মেহেরপুরে জেলা বিএনপি’র গণসংযোগ

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি ইউনিয়নে বিএনপি’র ৩১ দফা দাবির প্রচারে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসানের নেতৃত্বে এ কর্মসূচি পরিচালিত হয়।

এ সময় তিনি কোলা ও দফরপুর গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের হাতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা দাবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন এবং তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

কর্মসূচিতে দেওয়া বক্তব্যে অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান বলেন, “আমরা ফ্যাসিস্টদের এদেশ থেকে বিতাড়িত করেছি, তারা এখানে নিষিদ্ধ হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন তারা আর দেশে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অথচ দেখা যাচ্ছে, কলকাতা ও দিল্লিতে তারা পার্টি অফিস খুলেছে, যা আমাদের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। তাই সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই— কূটনৈতিকভাবে পদক্ষেপ নিয়ে ওই অফিসগুলো নিষিদ্ধ করতে হবে।

ভারতকে আমরা এতদিন বন্ধু রাষ্ট্র মনে করতাম, কিন্তু বাস্তবে তারা কখনোই আমাদের বন্ধু ছিল না; তারা ছিল কেবল আওয়ামী লীগের বন্ধু। যারা এদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়েছে, তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা চাই এদেশে একটি সঠিক গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হোক, কোনো পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আমরা চাই না।”

গণসংযোগ কর্মসূচিতে জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। তাদের মধ্যে ছিলেন- জেলা বিএনপি’র সদস্য আনসার উল হক, আলমগীর খান ছাতু, হাফিজুর রহমান হাফি, ওমর ফারুক লিটন, মীর ফারুক, সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ফয়েজ মোহাম্মদ, আমদহ ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ, পৌর বিএনপি’র সভাপতি লতিব বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এহান উদ্দিন মনা, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর জাহাঙ্গীর আলম, সদর থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি হাসিবুজ্জামান স্বপন, নাহিদসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।




আলমডাঙ্গায় ভিক্ষুকের টাকা চুরির এক ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার, দুই চোর গ্রেফতার

আলমডাঙ্গায় ভিক্ষুকের জমানো টাকা চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে চুরি হওয়া টাকা উদ্ধারসহ দুই চোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটে আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জ বাজারের মদনবাবুর মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ টাকা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা গ্রামের দলিরুর রহমানের ছেলে রাশেদুল ইসলাম রঞ্জু (৩৮) এবং মৃত খলিল হোসেনের ছেলে ভোলা হোসেন (৩৫)। পুলিশ জানায়, তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেহালা গ্রামের মোছাঃ জোসনা খাতুন (৬৮) নামের এক বৃদ্ধা ভিক্ষুক তার প্রতিবন্ধী ছেলে মোবারককে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেন। ভিক্ষার টাকাই ছিল তাদের একমাত্র ভরসা। গত ১৭ আগস্ট রাত ৮টার দিকে রাতের খাবার শেষে তিনি ও তার ছেলে বাজারে পান খেতে যান। এ সুযোগে দুর্বৃত্তরা ঘরের তালা ভেঙে টিনের বাক্সে রাখা তার জমানো ৫০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।

অনেক খোঁজাখুঁজির পর টাকা না পেয়ে হতাশ বৃদ্ধা বুধবার রাতে আলমডাঙ্গা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।

এরপরই আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাঃ মাসুদুর রহমান পিপিএম এর নির্দেশে এসআই (নিঃ) মোঃ আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম চৌকস অভিযান চালিয়ে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার এবং ২৯ হাজার ৮০ টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

স্থানীয়রা জানান, ভিক্ষুক জোসনার জীবনের সব সঞ্চয়ই ছিল ওই টাকা। পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপে টাকা উদ্ধারের ফলে তিনি স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন।




আলমডাঙ্গায় সাধারণ সভা ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের সাধারণ সভা ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী ইসলাম।

সভার শুরুতে উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, সড়কে অবৈধ ট্রলি বন্ধ, সিএনজি ও অন্যান্য গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ, বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং, সন্ত্রাস ও মাদক প্রতিরোধসহ বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী ইসলাম।

এছাড়া আলোচনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন আক্তার, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এমদাদুল হক, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উদয় রহমান, রিসার্চ সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর জামাল হোসেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাকসুরা জান্নাত, তথ্য কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা গোলাম আউয়াল, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ ইমতিয়াজ বিপুল, ইউপি চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান ওল্টু, ইউপি চেয়ারম্যান মিনাজ উদ্দিন, ইউপি চেয়ারম্যান মন্সি এমদাদ হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আসাদুল হক মিকা ও ইউপি চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান প্রমুখ।




ঝিনাইদহে পুরাতন মোটরসাইকেল ব্যবসায়ী মালিক সমিতির আহ্বায়ক কমিটি গঠন

ঝিনাইদহে পুরাতন মোটরসাইকেল ব্যবসায়ী মালিক সমিতি জেলা শাখার আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের জোহান ড্রিম ভ্যালি পার্কে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন আবুল কাশেম। তিনি ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সংগঠনের মাধ্যমে ব্যবসার মানোন্নয়নসহ ব্যবসায়ীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করতে হবে।

পরে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে আহ্বায়ক করা হয় আবুল কাশেমকে। সদস্য সচিব করা হয় মিজানুর রহমান তোতাকে।

যুগ্ম আহ্বায়করা হলেন সনজিত কর্মকার, সোহেল রানা, আলমগীর, লিটন, মাসুদ রানা, সিরাজুল, মনোয়ার ও সজীব।

সদস্যরা হলেন তাপস কুণ্ডু, মিন্টু, রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, শাকিল, মামুন, সুমন সাহা, আলমগীর, আক্কাস, সেলিম, রুবেল, নায়েব ও শাহাজান।
উপদেষ্টা করা হয়েছে শহীদ ও নাজিম আহমেদ রঞ্জুকে।

কমিটি ঘোষণা করেন উপদেষ্টা নাজিম আহমেদ রঞ্জু। নবগঠিত এ কমিটি ঝিনাইদহের ব্যবসায়ীদের অধিকার রক্ষা ও জেলার ব্যবসা-বাণিজ্যের মানোন্নয়নে কাজ করবে বলে আশা করা হয়।




মেহেরপুরে বাড়ি নির্মাণ কাজে বাধা দেওয়ায় সংবাদ সম্মেলন

মেহেরপুরে বসতবাড়ির দ্বিতীয় তলা নির্মাণ কাজে বাধা দেওয়ায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন শারমিন সুলতানা নামের এক ভুক্তভোগী নারী।

শারমিন সুলতানা মেহেরপুর শহরের নতুন শেখপাড়া প্রবাসী মিথুন আলীর স্ত্রী।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগী তার বাড়িতে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৩ বছর পূর্বে মেহেরপুর পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার কর্তৃক প্ল্যান অনুমোদনের মাধ্যমে কোনো প্রকার অভিযোগ ছাড়া বাড়ির পোতা ও এক তলার কাজ শেষ করি। গত ৬ এপ্রিল দ্বিতীয় তলার পিলারের কাজ শেষ করে শাটারিংয়ের কাজ করার সময় প্রতিবেশী আব্দুল আজিজের ছেলে নুরুল ইসলাম পৌরসভায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করার অভিযোগ করে। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পৌর কর্তৃপক্ষ অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা সম্পর্কে উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা ও সমাধানের জন্য বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে।

গত ১৩ মে পৌরসভা শাটারিংয়ের কাজের জন্য মৌখিকভাবে সিদ্ধান্ত দেয়। সে মতে ১৪ মে থেকে আবারও শাটারিংয়ের কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু নুরুল ইসলাম হঠাৎ করে সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে এসে কাজের শ্রমিকদের হুমকি-ধমকি দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে সে আদালতে ১৪৫ ধারা মতে একটি পিটিশন দায়ের করে। যার নং-২৪১/২৫।

এ বিষয়ে পৌর ভূমি অফিস তদন্ত প্রতিবেদনে জানায়, উভয় পক্ষ নিজ নিজ জমিতে বসবাস করছে। কারও জমি কারও ভিতরে নেই। কিন্তু ওই পিটিশনের প্রেক্ষিতে সদর থানার এএসআই দেবদাস কুমার আমাদের কাজে বাধা প্রদান করে এবং কাজের শ্রমিকদের হুমকি-ধমকি প্রদান করে।

এএসআই দেবদাস কুমারের প্রত্যক্ষ মদদে ও তার উপস্থিতিতে নুরুল ইসলাম আমার সমস্ত নির্মাণ সামগ্রী ফেলে দেয় এবং মিস্ত্রিদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে। শুধু তাই নয়, সে রাস্তা বন্ধ করে আমার চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে এবং রাস্তার উপর ম্যানহোল বসিয়েছে। আমি একজন নারী। আমার স্বামী প্রবাসী হওয়ার সুবাদে নুরুল ইসলাম বিভিন্নভাবে আমার ওপর জুলুম-অত্যাচার করছে। আমি এর সঠিক বিচার প্রার্থনা করছি।




মহেশপুরে কিশোরীদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ ও অভিভাবক সমাবেশ

“বিআরডিবি’র অঙ্গীকার, উন্নত সমৃদ্ধ পল্লী গড়ার” স্লোগানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহের মহেশপুরে কিশোরীদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) মহেশপুরের উদ্যোগে খালিশপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠান হয়। দরিদ্র মহিলাদের জন্য সমন্বিত কর্মসংস্থান সহায়তা প্রকল্প (ইরেসপো)-এর দ্বিতীয় পর্যায়ের অংশ হিসেবে এ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাদিজা আক্তারের সভাপতিত্ব ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা বাহাউল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ১নং এস বি কে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফান হাসান চৌধুরী,খালিশপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোজাম্মেল হক সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কিশোরীদের শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও সমাজ সচেতনতায় এ ধরনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা কিশোরীদের আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে ওঠার আহ্বান জানান।

পরিশেষে উপস্থিত কিশোরীদের বিনামূল্য প্রশিক্ষণ সামগ্রী স্যানেটারী নাপকিন, খাতা, কলম ও স্কুল ব্যাগ বিতরণের পাশাপাশি সকল কিশোরী, অভিভাবক, শিক্ষকমন্ডলী, উপস্থিত অতিথি সহ বাল্য বিবাহকে না বলুন শপথ নিয়ে প্লাকাড প্রদর্শন করা হয়।




মহেশপুরে বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত

ঝিনাইদহের মহেশপুরে বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মহেশপুর উপজেলার তুষার সিরামিকসের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, সকালে গোল্ডেন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহি বাস ঢাকা থেকে দর্শনা যাচ্ছিলো। পথে কালীগঞ্জ-জীবননগর সড়কের ওই স্থানে পৌঁছালে তুষার সিরামিকসের কারখানা থেকে একটি ড্রাম ট্রাক বের হয়ে প্রধান সড়কে উঠলে বাসটির সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রাকের চালক-হেলপার ও বাসের যাত্রীসহ ১৫ জন আহত হয়। খবর পেয়ে মহেশপুর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠায়। গুরুতর আহত ট্রাকচালক ও হেলপারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ বলেন, দুর্ঘটনাস্থল থেকে বাস ও ট্রাক উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।




এশিয়া কাপ হকির দল ঘোষণা করল বাংলাদেশ

এশিয়া কাপ হকিতে খেলার কথা ছিল না বাংলাদেশের। নিরাপত্তার কারণে পাকিস্তান ভারতে যেতে না চাওয়ায় খেলার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের রাজগিরিতে হতে যাওয়া টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে আজ দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন।

এশিয়া কাপের স্কোয়াডে জায়গা হয়নি চার অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের।

তারা হলেন পুস্কর খিসা মিমো, মঈনুল ইসলাম কৌশিক, নাঈম উদ্দিন ও আবেদ উদ্দিন। তাদের বাদ পড়ার দিনে ১৮ সদস্যের দলে প্রথমবার সুযোগ পেয়েছেন তৈয়ব আলি, মেহেদী হাসান, তানভির রহমান ও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।
আগামী ২৯ আগস্ট শুরু হতে যাওয়া টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন রেজাউল করিম। ১২তম এশিয়ান কাপ হকির আসরের উদ্বোধনী দিনে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

৩০ আগস্ট দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ চাইনিজ তাইপে। আর টুর্নামেন্টের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ ‘বি’-র শেষ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি ১ সেপ্টেম্বর।

বাংলাদেশের স্কোয়াড—হুজাইফা হোসেন, রেজাউল করিম (অধিনায়ক), সোহানুর রহমান, ফরহাদ আহমেদ, আশরাফুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, আল নাহিয়ান, রোমান সরকার, ফজলে হোসেন, তৈয়ব আলী, তানভির রহমান, রাকিবুল হাসান, মো. আব্দুল্লাহ, আরশাদ হোসেন, ওবায়দুল হোসেন, বিপ্লব কুজুর, নুরুজ্জামান নয়ন।




মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির এক মাস : সুস্থ হতে যুদ্ধ চলছে আহতদের

রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার এক মাস পূর্ণ হলো আজ। গত মাসের আজকের তারিখে ভয়াবহ বিমান বিধ্বস্তে প্রাণ হারিয়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকসহ প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী।

এ ঘটনার এক মাস পরেও ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া। এখনও আতঙ্কে দিন কাটছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

ওইদিন বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীদের স্মৃতিতে এখনও বন্ধুদের আত্মচিৎকার তাড়া করছে। তাই মানসিকভাবে এখনো কিছুটা বিপর্যন্ত শিক্ষার্থীরা। তাই শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে, একমাস পূর্তির দিন আজ স্কুলটিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ওই মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত হন মোট ৩৪ জন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক। এখনো বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরো ২৪ জন। এর মধ্যে তিনজন শিক্ষক, তিনজন অভিভাবক ও ২৭ জন শিক্ষার্থী।

গত এক মাস ধরে আহতরা অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় দিন পার করছেন।

রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে যারা ভর্তি রয়েছেন তাদের বেশিরভাগের শরীরই আগুনে পুড়ে গেছে। কারো কারো অর্ধেকেরও বেশি অংশ পুড়ে গেছে।
জানা গেছে, শরীরে অর্ধেকেরও বেশি পোড়া নিয়ে ভর্তি রয়েছে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র নাভিদ নাওয়াজ। গত এক মাস ধরে নাওয়াজ সুস্থ হওয়ার জন্য নিজের সঙ্গে লড়াই করে যাচ্ছে। আর তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক থাকছেন বাবা মিজানুর রহমান।

মিজানুর রহমান বলেন, ‘একমাস হাসপাতালের আইসিইউতে ছেলেকে রেখে কোথাও যেতে পারছি না। এই সময়ের মধ্যে প্রতিটা মুহূর্ত একটা নতুন অভিজ্ঞতা। ডাক্তারও বলতে পারছে না ছেলে আমার ভালোর দিকে যাচ্ছে, না খারাপের দিকে যাচ্ছে। ডাক্তাররা শুধু বলে আপনারা আল্লাহকে ডাকেন’।

এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি শিক্ষার্থীরা
মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীরা এখনো ফিরতে পারেনি স্বাভাবিক জীবনে। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতি পাঁচ মিনিট পরপর মাথার ওপর দিয়ে বিমান যায়, তখনই ভয়ে বুক ধড়ফড় করে। লেখাপড়ায় মন বসে না। মনে হয় আবার কোনো বিপদ আসছে। স্কুলে আসতে মন চায় না।

তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মানসিক সেবা স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা লেফলেন্যান্ট কর্নেল (অব.) নুরুন নবীর সাংবাদিকদের বলেন, মানসিক সেবা স্বাস্থ্য সেন্টার খোলা হয়েছে স্কুলে। আমরা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেষ্টা করছি। শিক্ষার্থীদের মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠতে কাউন্সেলিং কার্যক্রম চালু রয়েছে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরো সময় লাগবে।

সূত্র: কালের কন্ঠ।




গভীর খাদে ব্যাংক খাত

২০২৪ সাল শেষে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে আছে বাংলাদেশি ব্যাংকগুলো। গত বছরের আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দীর্ঘদিনের লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ ও ক্ষতির হিসাব প্রকাশ পেতেই ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা কমে গেছে। এর ফলে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণের হার (সিআরএআর) নেমে আসে মাত্র ৩ দশমিক ০৮ শতাংশে, যা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত পরিমাণের অর্ধেকেরও কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণও হঠাৎ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৫২৬ কোটি টাকায়, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৫৯ শতাংশ বেশি।

দেশের ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ। এ পরিমাণ ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ মোট ঋণের প্রায় ৪৫ শতাংশ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের সমান প্রায়। খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা; পুনঃ তফসিলকৃত ঋণ : ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা ও অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ৬২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর সিআরএআর দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ০৮ শতাংশে।

বিপরীতে ভারতে এ হার ছিল ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ এবং পাকিস্তানের ২০ দশমিক ৬ শতাংশ। এমনকি তুলনামূলক ছোট অর্থনীতির দেশ নেপাল, ভুটান ও আফগানিস্তানেও হার ১০ শতাংশের ওপরে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বেসেল-৩ মানদণ্ডেও ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণের হার ১০ শতাংশ, এর সঙ্গে অতিরিক্ত ২ দশমিক ৫ শতাংশ আপদকালীন সুরক্ষা মূলধন-সিসিবি রাখতে হয়। অর্থাৎ মোট প্রয়োজনীয়তা দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ তার ধারে কাছেও নেই।
২০২৪ সালে ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির সবচেয়ে বড় কারণ ছিল বড় বড় ঋণগ্রহীতাদের খেলাপি হওয়া। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বন্ধকি সম্পদের অবমূল্যায়ন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বছরের শেষে মাত্র ৪২টি ব্যাংক সিআরএআর মানদণ্ড পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে, যারা খাতের মোট সম্পদের ৫৯ শতাংশ ধরে রেখেছে। বিপরীতে বাকি ব্যাংকগুলো ৪১ শতাংশ সম্পদ ও ৪৩ শতাংশ দায় বহন করছে যেখানে দায়ের পরিমাণ সম্পদের চেয়ে বেশি।

মূলধন ঘাটতির সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলোতে। ইসলামি ব্যাংকগুলোর সামগ্রিক সিআরএআর ২০২৩ সালে ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ থাকলেও ২০২৪ সালে তা নেমে গেছে ঋণাত্মক ৪ দশমিক ৯৫ শতাংশে। সাতটি ইসলামি ব্যাংকের ব্যাপক ক্ষতি এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক চেয়ারম্যান আনিস এ খান বলেন, ‘সমস্যাটি কাঠামোগত। প্রথম প্রজন্মের ব্যাংক স্থাপনের সময় প্রাথমিক মূলধনের শর্ত ছিল মাত্র ৩ কোটি টাকা। অথচ আমানত ও ঋণ চাহিদা দ্রুত বেড়ে গেছে। নতুন শেয়ার ইস্যু বা মুনাফা থেকে মূলধন বাড়াতে না পারায় ব্যাংকগুলো দুর্বল থেকে গেছে। তার মতে, মূলধনভিত্তি দুর্বল হওয়ায় ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে পারবে না। এটি প্রমাণ করে যে তাদের জমা টাকাও মূলত শেষ হয়ে গেছে এবং তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে চলতে পারছে না। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থাও আরও করুণ। ২০২৪ সালে তাদের খেলাপি ঋণের হার ৩১ দশমিক ৫৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৩ দশমিক ৮৩ শতাংশে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে তাদের সিআরএআর নেমে গেছে ঋণাত্মক ৬ দশমিক ৪৬ শতাংশে। দেশের দুই বৃহত্তম ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে গোটা খাতই ভয়াবহ সংকটে পড়বে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর মধ্যেই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, সাইবার আক্রমণও এখন ব্যাংকিং খাতের আরেকটি বড় ঝুঁকি হিসেবে দাঁড়িয়েছে।’

সব মিলিয়ে, দক্ষিণ এশিয়ার তুলনায় বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত বর্তমানে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিনের কাঠামোগত দুর্বলতা, বড় অঙ্কের খেলাপি ঋণ এবং পর্যাপ্ত মূলধনের ঘাটতি কাটিয়ে না উঠলে আর্থিক খাত টেকসই হতে পারবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, মাত্র ১০টি ব্যাংক মিলে খেলাপি ঋণের প্রায় ৭৫ শতাংশ বহন করছে। বিশেষত শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকগুলো এবং কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেক ব্যবসায়ীর ঋণ পুনঃতফসিল না করায় ঋণ পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের এ বিস্ফোরণ ব্যাংক খাতের মূলধনভিত্তিকে মারাত্মকভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। ২০২৪ সালের শেষে ব্যাংক খাতের মূলধন পর্যাপ্ততার হার ৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ০৮ শতাংশে। অথচ বেসেল-৩ মানদণ্ড অনুযায়ী ন্যূনতম প্রয়োজন ১০ শতাংশ। ব্যাংকার ও বিশেষজ্ঞদের মতে, অচল ঋণের এ সংকট ব্যাংক খাতের মুনাফা কমিয়ে দেবে, নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের (প্রভিশন) চাপ বাড়াবে এবং নতুন ঋণ বিতরণকে সীমিত করবে।

এ বিষয়ে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, এটাই বাস্তবতা বিগত সরকারের সময়ে সৃষ্ট অব্যবস্থাপনার ফল এখন পুরো আর্থিক খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। পুনরুদ্ধারে সময় লাগবে।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।