারী আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক মা-ছেলে হেরোইন বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে মেহেরপুর সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।




গাংনীতে আইবিডব্লিউএফ’র ব্যবসায়ী সম্মেলন ও কমিটি গঠন

মেহেরপুরের ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টস বিজনেসম্যান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন (আইবিডব্লিউএফ) এর গাংনী উপজেলা ও পৌর শাখার দ্বিবার্ষিক ব্যবসায়ী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলন শেষে গাংনী উপজেলা ও পৌর শাখার দ্বিবার্ষিক কমিটি গঠন করা হয়।

আজ শনিবার সকালে গাংনী আলেয়া মাদ্রাসা হলরুমে এ সম্মেলন ও কমিটি গঠন অনুষ্ঠিত হয়।

পেশাজীবী সংগঠন আদর্শ শিক্ষক পরিষদের গাংনী উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আবুল হাসেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আইবিডব্লিউএফ’র যশোর ও কুষ্টিয়া জোনের পরিচালক আব্দুল মতিন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা জামায়াতের আমির ও জামায়াত মনোনীত মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা তাজউদ্দীন খান, মেহেরপুর-২ আসনের প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের শূরা সদস্য নাজমুল হুদা, পেশাজীবী সংগঠনের মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ আল আমিন ইসলাম বকুল এবং আইবিডব্লিউএফ’র জেলা শাখার সভাপতি খালিদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।

সম্মেলন শেষে ফকির মোহাম্মদকে সভাপতি ও হাসান সাঈদ সরোয়ারকে সাধারণ সম্পাদক করে গাংনী উপজেলা কমিটি এবং মনিরুল ইসলামকে সভাপতি ও আবদুস সালামকে সম্পাদক করে পৌর শাখার আইবিডব্লিউএফ কমিটি গঠন করা হয়।

এ সময় গাংনী উপজেলা ও পৌর এলাকার প্রায় দেড় শতাধিক ব্যবসায়ী সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।




সাইবার নিরাপত্তায় কাজ করছেন মেহেরপুরের লিয়ন

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি হলো সাইবার নিরাপত্তা। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে যখন দেশ দ্রুত এগিয়ে চলেছে, তখন প্রযুক্তির অপব্যবহারও ভয়াবহ হারে বাড়ছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে এসেছেন মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার তরুণ সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট আছিম হোসেন লিয়ন ।

২০১৮ সালের শেষের দিকে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ শুরু করেন আছিম। বর্তমানে তিনি গঠন করেছেন একটি বিশেষায়িত সাইবার টিম যার নাম Bangladesh Cyber Defense ও CyberSentinel – IT।

তার এই টিম দেশের বিভিন্ন জেলা, বিশেষ করে নিজ জেলা মেহেরপুর সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

আছিমের স্বপ্ন শুধু নিজেকে নিয়ে নয়-তিনি চান, সারা বাংলাদেশের মানুষ যেন সাইবার নিরাপত্তার আওতায় আসতে পারে। তিনি মনে করেন, “প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতনতা না থাকলে ডিজিটাল অগ্রগতি হুমকির মুখে পড়বে।”

তাই তিনি ও তার টিম দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে গিয়ে সাইবার নিরাপত্তা ও সোশ্যাল মিডিয়ার সঠিক ব্যবহার নিয়ে ফ্রি সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছেন।

তিনি বলেন, “আমি চাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে হয়রানির শিকার না হয়, বরং তারা যেন সচেতনভাবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারে। এজন্য আমরা বিনামূল্যে সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং সচেতনতামূলক কার‌্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।”

সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি মাসে হাজার হাজার মানুষ ফেসবুক হ্যাকিং, ফিশিং, ইম্পার্সনেশন, এবং ব্ল্যাকমেইলের মতো সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব থেকে বাঁচতে হলে সাধারণ মানুষকে সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কিত জ্ঞান দিতে হবে। আছিম- এ বিষয়ে বলেন, “অনেকেই জানেন না, কীভাবে একটি ম্যালওয়্যার, একটি লিংক, বা একটি হ্যাকিং অ্যাপস আপনার জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। আমরা এই অজ্ঞানতাকেই দূর করতে চাই।”

দেশের জন্য কিছু করার তীব্র ইচ্ছাশক্তি ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে “আছিম হোসেন লিয়ন” আজ দেশের তরুণ সমাজের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। তার নিরলস পরিশ্রম, একাগ্রতা এবং দেশপ্রেম ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রাখবে-এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট সকলের।




গাংনী হাসপাতালের তদন্ত প্রতিবেদন জমা হবে আজ

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীদের পরীক্ষা-নিরিক্ষার জন্য বিভিন্ন ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে পাঠানোর অভিযোগে একটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় তদন্ত কমিটি গঠণ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সে প্রতিবেদন আজ শনিবার জমা দেওয়া হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। গত ২৯ জুন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুপ্রভা রাণী মেহেরপুর সিভিল সার্জনের নির্দেশে এ কমিটি কমিটি গঠণ করেন।

হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) হাবিবুর রহমানকে সভাপতি করে ৩ সদস্যর কমিটি গঠণ করা হয়েছে। কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন- জুনিয়র কনসালটেন্ট খোকন রেজা ও মেডিকেল অফিসার তাসমেরি খাইরুন নাহার। কমিটিকে চার কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান মেহেরপুর প্রতিদিনকে বলেন, তদন্ত শেষ হয়েছে। আগামীকাল (আজ) শনিবার প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধিকাংশ যন্ত্রপাতি বছরের পর বছর অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু তদারকির অভাবে সরকারের বিনিয়োগের অপচয় হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, রোগীদের প্রায় ৯৮ ভাগ পরীক্ষায় এখানে না করে চিকিৎসকের পছন্দের বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানো হয়। এসব কেন্দ্র থেকে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর‌্যন্ত কমিশন পান বলে অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মাসুদুর রহমান, মেডিকেল অফিসার ডা. ফারুক হোসেনসহ কয়েকজন চিকিৎসক নিয়মিত রোগীদের নিজেদের পছন্দের বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠান।

এমনকি একজন চিকিৎসকের দাবি, কিছু চিকিৎসক এমন সব পরীক্ষা লিখে দেন যেগুলোর প্রয়োজন নেই, শুধুমাত্র কমিশনের জন্য।ভিটামিন ও সাপ্লিমেন্ট কিনুন সরেজমিনে দেখা গেছে, ডা. ফারুক হোসেন নিয়মিত রোগীদের ‘মোল্লা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ পাঠাচ্ছেন।

ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মীরা হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে রোগীদের সেখানে নেওয়ার কাজ করছেন। জানা যায়, ডা. ফারুক হোসেন অবসরে গিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত চেম্বার করেন।