মহেশপুরে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন

ঝিনাইদহের মহেশপুরে সকালের ভাত খাওয়া নিয়ে তর্ক বিতর্কের জের ধরে বড় ভাইয়ের হাতে ছোট ভাই খুন হয়েছে। সোমবার (২৮ জুলাই) উপজেলার পলিয়ানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে ।

নিহত জামাল হোসেন (২১) একই উপজেলার কাজিরবেড় ইউনিয়নের পলিয়ানপুর গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে। স্থানীয় ইউপি সদস্য হযরত আলী জানান, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভাত খাওয়া নিয়ে বড় ভাই উজ্জল হোসেনের সঙ্গে বিকর্তে জড়ায় ছোট ভাই জামাল। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উজ্জলের হাতে থাকা পিয়ারা কাটা ছুরি দিয়ে জামালের পেটে আঘাত করে।

এতে তিনি গুরুতর আহাত হন। খবর নিশ্চিত করে মহেশপুর থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভাত খাওয়ার মতো অতি তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বড় ভাই উজ্জল হোসেনের সঙ্গে ছোট ভাই জামালের তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে উজ্জলের হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে ছোট ভাই জামালের পেটে আঘাত করে।

এতে তিনি গুরুতর আহত হন। জামালকে উদ্ধার করে নিকটস্থ ভৈরব বাজারের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে।

ওসি আরো জানান, নিহত জামালের বড় ভাই উজ্জল একজন ঝালমুড়ি ও পেয়ারা বিক্রেতা। তার হাতে সব সময় ধারালো ছুরি থাকতো। সেই ছুরি দিয়েই আঘাত করেছে। ঘটনার পরপরই উজ্জল পালিয়ে গেছেন। বেলা ৩টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে।




বামন্দী জনতা ব্যাংকে গ্রাহক আমানত ১০০ কোটির ঘরে, গ্রাহক অর্ধ লক্ষ

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী গ্রামের জনতা ব্যাংক লিমিটেডের বামন্দী শাখার আমানত শত কোটি টাকার মাইলফলক স্পর্শ করছে।

প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহক সংখ্যা নিয়ে ইতিমধ্যে এই ব্যাংকটি এখন একক ব্রাঞ্চ হিসেবে বাংলাদেশ জনতা ব্যাংক লিমিটেডের গ্রাহক সংখ্যার সর্বোচ্চ স্থান দখল করে রয়েছে।

গতকাল সোমবার বামন্দী গ্রামে অবস্থিত জনতা ব্যাংক লিমিটেড বামন্দী শাখায় কেক কেটে ও আলোচনা সভার মাধ্যমে এই প্রাপ্তি উদ্‌যাপন করেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনতা ব্যাংক লিমিটেডের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের জিএম আবুল কালাম আজাদ, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ মফিজুর রহমান, এজিএম মোঃ আশরাফুজ্জামান, বামন্দী জনতা ব্যাংক লিমিটেডের শাখা ব্যবস্থাপক ইকবাল হোসেনসহ ব্যাংকের অন্যান্য সদস্য এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, বামন্দী একটি ইউনিয়ন পর্যায়ের গ্রাম, তবে এখানকার ব্যাংকের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শহরের যে কোনো ব্রাঞ্চের চেয়ে এগিয়ে।

আজ আমরা কেক কাটার মাধ্যমে এই ব্যাংকটির গ্রাহক আমানতের টাকার পরিমাণ শত কোটি টাকার ঘরে পৌঁছানো উপলক্ষে কেক কাটার মাধ্যমে উদ্‌যাপন করলাম।

আর এই ব্যাংকটির গ্রাহক সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৫০ হাজারের ঘরে।

এ থেকে প্রমাণ হয় যে এই ব্রাঞ্চটি মানুষের মনের ঘরে জায়গা করে নিয়েছে। আমি বলব এই অর্জন আপনাদের, অর্থাৎ গ্রাহকদের।

আপনাদের ভালোবাসা, বিশ্বস্ততা ও সহযোগিতাই আজকের এই অর্জন সম্ভব করেছে। আমি বাংলাদেশ জনতা ব্যাংক লিমিটেড ও এই শাখাটির সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি।

ব্যাংক ব্যবস্থাপক ইকবাল হোসেন বলেন, ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বামন্দী জনতা ব্যাংক বামন্দী শাখার পথচলা শুরু। আজ এসে সেই শাখাটির পরিবারের সদস্য বা গ্রাহক সংখ্যা ৫০ হাজারের ঘরে পৌঁছেছে। আর গ্রাহকের আমানতের টাকার পরিমাণ শত কোটির ঘরে। এই অর্জন শুধু বামন্দীর নয়, এই অর্জন বাংলাদেশ জনতা ব্যাংক লিমিটেডের। আমরা স্বগৌরবে বলতে পারছি, পল্লীর একটি ব্যাংকে গ্রাহক সংখ্যা ৫০ হাজার এবং আমানত শত কোটি টাকা।




ঝিনাইদহে ত্রিশ গ্রামের দশ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে

প্রথম দর্শনে মনে হবে এযেন এক মহাসমুদ্র। চারিদিকে পানি থৈ থৈ করছে। মাঠের পর মাঠ কৃষকের ফসলী জমি ডুবে আছে। কৃষকের রোপনকৃত হাজার হাজার হেক্টর জমির ধান ক্ষেত পানির নিচে। এ অবস্থায় কৃষকের আহাজারী দিনকে দিন বাড়লেও পানি নিষ্কাশনের কোন উপায় নেই।

সরজমিন দেখা গেছে, ঝিনাইদহের সদর উপজেলার সাধুহাটী ও মধুহাটী ইউনিয়নে বিএডসির খননকৃত খালগুলো ভরাট হওয়ায় তা এখন কৃষকের গলার কাঁটা হিসেবে দেখা দিয়েছে। পানি প্রবাহ না থাকায় মাঠের পর মাঠ ডুুবে আছে। এতে ওই এলাকার ত্রিশ গ্রামের কৃষক পড়েছে বিপাকে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সাধুহাটি ইউনিয়নের বংকিরা, রাঙ্গিয়ারপোতা, ডাকবাংলা, গোবিন্দপুর, ভুলটিয়া, মামুনশিয়া, চোরকোল, ওয়াড়িয়া, জীবনে, মাটিকুমরা, পোতাহাটি, মধুহাটী ইউনিয়নের শ্রীপুর, পয়াদপুর, বেড়াশূলা, জিয়ালা, বেজিমারা, ছয়ঘরিয়া, যাদবপুর, গোপালপুর, শ্যামনগর, সাগান্না ইউনিয়নের নাথকুন্ডু, ডহরপুকুর, বাথপুকুর, সাহেবনগর, এছাড়া চুয়াডাঙ্গা জেলার শরৎগঞ্জ, আসাননগর, দশমাইল, নবিননগর, ছাইভাঙ্গা, দোবিলা গ্রামের মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকার কৃষকদের ভাষ্য বংকিরা গ্রামের কাজলের খাল, পয়াদপুর খাল এবং মামুনশিয়া খাল দীর্ঘদিন খনন না করায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে গত ৪/৫ বছর ধরে কৃষকরা সঠিকভাবে ফসল ফলাতে পারছে না। এ বছর টানা বৃষ্টিতে মাঠের পানি গ্রামের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

বংকিরা গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে তারা বিএডিসি ঝিনাইদহ দপ্তরে যোগাযোগ করলে কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং ভরাট হওয়া খাল খনন করা হবে বলে জানান। কিন্তু তারা আশার বানী শোনালেও কোন কাজ হয়নি। কৃষকের জীবন মান উন্নয়নের জন্য বংকিরা গ্রামের কাজলের খাল, মামুনশিয়া খাল এবং পয়াদপুর খাল খননের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী বলেও ওই কৃষক জানান।

রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের কৃষক আব্দুল হাকিম জানান, ১০ গ্রামের পানি কাজল খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই পানি ভেদড়ির বিল হয়ে মামুনশিয়া খাল দিয়ে পয়াদপুর খালের মাধ্যমে চিত্রা নদীতে পড়ে। কিন্তু উৎস্যমুখ কাজলের খাল ভরাট হয়ে কচুরিপনায় ছেয়ে গেছে। ফলে পানি বের হতে পারছে না। এতে বংকিরা, গোবিন্দপুর, মোহাম্মদপুর, আসাননগর, মামুনশিয়া ও চুয়াডাঙ্গার জীবনা গ্রামের পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম মনসাদ জানান, জলাবদ্ধতার বিষয়টি তুলে ধরে তারা এলাকার খালগুলো খননের জন্য বিএডিসির ক্ষুদ্রসেচ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো তিনি দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। এলাকাবাসি দ্রুত খালগুলো সংস্কার করে কৃষকদের জনদুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষার দাবী জানান।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ বিএডিসির (সেচ) সহকারী প্রকৌশলী সৌরভ কুমার বিশ^াস জানান, কৃষকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তিনি সরজমিন পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে মাঠের পর মাঠ পানিতে ডুবে আছে। পানি বের হতে পারছে না। তিনি এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। আশা করা যায় দ্রুত বিষয়টি সমাধান করতে পারবো।




ঝিনাইদহে স্কুল শিক্ষার্থীদের পরিচ্ছন্নতা ও পলিথিন নিষিদ্ধের অভিযান

জুলাইয়ের চেতনাতে জাগ্রত করে তুলতে ঝিনাইদহে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও পলিথিন নিষিদ্ধ অভিযান শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা।

সোমবার সকালে শহরের দেবদারু এভিনিউতে এই পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়। এতে অংশ নেয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩৫ জন শিক্ষার্থী। ঝাড়ু, বেলচা, কোদাল হাতে নিয়ে বিভিন্ন সড়ক, বসার স্থান ও স্থাপনা পরিস্কার করে তারা।

পরিচ্ছন্ন অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী ইলমা খাতুন জানায়, শিক্ষার্থীরা জানায়, জেলা পরিষদের সহযোগীতায় তারা ‘স্বচ্ছ শহর সজাগ ইতিহাস’ কর্মসূচীর উপর কাজ করছে। আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচী। এতে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ সড়ক, স্থাপনা, স্থান পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হবে। পাশাপাশি পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে সকলকে আহ্বান জানানো হবে। পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন গড়ে তুলতেই এই উদ্যোগ বলে জানান আয়োজকরা।

শিক্ষার্থী ইলমা বলেন, “পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা উদ্যোগ নিয়েছি যাতে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হয়। পরিচ্ছন্ন শহর গড়ে তোলার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।” এই কর্মসূচির মাধ্যমে শুধু শহর পরিস্কার নয়, বরং পরিবেশ সচেতনতা ও নাগরিক দায়িত্ববোধের বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাই।




মেহেরপুরে মাদক মামলায় ২ আসামির কারাদণ্ড

মেহেরপুরে মাদক মামলায় মোঃ আলফাজকে ১ বছর ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং একই মামলার অপর পলাতক আসামি মোঃ ইমরানকে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত।

আজ সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে মেহেরপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাজাহান আলী এ আদেশ দেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুরের গাংনী থানার এসআই মোঃ মোস্তফা শওকত জামান সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, কাজিপুর ইউনিয়নের আলমবাজার বাগানপাড়ার মোঃ রিফাজের বাড়িতে দুই ব্যক্তি অবৈধ মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে।

পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে ওই বাড়ি থেকে মোঃ আলফাজ ও মোঃ ইমরানকে হাতেনাতে আটক করে। তাদের দেহ তল্লাশিতে আলফাজের কোমর থেকে ৫ পুরিয়া হেরোইন এবং ইমরানের কোমর থেকেও ৫ পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করা হয়।

পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার নথি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনা করে মোঃ আলফাজ ও মোঃ ইমরানের বিরুদ্ধে উপরোক্ত রায় দেন।

রায় ঘোষনার পরে আসামীকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।




মেহেরপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

“শুভ কাজে সবার পাশে” এই স্লোগানকে ধারণ করে মেহেরপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে ১০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে এস এম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে এই শিক্ষা উপকরণ তুলে দেন সংগঠনটির সদস্যরা।

বসুন্ধরা শুভসংঘের শিক্ষা উপকরণ পেয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। শিশুদের হাতে শিক্ষা উপকরণ হিসেবে খাতা, কলম, হার্ডবোর্ড, স্কেল, ফাইল ও জ্যামিতি বক্স তুলে দেওয়া হয়েছে।

কলেজ শিক্ষক ও বসুন্ধরা শুভসংঘ মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি এস. এম. রফিকুল আলম বকুলের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন এস. এম. সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আহমেদ, বসুন্ধরা শুভসংঘ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তরুণ সংগঠক মো. নাফিউল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. অনিক হাসান, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান, নির্বাহী সদস্য হ্যাপি, লামিয়া, মোমিনুর রহমান, মোনিব প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে এস. এম. রফিকুল আলম বকুল বলেন, “শুভ কাজে সবার পাশে” এটা শুধু স্লোগান নয়, বসুন্ধরা শুভসংঘ সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে সবসময় থাকবে।

তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগের ফলে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় আরও উৎসাহিত হবে। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ভালো লেখাপড়া ও নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে তোমরা নিজেকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে। তোমরা দেশের ভবিষ্যৎ। তোমাদেরকে সমাজ ও দেশের প্রয়োজনে যোগ্য হয়ে গড়ে উঠতে হবে।

শিক্ষা উপকরণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, খুব ভালো লাগছে, খুশি হয়েছি, আমি ভালো করে লেখাপড়া করব।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুচী বলেন, আজকের শিক্ষাসামগ্রী পেয়ে খুব আনন্দ লাগছে।

প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ আহমেদ বসুন্ধরা শুভসংঘের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে এর আওতায় আনার আহ্বান জানান। তিনি সমাজের কম সুবিধাপ্রাপ্ত ও গরিব কিন্তু মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এ ধরনের আরও বেশি উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।




মেহেরপুরে ইজিবাইক চালক জামাল হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড

মেহেরপুর সদর উপজেলার শোলমারী গ্রামের ইজিবাইক চালক জামাল হোসেন হত্যা মামলার একমাত্র আসামি বাচ্চু মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড (ফাঁসি) দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে মেহেরপুরের জেলা ও দায়রা জজ এস এম নাসিম রেজা এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত বাচ্চু মিয়া সদর উপজেলার শোলমারী গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মেহেরপুর সদর উপজেলার নতুন শেখপাড়া এলাকার একটি লিচু বাগান থেকে জামাল হোসেনের (৫৪) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি পেশায় একজন ইজিবাইক চালক ছিলেন। ঘটনার পরদিন নিহতের ছোট ভাই আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মেহেরপুর সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ শোলমারী গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে বাচ্চু মিয়াকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা (পরিদর্শক) মেছবাহ উদ্দিন আহমেদ। মামলার অভিযোগত্র, দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে আদালত আসামি বাচ্চু মিয়াকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সাইদুর রাজ্জাক এবং আসামি পক্ষে এহান উদ্দিন মনা আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন। আদেশ ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইদুর রাজ্জাক বলেন,

“আদালতের এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। জামাল হত্যার বিচার পেয়ে তার পরিবার স্বস্তি পাবে বলে আশা করছি।”

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এহান উদ্দিন মনা বলেন, “আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।”

রায় ঘোষণার সময় আসামি বাচ্চু মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশি পাহারায় তাকে মেহেরপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।




মেহেরপুরের আলোচিত ছুরিকাঘাত মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার

মেহেরপুরের আলোচিত ছুরিকাঘাত মামলার প্রধান আসামি মিয়ারুল ইসলামকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, গত ২৩ জুলাই রাত আনুমানিক ১১টার দিকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের প্রধান গেটসংলগ্ন সড়কে পারিবারিক পূর্ব শত্রুতার জেরে মিয়ারুল ইসলাম ভিকটিম হাসিবুর রহমান সাগরকে লক্ষ্য করে গলায়, বুকে ও হাতে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে ভিকটিম রক্তাক্ত জখম হয়ে গুরুতর আহত হন।

ঘটনার তিন দিন পর, গত ২৬ জুলাই সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার প্রেক্ষিতে ২৭ জুলাই মেহেরপুর সদর থানা পুলিশ প্রধান আসামি মিয়ারুল ইসলামকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দ্রুতই অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।




মেহেরপুরে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন

মেহেরপুরে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৫ দিনব্যাপী একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আশাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোসা. খাদিজা আকতার, সরকারি শিশু পরিবারের (বালক) তত্ত্বাবধায়ক মো. তৌফিকুল রহমান, সমাজসেবা শহর কার্যালয়ের কর্মকর্তা মো. সোহেল মাহমুদ, কম্পিউটার অপারেটর মো. সজীব রহমান, প্রশিক্ষক এস. এম. রাসেল প্রমুখ।




মেহেরপুরে পৌর পানি নিষ্কাশনের ড্রেনে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা আবর্জনা পায়নি

২১ বছর আগে নির্মিত মেহেরপুর জেলা শহরের কাথুলী সড়কে পৌরসভার ২১ বছর আগে নির্মিত ড্রেণে পৌরবাসীর অভিযোগে আবর্জনা তুলতে গিয়ে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা কোন আবর্জনা পায়নি। ২১ বছর আগে নির্মিত পানি নিষ্কাশন ড্রেনটি এপর্যন্ত পরিষ্কার করা হয়নি।

৭ ফিট গভিরতার ড্রেণটি ৫ফিট মাটিতে ভরাট হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই আবাসিক পানি নিষ্কাশন ড্রেণ হয়ে বাসাবাড়িতে চলে যাচ্ছে ড্রেণের ময়লা পানি। পচা ও দূর্গন্ধযুক্ত পানিতে ছড়িয়ে পড়ছে রোগ জীবানু। পৌর প্রশাসককে অভিযোগ করলে রোববার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ভরাট উত্তোলন করতে গিয়ে কোন আবর্জনা না পেয়ে ফিরে আসে।

মেহেরপুর শহর ও আশপাশের এলাকায় অপরিকল্পিত ও নাজুক ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে দূর্ভোগের কবলে পৌরবাসী দির্ঘদিন ধরে। কোন কোন ড্রেণ প্রায় দুই যুগ পরিষ্কার করা হয়নি। ভরাট হয়ে গেছে সেসব ড্রেণ। আবাসিক পানি নিষ্কাশনের সংযোগ ওইসব ড্রেণে। ড্রেণগুলো ভরাট হবার কারণে বৃষ্টি হলেই ড্রেণের নোংরা পানি বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে পড়ছে। রাস্তা-ঘাটও ড্রেণের নোংরা পনিতে সয়লাব হওয়াতে পথচারীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। যানবাহন চলাচলেও সৃষ্টি হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে সমস্যাটি চলমান থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। অপরিকল্পিত ড্রেন ও যুগ যুগ ধরে ড্রেণ পরিষ্কার না করায় বৃষ্টির সময় ড্রেণের পানি আবাসিক বাড়িতে ঢুকে পড়ে। ওই ড্রেণের নোংরা পানি উঠে এসে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে, যা পথচারীদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, “বৃষ্টি হলেই ঘর থেকে বের হতে ভয় লাগে। রাস্তার ওপর পানি ড্রেনের নৌংরা পানির দুর্গন্ধ।” আরেকজন ব্যবসায়ী জানান, “ ড্রেণ ভরাট হয়ে যাবার কারণে ড্রেণের পানি উপচে দোকানের সামনে জমে থাকে, ক্রেতা আসতেই চায় না। ব্যবসা মার খাচ্ছে।”

কাথুলী সড়কের মফিজুর রহমান অভিযোগ করেন। তাদের বাড়ির সামনের ২শ মিটার ড্রেণ ২১ বছর আগে নির্মিত হয়েছে। এপর্যন্ত একদিনের জন্যও পরিষ্কার করা হয়নি। ড্রেণটি এখন মশার প্রজনন কেন্দ্র হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা এই সমস্যার মূল কারণ। মেহেরপুর শহরের অনেক এলাকায় নতুন ভবন নির্মাণের সময় কোনো ধরনের পরিকল্পিত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়নি। আবার পুরোনো ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় ময়লা-আবর্জনায় আটকে থাকে, ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই ড্রেন উপচে পড়ে। তাছাড়া পানি নিষ্কাশন ড্রেণ নির্মাণের আগে ড্রেণের লেবেল নক্সা প্রণয়ন করা হয়নি। বিভিন্ন সময়ে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেণগুলো নির্মিত হয়েছে। ফলে ড্রেণে পানি আটকে থাকে। পৌর প্রকৌশলী বলছেন- ড্রেণ সংস্কারের পরিকল্পনা আছে।

এদিকে, সাধারণ মানুষ বলছেন, এমন আশ্বাস তাঁরা আগেও বহুবার শুনেছেন, কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। “শুধু পরিকল্পনা করে তো হবে না, বাস্তবায়ন দরকার। না হলে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি নেই,” বললেন ক্যাশব পাড়ার বাসিন্দা সালমা আক্তার। একই পাড়ার ইসমাইল হোসেন জানান, তাদের পাড়ার ড্রেণটি নির্মাণের একবছরের মধ্যে ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে ড্রেণটি কোন উপকারে আসেনি। সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর এলাকায় বিভিন্ন সড়কে কোন উপকারে না আসা পানি নিষ্কাশন ড্রেণ অন্তত ২০ কিলোমিটার।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা গড়ে তুললেই কেবল এই সমস্যা থেকে মুক্তি সম্ভব। পাশাপাশি পৌরবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার, এবং আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।

মেহেরপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, “পৌর এলাকায় বিভিন্ন সময় নির্মিত ৪৩ কিলোমিটার ড্রেণ আছে। আমরা ড্রেন সংস্কারের পরিকল্পনা করছি। তবে বাজেট সীমিত হওয়ায় সব এলাকায় একসঙ্গে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।” তিনি আরও জানান, জনগণের সচেতনতা এবং আবর্জনা ড্রেনে না ফেলার প্রবণতা বাড়ানো গেলে কিছুটা উপকার হতে পারে। পৌরসভার প্রশাসকের দায়ীত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তরিকুল ইসলাম জানান- পৌর পরিচ্ছন্ন কর্মীদের আচরণ ভালো না। তিনি কাথুলী সড়কের ড্রেনটি পরিষ্কার করার জন্য কনজার্ভেটিভ ইন্সপেক্টর জহিরুল ইসলামকে জোর নির্দেশ দেন। রোববার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এসে ২২ ফিট পর পর একঝুড়ি করে আবর্জনা তুলে ফিরে যায়।