গভীর খাদে ব্যাংক খাত

২০২৪ সাল শেষে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে আছে বাংলাদেশি ব্যাংকগুলো। গত বছরের আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দীর্ঘদিনের লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ ও ক্ষতির হিসাব প্রকাশ পেতেই ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা কমে গেছে। এর ফলে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণের হার (সিআরএআর) নেমে আসে মাত্র ৩ দশমিক ০৮ শতাংশে, যা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত পরিমাণের অর্ধেকেরও কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণও হঠাৎ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৫২৬ কোটি টাকায়, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৫৯ শতাংশ বেশি।

দেশের ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ। এ পরিমাণ ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ মোট ঋণের প্রায় ৪৫ শতাংশ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের সমান প্রায়। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা; পুনঃ তফসিলকৃত ঋণ : ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা ও অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ৬২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর সিআরএআর দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ০৮ শতাংশে।

বিপরীতে ভারতে এ হার ছিল ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ এবং পাকিস্তানের ২০ দশমিক ৬ শতাংশ। এমনকি তুলনামূলক ছোট অর্থনীতির দেশ নেপাল, ভুটান ও আফগানিস্তানেও হার ১০ শতাংশের ওপরে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বেসেল-৩ মানদণ্ডেও ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণের হার ১০ শতাংশ, এর সঙ্গে অতিরিক্ত ২ দশমিক ৫ শতাংশ আপদকালীন সুরক্ষা মূলধন-সিসিবি রাখতে হয়। অর্থাৎ মোট প্রয়োজনীয়তা দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ তার ধারে কাছেও নেই।
২০২৪ সালে ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির সবচেয়ে বড় কারণ ছিল বড় বড় ঋণগ্রহীতাদের খেলাপি হওয়া। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বন্ধকি সম্পদের অবমূল্যায়ন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বছরের শেষে মাত্র ৪২টি ব্যাংক সিআরএআর মানদণ্ড পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে, যারা খাতের মোট সম্পদের ৫৯ শতাংশ ধরে রেখেছে। বিপরীতে বাকি ব্যাংকগুলো ৪১ শতাংশ সম্পদ ও ৪৩ শতাংশ দায় বহন করছে যেখানে দায়ের পরিমাণ সম্পদের চেয়ে বেশি।

মূলধন ঘাটতির সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোতে। ইসলামি ব্যাংকগুলোর সামগ্রিক সিআরএআর ২০২৩ সালে ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ থাকলেও ২০২৪ সালে তা নেমে গেছে ঋণাত্মক ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশে। সাতটি ইসলামি ব্যাংকের ব্যাপক ক্ষতি এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান আনিস এ খান বলেন, ‘সমস্যাটি কাঠামোগত। প্রথম প্রজন্মের ব্যাংক স্থাপনের সময় প্রাথমিক মূলধনের শর্ত ছিল মাত্র ৩ কোটি টাকা। অথচ আমানত ও ঋণ চাহিদা দ্রুত বেড়ে গেছে। নতুন শেয়ার ইস্যু বা মুনাফা থেকে মূলধন বাড়াতে না পারায় ব্যাংকগুলো দুর্বল থেকে গেছে। তার মতে, মূলধনভিত্তি দুর্বল হওয়ায় ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে পারবে না। এটি প্রমাণ করে যে তাদের জমা টাকাও মূলত শেষ হয়ে গেছে এবং তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে চলতে পারছে না। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থাও আরও করুণ। ২০২৪ সালে তাদের খেলাপি ঋণের হার ৩১ দশমিক ৫৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৩ দশমিক ৮৩ শতাংশে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে তাদের সিআরএআর নেমে গেছে ঋণাত্মক ৬ দশমিক ৪৬ শতাংশে। দেশের দুই বৃহত্তম ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে গোটা খাতই ভয়াবহ সংকটে পড়বে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর মধ্যেই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সাইবার আক্রমণও এখন ব্যাংকিং খাতের আরেকটি বড় ঝুঁকি হিসেবে দাঁড়িয়েছে।’

সব মিলিয়ে, দক্ষিণ এশিয়ার তুলনায় বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত বর্তমানে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিনের কাঠামোগত দুর্বলতা, বড় অঙ্কের খেলাপি ঋণ এবং পর্যাপ্ত মূলধনের ঘাটতি কাটিয়ে না উঠলে আর্থিক খাত টেকসই হতে পারবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, মাত্র ১০টি ব্যাংক মিলে খেলাপি ঋণের প্রায় ৭৫ শতাংশ বহন করছে। বিশেষত শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলো এবং কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেক ব্যবসায়ীর ঋণ পুনঃতফসিল না করায় ঋণ পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের এ বিস্ফোরণ ব্যাংক খাতের মূলধনভিত্তিকে মারাত্মকভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। ২০২৪ সালের শেষে ব্যাংক খাতের মূলধন পর্যাপ্ততার হার ৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ০৮ শতাংশে। অথচ বেসেল-৩ মানদণ্ড অনুযায়ী ন্যূনতম প্রয়োজন ১০ শতাংশ। ব্যাংকার ও বিশেষজ্ঞদের মতে, অচল ঋণের এ সংকট ব্যাংক খাতের মুনাফা কমিয়ে দেবে, নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের (প্রভিশন) চাপ বাড়াবে এবং নতুন ঋণ বিতরণকে সীমিত করবে।

এ বিষয়ে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, এটাই বাস্তবতা বিগত সরকারের সময়ে সৃষ্ট অব্যবস্থাপনার ফল এখন পুরো আর্থিক খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। পুনরুদ্ধারে সময় লাগবে।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।




স্বপ্ন চালু করল দেশের প্রথম সেলফ-চেকআউট কাউন্টার

দেশের বৃহত্তম রিটেইল চেইনশপ স্বপ্ন দেশে প্রথমবারের মতো সেলফ-চেকআউট কাউন্টার চালু করেছে। প্রথাগত কেনাকাটার ধারায় এটি এক ব্যতিক্রমী এবং গ্রাহকবান্ধব উদ্ভাবনী পদক্ষেপ।

স্বপ্নের টিমের তৈরি অ্যাপ্লিকেশন এবং তরুণ প্রযুক্তি দলের উদ্যোগে ডিজাইন করা এই সিস্টেমের কারিগরি সহায়তায় ছিল মাস্টারকার্ড, সানমি এবং ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল)। গুলশান-১ আউটলেটে গতকাল বুধবার দুপুর ২টায় সেলফ-চেকআউট সেবার উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বপ্নের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাব্বির হাসান নাসির, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, স্বপ্নের প্রোডাক্ট ম্যানেজার রুকাইয়া রাফা, সানমির কান্ট্রি হেড সানিউল জাদিদ, ইবিএলের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রিটেইল এবং এসএমই ব্যাংকিং প্রধান এম. খোরশেদ আনোয়ার, সফটওয়্যার ডেভেলপার মিরাজ অনিকসহ অনেকে।

নতুন এই সেলফ-চেকআউট কাউন্টারের মাধ্যমে ক্রেতারা এখন নিজেরাই পণ্য স্ক্যান করে ভিসা ও মাস্টারকার্ড ব্যবহার করে সরাসরি পেমেন্ট করতে পারবেন ক্যাশ কাউন্টারে লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হবে না। স্বপ্নের তরুণ প্রযুক্তি দল মূল সিস্টেমটি তৈরি করেছে, আর মাস্টারকার্ড, সানমি ও ইবিএল যৌথভাবে এই উদ্যোগকে সফল করতে সহায়তা করেছে।

গুলশানের পর পর্যায়ক্রমে সারাদেশের স্বপ্ন আউটলেটে এই সেবা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সেলফ-চেকআউট সেবা উদ্বোধন উপলক্ষে মাস্টারকার্ড বিশেষ অফার ঘোষণা করেছে। গুলশান-১ আউটলেটে মাস্টারকার্ড দিয়ে ১,০০০ টাকা বা তার বেশি কেনাকাটায় গ্রাহকরা উপহার হিসেবে পাবেন পরিবেশবান্ধব শপিং ব্যাগ।

অনুষ্ঠানে স্বপ্নের প্রোডাক্ট ম্যানেজার রুকাইয়া রাফা বলেন, “বাংলাদেশের রিটেইলে প্রথম সেলফ-চেকআউট সিস্টেম তৈরির দলের অংশ হতে পারাটা গর্বের বিষয়। এই প্রকল্প প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের তরুণ প্রযুক্তিবিদরা উন্নত বিশ্বের সমমানের উদ্ভাবনে সক্ষম।”

স্বপ্নের এমডি সাব্বির হাসান নাসির বলেন, “স্বপ্ন সবসময়ই বাংলাদেশে রিটেইল খাতে নতুনত্ব আনার অগ্রদূত। সেলফ-চেকআউট সেবা চালু করে আমরা গ্রাহকদের জন্য বিশ্বমানের সুবিধা নিশ্চিত করার পথে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করলাম।”
মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, “স্বপ্নকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের গ্রোসারি রিটেইল খাতে প্রথম সেলফ-চেকআউট সেবা চালু করতে পেরে আমরা গর্বিত। এটি বাংলাদেশের ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমকে আরও শক্তিশালী করবে।”

ইবিএলের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. খোরশেদ আনোয়ার বলেন, “ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে ইবিএল সবসময় অগ্রগামী। স্বপ্নের এই উদ্ভাবনী উদ্যোগের প্রযুক্তিগত ভিত্তি দিতে পেরে আমরা গর্বিত।”

এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন দূতাবাসের ইউএস কমার্শিয়াল সার্ভিসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর পল ফ্রস্ট।




দর্শনায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের পৃথকভাবে ৪৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

দর্শনায় পৃথকভাবে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে দর্শনা জাতীয়তাবাদী, দর্শনা থানা ও দর্শনা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে এক বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের হয়।

দর্শনা থানা স্বেচ্ছাসেবক দল র‍্যালিটি দর্শনা বাসষ্ট্যান্ড চৌরাস্তার মোড় থেকে দর্শনা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষিণ শেষে দর্শনা রেল বাজার মুক্ত মঞ্চে এসে শেষ হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন, দর্শনা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নূরে আলম সিদ্দিকি মজনু শাহ, জেলা যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরল জাহিদ, সদস্য সচিব আবুহেনা রনি

যুগ্ন আহবায়ক রুহুল আমিন, মির অনিক, আবুল কাশেম, জামাত আলী, আশাবুল হক আনারসহ ছয় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাদেবক দলের নেত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ৬ টি ইউনিয়নে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্টিত হয়। অপরদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দর্শনা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে এক বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

কর্মসূচিটি ছিল প্রাণবন্ত, উৎসাহ-উদ্দীপনামুখর এবং বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে সমৃদ্ধ। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় দর্শনা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান মাস্টারের সভাপতিত্বে, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সংগ্রামী সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জনাব মুনজুরুল জাহিদ। প্রধান বক্তা ছিলেন, দর্শনা পৌর বিএনপি’র সমন্বয় কমিটির অন্যতম সমন্বয়কারী, ত্যাগী জননেতা জনাব নাহারুল ইসলাম মাষ্টার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, দর্শনা পৌর বিএনপি’র সমন্বয়ক শরীফ উদ্দিন ও রেজাউল ইসলাম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়কবৃন্দ— এনামুল হক বাবু, মমিন হোসেন, মহিম কুমার রতন, আবু সাঈদ রতন। অন্যদের মধ্যে ছিলেন, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যবৃন্দ— আব্দুল আজিজ, হাবিবুর রহমান, মুহিন, মাসুদ, ওয়াসিম, ওমর ফারুক প্রমুখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তৌফাতুর রিংকু, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, দর্শনা থানা যুবদলের সদস্য রাশেদ আহমেদ সজীব।

অনুষ্ঠানের শুরুতে নেতৃবৃন্দ বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। পরে এক বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের করা হয়, যা দর্শনার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‍্যালি শেষে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ ও স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠার তাৎপর্যের কথা স্মরণ করেন। এসময় বক্তারা বলেন, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে সামনে রেখে প্রত্যেক কর্মীকে দেশের প্রতিটি দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে হবে।

অনুষ্ঠান শেষে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। একই সঙ্গে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, দর্শনা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাশিদুল ইসলাম।




মেহেরপুরে বিএনপি’র নব-নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদককে সংবর্ধনা

মেহেরপুর সদর উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বিএনপি’র আয়োজনে সদর উপজেলা বিএনপি’র নব-নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলামকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে শ্যামপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বেলতলাপাড়ায় এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, শ্যামপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র ৭নং ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুস সামাদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা বিএনপি’র নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা বিএনপি’র নবনির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক সোহরাব হোসেন, হামিদ খান গাজু, শ্যামপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল খয়ের।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, মেহেরপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস হোসেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মোশারেফ হোসেন তপু, সদস্য মেহেদী হাসান রোলেক্স, কুতুবপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি সাইদুল হাসান খান কেনেডি, পৌর যুবদল নেতা রিপন, মিঠনসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।

অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।




মেহেরপুরে বিএনপি’র ৩১ দফা দাবির প্রচারে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ

মেহেরপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডে বিএনপির ৩১ দফা দাবির প্রচারে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসানের নেতৃত্বে এ কর্মসূচি পরিচালিত হয়।

গণসংযোগকালে অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান বলেন, “আপনারা অবগত আছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।”

এ সময় তিনি পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের হাতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা দাবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন এবং তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক ও মুজিবনগর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়েজ মোহাম্মদ, জেলা বিএনপি’র সদস্য আলমগীর খান ছাতু, হাফিজুর রহমান হাফি, ওমর ফারুক লিটন, মীর ফারুক, সাবেক পিপি আবু সালেহ নাসিম প্রমুখ।

এছাড়াও এসময় সদর উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম, পৌর বিএনপি’র সভাপতি লতিব বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এহান উদ্দিন মনা, জেলা ও পৌর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক মীর জাহাঙ্গীর আলম, নাহিদসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।




আলমডাঙ্গায় নকল সার ও কীটনাশকে ছেয়ে গেছে বাজার- বিপাকে কৃষক

আলমডাঙ্গা উপজেলায় নকল সার ও কীটনাশকে বাজার ছেয়ে গেছে। কৃষকরা পড়েছে বিপাকে। আলমডাঙ্গা পৌরসভার অভ্যন্তরে প্রশাসনের নাকের ডগায় গড়ে উঠেছে নকল সার ও কীটনাশক তৈরির কারখানা। বছরের পর বছর ধরে কৃষকদের প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।

সরকারের কোন অনুমোদন ছাড়াই গোপনে নকল সার, কীটনাশক ও হরমোন তৈরি করে চলেছে পিসিআই এগ্রো নামে অনেক বেনামি কোম্পানি। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের মত দেশে এমন নকল কৃষিপণ্য বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে বিপাকে পড়েছে কৃষক। ফসলের মান ও ফলন কমে গেছে। গত সোমবার আলমডাঙ্গা পৌরসভার মাদ্রাসা পাড়ার নিমাই চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে অজয় কুমার বিশ্বাস নওদাবন্ডবিল গ্রামে এলাকায় একাধিক গোডাউনে অভিযান চালিয়ে নকল সার ও কীটনাশক এবং বিভিন্ন অনুমোদনবিহীন কৃষিপণ্য, রুটপ্লাস ৩ হাজার কেজি, পিসি আই এর চমক ১২ লিটারের ১২৫ কার্টুন, পিসি আই রুট ৬৮৪০ কেজি, জিংক ১৬৪০ কেজি, ছিলেটেড জিংক ৬৬ কেজি, ছলুবোর ১৭১ কেজি ও ৩০০ কেজি সহ আরও অনেক দ্রব্য উদ্ধার করে।

গতকাল বুধবার আলমডাঙ্গা আনন্দধাম এলাকার জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করে দুটি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান কে মোট ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। গতকাল সকাল ১১ টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে মুদি দোকান, জ্বালানী গ্যাস ও সার-বীজ দোকান প্রভৃতি তদারকি করা হয়। এ সময় মেয়াদ উত্তীর্ণ ম্যাগনেসিয়াম সার বিক্রয়ের জন্য বিসিআইসি সার ডিলার মো: আব্দুল বারীর প্রতিষ্ঠান মেসার্স সিরাজ এন্টারপ্রাইজের মালিক সিরাজুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ, মানহীন ও নিন্মমানের শিশু খাদ্য বিক্রয়ের অপরাধে এই জরিমানা করা হয়। এছাড়াও মো: আব্দুর রহমানের প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফাতেমা স্টোরকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।

কৃষি উৎপাদন ও কৃষিপণ্যের গুনগত মান বজায় না থাকলে কৃষকরা বড় ঝুঁকিতে পড়বে। দেশে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হবে। কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে।কৃষকদের সাথে এই ভয়ানক প্রতারণায় তাদের শ্রম, সময়, অর্থ নষ্ট হচ্ছে।

আলমডাঙ্গা কৃষি কর্মকর্তা রেহেনা পারভিন বলেন, কৃষি অফিসের অনুমোদন ছাড়াই এখানে সার ও কীটনাশক তৈরি, বাজারজাতকরণ এবং খোলা মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে। ইহা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। নকল সার ও কীটনাশক আমরা দ্রুত কৃষকদের হাতে পড়তে দেব না। অভি্যান পরিচালনা করে দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে কৃষকরা এই সব নকল সার প্রয়োগ করে বড় ধরনের লোকসানে পড়েছে। অনেক কৃষক চোখের জলে, আর্তনাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বেলগাছির কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, এইসব নকল সার প্রয়োগ করে আমি ক্ষতিগ্রস্ত। এদের আইনের আওতায় নিয়ে বিচার করে শাস্তির দাবি করছি।

কৃষকরা এই সব প্রতারণায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে, চাষ-আবাদে নিরুৎসাহিত হবে। দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে বলে সচেতন মহল থেকে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।




মেহেরপুরে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত

মেহেরপুরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির আয়োজনে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২০ আগস্ট) এ কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুরের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাজাহান আলী।

সভাপতির বক্তব্যে মোঃ শাজাহান আলী বলেন, মেহেরপুরের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএসহ বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে যেন সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার না হয়, সে জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। ভেজালমুক্ত খাবার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে অধিকতর তদারকি করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি সার্বিক সহযোগিতা করবে।

তিনি আরও বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, যাতে যুব সমাজ বিপথগামী না হয়ে আলোকিত ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যায়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এস. এম. নাসিম রেজা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মেহেরপুরে এটাই আমার প্রথম পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স। বিচারপ্রার্থী মানুষ যেন ন্যায় বিচার পায়, সে দিকে সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বিচার ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে ন্যায়বিচারের স্বার্থে এগিয়ে আসতে হবে।

এছাড়াও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতিনিধি, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, পিবিআই কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, পাবলিক প্রসিকিউটর, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর, পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক, বিভিন্ন থানার ওসি, সিআইডি, ডিবি, ট্রাফিক ইন্সপেক্টরসহ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির বিচারকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




বেতন বাড়ানোর দাবিতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের মেহেরপুর পৌরসভা ঘেরাও

মেহেরপুরে পৌরসভা ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। বুধবার (২০ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে বেতন বৃদ্ধি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচির ফলে পৌরসভার স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

জানা গেছে, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে নিয়োজিত হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। বুধবার তারা ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে পৌরসভা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে স্লোগান দেন। এ সময় তারা ময়লা পরিষ্কার না করার হুমকি দিয়ে তাৎক্ষণিক বেতন বাড়ানোর দাবি জানান।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি মাসিক সভায় আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলেও কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং কিছু কর্মচারীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে।

পরে পৌর প্রশাসক তারিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের আশ্বস্থ করেন। তিনি বলেন, তাদের দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। প্রশাসকের আশ্বাসের পর দুপুর ১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেন।

এই ঘটনায় পৌরবাসীর মধ্যে সাময়িক ভোগান্তি তৈরি হলেও পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে মীমাংসা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।




পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭০৬

পাকিস্তানে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় ও দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০৬ জনে। সেনাবাহিনী সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করেছে।

বুধবার (২০ আগস্ট) দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে পিটিআই।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বশেষ আপডেটে পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত আরও ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে ২৬ জুন থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ৭০৬ জনে এসে ঠেকেছে। এছাড়া বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যা বেড়ে ৯৬৫ জন হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খাইবার-পাখতুনখাওয়া (কেপি) প্রদেশ, যেখানে এখন পর্যন্ত ৪২৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

এরপরই রয়েছে পাঞ্জাব (১৬৪ জন), সিন্ধ (২৯ জন), বেলুচিস্তান (২২ জন), পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (৫৬ জন) এবং ইসলামাবাদ অঞ্চল (৮ জন)।

সাম্প্রতিক সময়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে সোয়াবি, নওশেরা, মারদান ও পেশোয়ার জেলায়, যেখানে টানা ভারী বর্ষণ ও আকস্মিক বন্যায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে।

সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হচ্ছে বুনের জেলা, যেখানে এখন পর্যন্ত ২২২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে এবং বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাতে বুনের জেলার বেসোনাই গ্রাম আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে যায় এবং উদ্ধারকর্মীরা এখনো জীবিতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্য যেসব জেলা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বাজউর, সোয়াত, বাত্তাগ্রাম, মানসেহরা, শাংলা, দির আপার, দির লোয়ার ও তোরঘর।

বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত টানা প্রবল বর্ষণের পর সৃষ্ট বন্যার সাথে যুক্ত হয় মেঘফাটল, যা ধ্বংসযজ্ঞ আরও তীব্র করে তোলে। সোমবার আবারও ওই অঞ্চলে নতুন করে ভারি বৃষ্টি হয়।

কেপি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ৭৮০টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৩৪৯টি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং এক হাজারেরও বেশি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কর্মকর্তারা সতর্ক করে জানিয়েছেন, আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, তাই স্থানীয়দের প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে।




ঝিনাইদহে এডাব’র ৩ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন

ঝিনাইদহে এডাব’র ৩ দিনব্যাপী আইসিটি ও ডিজিটাল কমিউনিকেশনের উপর প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।

বুধবার (২০ আগস্ট) এইড ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ঝিনাইদহে এসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ-এডাব ঝিনাইদহ জেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত “ আইসিটি ও ডিজিটাল কমিউনিকেশন এর উপর ৩ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষণে উদ্বোধন করেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ নুর নবী।

৩দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করবেন পলাশ সাহা, যোগাযোগ কর্মকতা, এডাব ও সদস্য, এডাব রির্সোস প্রল। প্রশিক্ষনের উদ্বোধনী পর্বে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এডাব ঝিনাইদহ জেলা শাখার সদস্য সচিব ও প্রভা সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক মোঃ এনামুল কবীর বাবুল।

প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি এনজিওদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে দক্ষিণ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এনজিওসমূহের প্রচুর অবদান রয়েছে। বর্তমান সময়ে তথ্য হলো একটি শক্তি, আর একটি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই তথ্যের আদান-প্রদান ঘটে। সুতরাং আইসিটি ও ডিজিটাল কমিউনিকেশন -এর মত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ আয়োজন খুবই সময় উপযোগী। এনজিওসমূহের মধ্যে সমন্বয়সাধন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে সহায়তা করা এবং সংগঠনের দক্ষতা বৃদ্ধিতে এডাব-এর কর্মসূচিকে তিনি সাধুবাদ জানান। প্রশিক্ষন লব্দ এই জ্ঞান ঝিনাইদহের উন্নয়ন কাজে বিশেষ অবদান রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সময় উপযোগী এ ধরনের একটি প্রশিক্ষণ ঝিনাইদহে আয়োজন করার জন্য তিনি এডাব কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।

প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন এডাব ঝিনাইদহ জেলা কমিটির সভাপতি ও এসডাব-এর নির্বাহী পরিচালক মিজানুর রহমান। এডাব খুলনা বিভাগের সমন্বয়কারী মো: রেজাউল করিম প্রশিক্ষণের সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন। খুলনা বিভাগের যশোর, মাগুরা, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলার এডাব এর সদস্য সংস্থা থেকে ২৬ টি এন.জি.ও’র প্রতিনিধিগণ এই প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহন করেন।